Dhaka শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিস্ফোরক মামলায় জামিনপ্রাপ্ত ১৭৮ জনের তালিকা প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা বিস্ফোরক মামলায় জামিনপ্রাপ্ত বিডিআরের ১৭৮ সদস্যের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। জামিননামার কাগজ কারাগারে পৌঁছালে ১৬ বছর পর কারামুক্ত হবেন তারা।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে জামিনপ্রাপ্ত এসব আসামির নাম প্রকাশ করা হয়। ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়ার আদালত আসামিদের নাম প্রকাশ করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের চিফ প্রসিকিউটর মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, গত রোববার হত্যা মামলায় নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালত থেকে খালাস প্রাপ্তদের বিস্ফোরক আইনের মামলায় জামিনের আদেশ দেন বিচারক। আজ যাচাই-বাছাই শেষে ১৭৮ জনের জামিন পাওয়ার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) তাদের জামিননামা দাখিল করা হবে। এরপর তাদের জামিন সংক্রান্ত নথি-পত্র কারাগরে গেলে সেখানে কারাবিধি অনুযায়ী কারামুক্ত হবেন তারা।

তিনি আরো বলেন, হত্যা মামলায় খালাস প্রাপ্তদের ভিতরে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলে যারা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছেন। ওই ১৫ জন বাদে সবাইকে জামিন দেয়া হয়েছে। প্রকাশিত তালিকা স্বচ্ছতার ভিত্তিতে করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে।

হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। যেখানে ১৫২ জনের ফাঁসি ছাড়াও ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া খালাস পান ২৭৮ জন।

২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় দেন হাইকোর্টে। রায়ে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। সেই সঙ্গে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয় ১৮৫ জনকে। পাশাপাশি আরও ২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। আর খালাস পান ২৮৩ জন।

তবে হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। ফলে হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।

এদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয় ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম একপ্রকার স্থগিত রেখে শুধু হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। যে কারণে এই মামলার বিচার ঝুলে যায়।

ক্ষমতার পালাবদলের অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি উঠে। গত ১৯ ডিসেম্বর অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান শহিদ পরিবারের সদস্যরা। এই হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তের জন্য গত ২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে কমিশন গঠন করে ৯০ দিনের সময় দিয়েছে সরকার।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাঁচ মামলায় চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর

বিস্ফোরক মামলায় জামিনপ্রাপ্ত ১৭৮ জনের তালিকা প্রকাশ

প্রকাশের সময় : ০৯:৫১:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা বিস্ফোরক মামলায় জামিনপ্রাপ্ত বিডিআরের ১৭৮ সদস্যের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। জামিননামার কাগজ কারাগারে পৌঁছালে ১৬ বছর পর কারামুক্ত হবেন তারা।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে জামিনপ্রাপ্ত এসব আসামির নাম প্রকাশ করা হয়। ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়ার আদালত আসামিদের নাম প্রকাশ করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের চিফ প্রসিকিউটর মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, গত রোববার হত্যা মামলায় নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালত থেকে খালাস প্রাপ্তদের বিস্ফোরক আইনের মামলায় জামিনের আদেশ দেন বিচারক। আজ যাচাই-বাছাই শেষে ১৭৮ জনের জামিন পাওয়ার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) তাদের জামিননামা দাখিল করা হবে। এরপর তাদের জামিন সংক্রান্ত নথি-পত্র কারাগরে গেলে সেখানে কারাবিধি অনুযায়ী কারামুক্ত হবেন তারা।

তিনি আরো বলেন, হত্যা মামলায় খালাস প্রাপ্তদের ভিতরে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলে যারা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছেন। ওই ১৫ জন বাদে সবাইকে জামিন দেয়া হয়েছে। প্রকাশিত তালিকা স্বচ্ছতার ভিত্তিতে করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে।

হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। যেখানে ১৫২ জনের ফাঁসি ছাড়াও ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া খালাস পান ২৭৮ জন।

২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় দেন হাইকোর্টে। রায়ে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। সেই সঙ্গে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয় ১৮৫ জনকে। পাশাপাশি আরও ২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। আর খালাস পান ২৮৩ জন।

তবে হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। ফলে হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।

এদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয় ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম একপ্রকার স্থগিত রেখে শুধু হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। যে কারণে এই মামলার বিচার ঝুলে যায়।

ক্ষমতার পালাবদলের অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি উঠে। গত ১৯ ডিসেম্বর অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান শহিদ পরিবারের সদস্যরা। এই হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তের জন্য গত ২৪ ডিসেম্বর আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে কমিশন গঠন করে ৯০ দিনের সময় দিয়েছে সরকার।