স্পোর্টস ডেস্ক :
দেশের সব জায়গার মতো ক্রীড়াঙ্গনও এখন অনেকটা অনিশ্চয়তার মধ্যে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকে খোঁজ নেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের। এতে বিসিবির সব কার্যক্রমেই কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে।
এর মধ্যে বিসিবির কয়েকজন পরিচালকও গা ঢাকা দিয়েছেন। এজন্য বিসিবি পুর্নগঠনের চেষ্টা চলছে। তাতে দায়িত্ব পেতে পারেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ।
ইতোমধ্যেই তার সঙ্গে আলোচনা করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বিদেশ থেকে ফেরার পর শনিবার (১৭ আগস্ট) রাতে তার সঙ্গে এই বৈঠক হয়। বিসিবি সভাপতি হওয়ার ব্যাপারে অগ্রগতি স্বীকার করেছেন ফারুক আহমেদও।
কিন্তু কোন প্রক্রিয়ায় তাকে সভাপতি করা হবে, এটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এমনিতে সাবেক অধিনায়ক হিসেবে বিসিবির কাউন্সিলর তিনি। তবে আপাতত তাকে এনএসসি থেকে বোর্ডের পরিচালক করা হতে পারে। এরপর দেওয়া হবে সভাপতির দায়িত্ব।
এই বৈঠকেই মূলত ফারুকের বিসিবি প্রেসিডেন্ট হওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে। কমিটি গঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ফারুক আহমেদের প্রেসিডেন্ট হওয়ার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। গতকাল তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন উপদেষ্টা। এখন কীভাবে কী হবে, সেটা নিয়ে কাজ চলছে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট পদ নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, কথা চলতেছে, এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমাকে যদি পজিশন (প্রেসিডেন্ট হিসেবে) দেওয়া হয়, আমি নেব কাজটা।
বিসিবির গঠনতন্ত্রে স্পষ্ট করে লেখা আছে, পরিচালকদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবে প্রেসিডেন্ট। কিন্তু ফারুক আহমেদ বিসিবির পরিচালক পদে নেই। তাকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে মনোনীত করে পরিচালক হিসেবে বিসিবিতে আনা হবে। এরপর বিসিবির পরিচালকদের ভোটে তাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হবে। পরিচালকদের ভোটের জন্য যে কোরাম প্রয়োজন সেটিও প্রস্তুত আছে বলে নিশ্চিত হয়েছে।
এক্ষেত্রে বাদ পড়তে যাচ্ছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে বিসিবিতে পরিচালক হিসেবে আসা জালাল ইউনুস ও সাজ্জাদুল আলম ববি। তাদের স্থলাভিষিক্ত হবে ফারুক আহমেদ, আরেকজন কে আসবেন, সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। জালাল ইউনুস পরিচালক ছাড়াও বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির দায়িত্বে আছেন, আর সাজ্জাদুল আলম আছেন টুর্নামেন্ট কমিটির দায়িত্বে।
রোববার (১৮ আগস্ট) সকালে সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করে না বললেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধানের আভাস দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বলেন, এই বিষয় চলমান আছে। কোনও একটা সমাধানে পৌঁছানোর আগে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে আপনারা সুসংবাদ পাবেন আশা করি। বিসিবির ডিরেক্টর ও সভাপতির পদত্যাগের বিষয়টি আমি মিডিয়াতে দেখেছি। কিন্তু অফিসিয়ালি কোনও নিশ্চয়তা কিংবা বক্তব্য আমি পাইনি। আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করছি বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার, ক্রিকেট সংগঠক ও সাবেক ক্রিকেটারদের সঙ্গে ভালো সমাধানে পৌঁছানোর জন্য।
উল্লেখ্য, সাবেক ক্রিকেটার ফারুক আহমেদ এর আগে দুই মেয়াদে বিসিবির প্রধান নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথম মেয়াদে ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত, আর দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত। দ্বিতীয় মেয়াদে তার দায়িত্ব পালন সুখকর ছিল না। পদত্যাগ করে বিদায় নিয়েছেন তিনি।