Dhaka শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে সাতক্ষীরা উপকূলের দুই শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী ১০-২১ নভেম্বর ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কপ-৩০ সম্মেলন। সারা পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫০ দেশের প্রতিনিধি মিলিত হয়ে বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলার সমাধান খুঁজবেন। ১২ হাজারের বেশি জলবায়ু আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী এই সম্মেলনে অংশ নিবেন। আর এবারের এই বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশে থেকে শিশু প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন নওশীন ইসলাম ও নুর আহমেদ জিদান।

সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের মুখে দাঁড়িয়ে তারা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের উপকূলের শিশুদের বাস্তবতা তুলে ধরবেন।

সারা পৃথিবীর প্রায় ১৫০ দেশের ১২ হাজারের বেশি জলবায়ু আন্দোলনের কর্মী এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।

নওশীন ইসলাম আশাশুনি উপজেলা শিশু ফোরামের সভাপতি এবং গত কয়েক বছর ধরে শিশু সুরক্ষা, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কাজ করছে।

নওশীন আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের শিক্ষক মোঃ শহীদুল ইসলাম ও জেসমিন দম্পতির সন্তান ও প্রতাপনগর ইউনাইটেড একাডেমির অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে, নুর আহমেদ জিদান শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের যতীন্দ্রনগর গ্রামের জি.এম. রইসউজ্জামান এবং মোছাঃ লায়েকা খানম দম্পতির সন্তান ও সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

তারা দুইজন জাগ্রত যুব সংঘ (জেজেএস), চিলড্রেন ফোরাম অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডিআরআর এবং কেএনএইচ-বিএমজে-এর সহযোগিতায় এই বৈশ্বিক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে।

কপ৩০ এ অংশ গ্রহণ প্রসঙ্গে নওশীন ইসলাম বলেন, উপকূলের শিশুদের দুঃখ-দুর্দশাকে তুলে ধরবো। ক্ষতিগ্রস্ত শিশুরা শিক্ষা, পুষ্টিকর খাবার, স্বাস্থ্যসহ সকল মৌলিক অধিকার যেন পায় সে জন্য উন্নত দেশের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো।

নওশীন আরও বলেন, বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্য বলবো আমরা পৃথিবীর আগামী প্রজন্ম, আমাদের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যাওয়া আপনাদের দায়িত্ব। প্রতিবছর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রকট হচ্ছে আর আমরা শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। পড়াশোনা বন্ধ হচ্ছে, খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে, শিশুশ্রম ও বাল্য বিয়ে বেড়ে চলেছে প্রতিনিয়ত।

নুর আহমেদ জিদান জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চল বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। এটা এখন বাঁচা-মরার লড়াই। এই সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের সামনে আমাদের পরিস্থিতির কথা তুলে ধরবো। দাবি একটাই উন্নত দেশগুলো যেন তাদের অতীতের ভুলগুলোর মাশুল আমাদের উপরে চাপিয়ে না দেয়। আমাদের শিশুদের ক্ষতিপূরণ দেয়।

নওশীন ইসলামের বাবা শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, বিশ্ব মঞ্চে আমার মেয়ে বাংলাদেশের কথা বলবে, সাতক্ষীরা উপকূলের জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের কথা বলবে। আমি পিতা হিসেবে গর্বিত। তারজন্য দোয়া চাই।

এই দুই কিশোর-কিশোরীর অংশগ্রহণ বাংলাদেশের উপকূলীয় শিশুদের কণ্ঠকে আন্তর্জাতিক পরিসরে পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ১১ নভেম্বর তারা ব্রাজিলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।

আবহাওয়া

বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে সাতক্ষীরা উপকূলের দুই শিশু

প্রকাশের সময় : ০৩:১৬:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী ১০-২১ নভেম্বর ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কপ-৩০ সম্মেলন। সারা পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫০ দেশের প্রতিনিধি মিলিত হয়ে বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলার সমাধান খুঁজবেন। ১২ হাজারের বেশি জলবায়ু আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী এই সম্মেলনে অংশ নিবেন। আর এবারের এই বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশে থেকে শিশু প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন নওশীন ইসলাম ও নুর আহমেদ জিদান।

সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের মুখে দাঁড়িয়ে তারা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের উপকূলের শিশুদের বাস্তবতা তুলে ধরবেন।

সারা পৃথিবীর প্রায় ১৫০ দেশের ১২ হাজারের বেশি জলবায়ু আন্দোলনের কর্মী এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।

নওশীন ইসলাম আশাশুনি উপজেলা শিশু ফোরামের সভাপতি এবং গত কয়েক বছর ধরে শিশু সুরক্ষা, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কাজ করছে।

নওশীন আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের শিক্ষক মোঃ শহীদুল ইসলাম ও জেসমিন দম্পতির সন্তান ও প্রতাপনগর ইউনাইটেড একাডেমির অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে, নুর আহমেদ জিদান শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের যতীন্দ্রনগর গ্রামের জি.এম. রইসউজ্জামান এবং মোছাঃ লায়েকা খানম দম্পতির সন্তান ও সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

তারা দুইজন জাগ্রত যুব সংঘ (জেজেএস), চিলড্রেন ফোরাম অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডিআরআর এবং কেএনএইচ-বিএমজে-এর সহযোগিতায় এই বৈশ্বিক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে।

কপ৩০ এ অংশ গ্রহণ প্রসঙ্গে নওশীন ইসলাম বলেন, উপকূলের শিশুদের দুঃখ-দুর্দশাকে তুলে ধরবো। ক্ষতিগ্রস্ত শিশুরা শিক্ষা, পুষ্টিকর খাবার, স্বাস্থ্যসহ সকল মৌলিক অধিকার যেন পায় সে জন্য উন্নত দেশের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো।

নওশীন আরও বলেন, বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্য বলবো আমরা পৃথিবীর আগামী প্রজন্ম, আমাদের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যাওয়া আপনাদের দায়িত্ব। প্রতিবছর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রকট হচ্ছে আর আমরা শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। পড়াশোনা বন্ধ হচ্ছে, খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে, শিশুশ্রম ও বাল্য বিয়ে বেড়ে চলেছে প্রতিনিয়ত।

নুর আহমেদ জিদান জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চল বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। এটা এখন বাঁচা-মরার লড়াই। এই সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের সামনে আমাদের পরিস্থিতির কথা তুলে ধরবো। দাবি একটাই উন্নত দেশগুলো যেন তাদের অতীতের ভুলগুলোর মাশুল আমাদের উপরে চাপিয়ে না দেয়। আমাদের শিশুদের ক্ষতিপূরণ দেয়।

নওশীন ইসলামের বাবা শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, বিশ্ব মঞ্চে আমার মেয়ে বাংলাদেশের কথা বলবে, সাতক্ষীরা উপকূলের জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের কথা বলবে। আমি পিতা হিসেবে গর্বিত। তারজন্য দোয়া চাই।

এই দুই কিশোর-কিশোরীর অংশগ্রহণ বাংলাদেশের উপকূলীয় শিশুদের কণ্ঠকে আন্তর্জাতিক পরিসরে পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ১১ নভেম্বর তারা ব্রাজিলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।