স্পোর্টস ডেস্ক :
হাঁটুর ইনজুরিতে এশিয়া কাপ মিস করেছেন এবাদত হোসেন। তবে অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপের পানে চেয়ে ছিলেন তিনি। আশা করে ছিলেন ফিট হয়ে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন পূরণ হবে।
ডনহাতি দীর্ঘদেহি পেসার এবাদতের ওই স্বপ্নে বড় ধাক্কা লেগেছে। ইংল্যান্ডের চিকিৎসক তার হাঁটুর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন। ডাক্তার দেখাতে একদিন ইংল্যান্ডে আগে ইংল্যান্ড গেছেন তিনি। অস্ত্রপাচার করায় এবার বিশ্বকাপ থেকেও ছিটকে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে এই টাইগার পেসার।
লিগামেন্ট ইনজুরিতে হাঁটুতে ওই অস্ত্রোপচার করলে নয় মাসের মতো মাঠের বাইরে থাকতে হবে এয়ারফোর্স থেকে পেসার হান্টের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসা এবাদতের। ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে তাই খেলা হবে না বল হাতে গতির ঝড় তুলতে পারা এই পেসারের।
সোমবার (২৮ আগাস্ট) অস্ত্রোপচারের জন্য লন্ডনে যান ইবাদত। বুধবার (৩০ আগস্ট) ডাক্তারের ছুরিকাঁচির নিচে যেতে হয় তাকে। তাতে বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। অস্ত্রোপচারের কথা নিজেই জানিয়েছেন এবাদত। সকালে লন্ডনের ক্রমওয়েল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে যান ইবাদত। সেখান থেকেই নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জীবনে প্রথমবার অপারেশন টেবিলে। আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ ভরসা।’
জানা গেছে, ইবাদতের পুনর্বাসনের জন্য কমপক্ষে ৬ মাস সময় লাগতে পারে। ফলে তার বিশ্বকাপ খেলার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তার সঙ্গে থাকা বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীও একই কথা বললেন, অস্ত্রোপচার করানো পর আমরা তার পুনর্বাসন পরিকল্পনা করবো। সময় লাগবে এতোটুকু বলা যাচ্ছে। হাতে যে সময় আছে তাতে (বিশ্বকাপ নিয়ে) কিছু করার নেই।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকে তার অস্ত্রোপচার করানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করানো হবে বলেও জানানো হয়েছে। এবাদতও টুইট করে প্রথমবার অস্ত্রোপচার হতে যাচ্ছে জানিয়ে দোয়া প্রার্থনা করেছেন।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন এক গণমাধ্যমকে জানান, আজ এবাদতের অপারেশন হচ্ছে। এরপর রিহ্যাব আছে, সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে লম্বা সময় লাগতে পারে।’ তবে ঠিক কতদিন পর তাকে আবার মাঠে দেখা যাবে তা নিশ্চিত করেননি প্রধান নির্বাচক। সাধারণত এমন ইনজুরির কারণে ৬ থেকে ৮ মাস মাঠের বাইরে থাকতে হয় খেলোয়াড়দের।
ঘরের মাঠে আফগান সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে চলাকালে ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন এবাদত। আফগানিস্তানের ইনিংসের ৪২তম ওভারের তৃতীয় বলটি করার সময় লাফ দিতে গিয়ে আম্পায়ার গাজী সোহেলের কাঁধে বাড়ি খায় এবাদতের হাত। আর এমন ধাক্কা খেয়ে রানআপে নিজেকে ঠিকঠাক থামাতে পারেননি। ফলে পেছন ঘুরে পড়ে যান মাটিতে, তখনই পায়ে আঘাত পান এবাদত।
এরপর তাকে ৪৮ ঘন্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কিন্তু এই সময়ে চোট গুরুত্বর অনুধাবন করতে পেরে এই পেসারকে নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করেন ফিজিও। ধারণা করা হয়েছিল, এশিয়া কাপ দিয়ে আবারও মাঠে ফিরবেন তিনি। তবে পুরোপুরি ফিট না হওয়ায় তাকে নিয়ে আর ঝুঁকি নেয়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তে তাকে পাঠানো হয় লন্ডনে। এবার বিশ্বকাপ থেকেও ছিটকে গেলেন তিনি। যা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কা।
এশিয়া কাপ খেলতে যাওয়ার আগে ইবাদতকে নিয়ে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছিলেন, ইবাদত আমাদের ইমপ্যাক্ট বোলারের একজন। আমাদের যে পাঁচ ফাস্ট বোলার আছে তাদের মধ্েয দ্রুততম সে। শেষ কয়েকটি সিরিজ ভালো খেলেছে। তাকে হারানো বিরাট ক্ষতি।
অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কণ্ঠেও ছিল একই সুর, দুর্ভাগ্য যে ইবাদত আমাদের দলের অংশ হতে পারছে না। ও আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল।
তবে বিসিবির চিকিৎসকরা আশাবাদী ছিলেন এবাদত বিশ্বকাপের আগে আগে ফিট হয়ে উঠবেন। তাকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে এবং হাঁটুর লিগামেন্টের অবস্থা সম্পর্কে ঠিকঠাক ধারণা পেতে বিদেশি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বোর্ড। এখন কখন, কোথায় তার হাঁটুর অস্ত্রোপচার হবে ওই সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিসিবির মেডিকেল বিভাগকে।