Dhaka সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিমানের টিকিট কেন্দ্রিক নৈরাজ্য বন্ধে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা : বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিমানের টিকিট কেন্দ্রিক নৈরাজ্য চলছে বলে অভিযোগ করে বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিমান টিকিট বিক্রিতে অনিয়ম বন্ধে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

সোমবার (২৫ আগস্ট) এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ, নিরাপদ সমুদ্র পর্যটন নিশ্চিতে গৃহীত কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

পর্যটন উপদেষ্টা বলেন, বিমানের টিকিট নৈরাজ্যকে সরকার গুরুত্বের সাথে দেখছে। এ সমস্যা গোড়া থেকে ধরা হবে। টিকিটের অরাজকতা রোধে সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, সিন্ডিকেট করে বিমান ভাড়া বাড়ানো, কেউ ছাই দেওয়া হাত থেকে বের হতে পারবে না। আমাদের নিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সির সংখ্যা হাজার পাঁচেক। আমাদের জানামতে, অনিবন্ধিত প্রায় ২০ হাজারের ওপর ট্রাভেল এজেন্ট রয়েছে। পান দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় এরা সবাই মিলে একটা কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। একটা টিকিটের পেছনে এতগুলো লোক ছোটে। আমরা তদন্তে দেখেছি, যিনি জনশক্তি রপ্তানির ব্যবসা করেন তার নিজস্ব ট্রাভেল এজেন্সি রয়েছে।

ট্রাভেল এজেন্সিগুলোকে টিকিটের গায়ে মূল্য লেখার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন উপদেষ্টা। বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা বলেন, তদন্তে আমরা দেখেছি, শুধু অফলাইন ট্রাভেল এজেন্সি নয়, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্টের ক্ষেত্রেও মারাত্মক দুর্বৃত্তায়ন হচ্ছে। আমাদের দেশের টিকিট বিদেশ থেকে বিক্রি হচ্ছে।

যারা নৈরাজ্য করছে এমন ট্রাভেল এজেন্টের তালিকা করছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিশ্চয়ই করেছি। তদন্তের স্বার্থে আমরা সংখ্যায় যাব না। আমরা ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে এই নৈরাজ্য থামাতে চাই। এজন্য আমরা সব অংশীজনদের সঙ্গে বসেছি।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘আমরা ম্যাজিস্ট্রেটদের কিছু সুনির্দিষ্ট গন্তব্য বলে দিয়েছি। আমরা মনে করি এই গন্তব্যগুলোতেই নৈরাজ্য সবচেয়ে বেশি। একটি সংখ্যা বলে দিয়েছি, প্রতিদিন একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে চারটি দাগে প্রত্যেক দিন একটি রিপোর্ট দিতে হবে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে আমাদের যে আইনি সক্ষমতা আছে, আমরা পরিপূর্ণভাবে সেটা প্রয়োগ করব; সে যে-ই হোক।’

বর্তমানে বিমানবন্দরে চারজন ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা আরও একজন বাড়ানো হবে।

উপদেষ্টা বলেন, আমরা চিন্তা করেছি, যে ট্রাভেল এজেন্টকে (সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত) আমরা পাব, প্রত্যেকের ট্যাক্স ফাইল ওপেন করব। আমাকে একটু সময় দেন। এটুকু নিশ্চিত থাকেন, কেউ এই ছাই দেওয়া হাত থেকে বের হয়ে যেতে পারবে না। সে কে— এটা কোনো বিষয় নয়। তারা যদি আমার পরিবারের কোনো সদস্য হয়ে থাকে, আমার কোনো বন্ধু হয়ে থাকে; আমার কোনো পরিচিতজন হয়ে থাকে, যারাই নৈরাজ্যের সঙ্গে জড়িত, কখনো কোনোভাবেই রেহাই পাবে না।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৩ সালের ট্রাভেল এজেন্সি আইন অনুযায়ী, কেউ টিকিটের গায়ে মূল্য না লিখলে তার লাইসেন্স বাতিল ও কারাদণ্ড— উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত করা যাবে।

সম্মেলনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংসদ নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি হলে ব্যবস্থা নেবে দুদক : দুদক চেয়ারম্যান

বিমানের টিকিট কেন্দ্রিক নৈরাজ্য বন্ধে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা : বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৮:০৬:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিমানের টিকিট কেন্দ্রিক নৈরাজ্য চলছে বলে অভিযোগ করে বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিমান টিকিট বিক্রিতে অনিয়ম বন্ধে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

সোমবার (২৫ আগস্ট) এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ, নিরাপদ সমুদ্র পর্যটন নিশ্চিতে গৃহীত কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

পর্যটন উপদেষ্টা বলেন, বিমানের টিকিট নৈরাজ্যকে সরকার গুরুত্বের সাথে দেখছে। এ সমস্যা গোড়া থেকে ধরা হবে। টিকিটের অরাজকতা রোধে সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, সিন্ডিকেট করে বিমান ভাড়া বাড়ানো, কেউ ছাই দেওয়া হাত থেকে বের হতে পারবে না। আমাদের নিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সির সংখ্যা হাজার পাঁচেক। আমাদের জানামতে, অনিবন্ধিত প্রায় ২০ হাজারের ওপর ট্রাভেল এজেন্ট রয়েছে। পান দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় এরা সবাই মিলে একটা কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। একটা টিকিটের পেছনে এতগুলো লোক ছোটে। আমরা তদন্তে দেখেছি, যিনি জনশক্তি রপ্তানির ব্যবসা করেন তার নিজস্ব ট্রাভেল এজেন্সি রয়েছে।

ট্রাভেল এজেন্সিগুলোকে টিকিটের গায়ে মূল্য লেখার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন উপদেষ্টা। বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা বলেন, তদন্তে আমরা দেখেছি, শুধু অফলাইন ট্রাভেল এজেন্সি নয়, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্টের ক্ষেত্রেও মারাত্মক দুর্বৃত্তায়ন হচ্ছে। আমাদের দেশের টিকিট বিদেশ থেকে বিক্রি হচ্ছে।

যারা নৈরাজ্য করছে এমন ট্রাভেল এজেন্টের তালিকা করছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিশ্চয়ই করেছি। তদন্তের স্বার্থে আমরা সংখ্যায় যাব না। আমরা ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে এই নৈরাজ্য থামাতে চাই। এজন্য আমরা সব অংশীজনদের সঙ্গে বসেছি।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘আমরা ম্যাজিস্ট্রেটদের কিছু সুনির্দিষ্ট গন্তব্য বলে দিয়েছি। আমরা মনে করি এই গন্তব্যগুলোতেই নৈরাজ্য সবচেয়ে বেশি। একটি সংখ্যা বলে দিয়েছি, প্রতিদিন একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে চারটি দাগে প্রত্যেক দিন একটি রিপোর্ট দিতে হবে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে আমাদের যে আইনি সক্ষমতা আছে, আমরা পরিপূর্ণভাবে সেটা প্রয়োগ করব; সে যে-ই হোক।’

বর্তমানে বিমানবন্দরে চারজন ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা আরও একজন বাড়ানো হবে।

উপদেষ্টা বলেন, আমরা চিন্তা করেছি, যে ট্রাভেল এজেন্টকে (সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত) আমরা পাব, প্রত্যেকের ট্যাক্স ফাইল ওপেন করব। আমাকে একটু সময় দেন। এটুকু নিশ্চিত থাকেন, কেউ এই ছাই দেওয়া হাত থেকে বের হয়ে যেতে পারবে না। সে কে— এটা কোনো বিষয় নয়। তারা যদি আমার পরিবারের কোনো সদস্য হয়ে থাকে, আমার কোনো বন্ধু হয়ে থাকে; আমার কোনো পরিচিতজন হয়ে থাকে, যারাই নৈরাজ্যের সঙ্গে জড়িত, কখনো কোনোভাবেই রেহাই পাবে না।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৩ সালের ট্রাভেল এজেন্সি আইন অনুযায়ী, কেউ টিকিটের গায়ে মূল্য না লিখলে তার লাইসেন্স বাতিল ও কারাদণ্ড— উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত করা যাবে।

সম্মেলনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।