Dhaka শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিদেশি পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদন দেখে সুপারিশ রেখে যাবে ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনডিআই-আইআরআইসহ বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দেওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিবেদন দেখে পরবর্তী কমিশনের জন্য বাস্তবায়নের সুপারিশ রেখে যাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বুধবার (৩ এপ্রিল) নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন ইসি মো. আলমগীর।

তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদন দেখে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদনের বিষয়ে ইতোমধ্যেই কর্মকর্তাদের সামারি করতে বলেছি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনডিআই-আইআরআইসহ বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দেওয়া প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা তাদের রিপোর্ট দেখেছি। ফরমালি বসতে পারিনি। প্রাথমিক রিপোর্ট আমরা দেখেছি। আমাদের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে। এখন সামারি করার জন্য বলা হয়েছে, যে তারা আমাদের ভালো দিক এবং দুর্বল দিক কী দেখেছে। ইসি সচিবালয় খসড়া করেছিল, আমরা বিস্তারিতভাবে আবার করতে বলেছি। এক্ষেত্রে পর্যালোচনা করে আমরা পরবর্তী কমিশনের জন্য সাজেশন (পরামর্শ) রেখে যাব। আমাদের আমরা ত্রুটি দেখে ভবিষ্যতে সেটি দেখব।

এক প্রশ্নের জবাবে ইসি মো. আলমগীর বলেন, তারা টোটাল নির্বাচন নিয়ে মতামত দিয়েছে। প্রার্থী, দল, সরকার, ভোটকেন্দ্র নানা বিষয়ে কথা বলেছে। আমরা কেবল আমাদের দিকটা দেখব। তারা যে সুপারিশ করেছে সেগুলো বিবেচনা করা হবে। যেগুলো আমাদের জন্য করা সম্ভব সেগুলো পরবর্তী কমিশনের জন্য সুপারিশ রেখে যাব।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, তারা একটা (প্রতিবেদনের) জায়গায় বলেছে ভোটে কারচুপি হয়েছে বেশ কয়েকটা কেন্দ্রে, যেখানে কমিশন ব্যবস্থাও নিয়েছে। যদি বলত কমিশন অবহেলা করেছে, এমন তো বলেনি। তারা কমিশনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কিছু বলেনি, যে কমিশনের এমন সক্ষমতা ছিল অথচ ব্যবস্থা নেয়নি। অথবা কমিশন এখানে ভোটের এই সমস্ত কেন্দ্রগুলোতে জাল ভোট হয়েছে কিন্তু কমিশন বন্ধ করেনি, এমন কোনো রিপোর্ট নেই। বরং কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে বলে তাদের রিপোর্টে আছে। প্রশাসনে রদবদল করেছে এগুলোও আছে। এখন টোটাল গণতান্ত্রিক বিষয় তো আর নির্বাচন কমিশন দেখে না। তারা নির্বাচন কমিশন নিয়ে যা বলেছে আমাদের দৃষ্টিতে দেখিনি যে খারাপ কিছু বলেছে। আমরা সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণভাবে করেছি। কতটা গ্রহণযোগ্য হয়েছে সেটা দলগুলোর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।

তিনি বলেন, নির্বাচন মানে ছেলেখেলা নয়। রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়, স্থানীয় সরকার পরিচালনার বিষয়। সেখানে নিয়ম করেছিল যে কেউ চাইলেই যেন প্রার্থী হতে না পারে। এজন্য প্রার্থী সমর্থনে সই নেওয়ার বিধান করা হয়েছিল। এটা গণতন্ত্রের পরিপন্থি। এছাড়া যারা সমর্থন দেন তারা অনেক সময় নির্যাতনের শিকার হন। এ ধরনের অভিযোগ আছে। তাই আমরা সেটা তুলে দিয়েছি। সমর্থন দেখানোর জন্য প্রার্থীরা ছলচাতুরি মিথ্যার আশ্রয় নিতেন।

তিনি আরো বলেন, প্রার্থী নিজেই ডান হাত, বাম হাত মিলিয়ে সই করতেন। এ ধরনের আইন কেন থাকবে যা ন্যায়ের পক্ষে না? তাই তুলে দিয়েছি। এটা অন্যায় করার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করে। আমরা এটা তুলে দিয়েছি আমাদের ক্ষমতা ছিল। এখন সংসদ নির্বাচন থেকে তুলে দিতে হলে আরপিও সংশোধন করতে হবে। এজন্য পার্লামেন্টে যেতে হবে। এ বিষয়ে কোনো আলোচনা এখনো হয়নি। আমরা মনে করবো আলোচনার পর। আলোচনাই তো হয়নি।

ইসি আলমগীর বলেন, কোনো দল থেকে প্রার্থী না দিলে স্বতন্ত্র থেকে দাঁড়াবে। এ ক্ষেত্রে কারো সমর্থনসূচক সই লাগবে। জেনে-বুঝে গণতন্ত্র, রাজনীতির জন্য সহায়ক সেটা তো করতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দল সুবিধা দেওয়ার জন্য নয়। তাহলে তো সংসদেও করতাম। পৃথিবীর অনেক দেশেই তৃণমূলে রাজনৈতিক নির্বাচন হয়। আমাদের এখানে সেটা আগে ছিল না। পরে এখানেও করা হয়েছিল। হয়তো ভালো দিক চিন্তা করেই করেছিল। এখন হয়তো তারা মনে করছে অপপ্রয়োগ বেশি হচ্ছে।’

জামানত প্রসঙ্গে ইসি বলেন, জামানত অনেক আগের করা। সংসদেও হয়তো বাড়িয়ে দিয়েছি। সামনের কমিশন আসবে তারা হয়তো করবে। আমাদের সময় জাতীয় নির্বাচন তো হবে না। কাজেই অনেক সময় আছে। প্রাথমিক রিপোর্ট আমরা দেখেছি। আমাদের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে। এখন সামারি করার জন্য বলা হয়েছে। সচিবালয় খসড়া করেছিল, আমরা বিস্তারিতভাবে আবার করতে বলেছি। এক্ষেত্রে পর্যালোচনা করে পরবর্তী কমিশনের জন্য সাজেশন রেখে যাবো। তারা টোটাল নির্বাচন নিয়ে মতামত দিয়েছে। প্রার্থী, দল, সরকার, ভোটকেন্দ্র নানা বিষয়ে কথা বলেছে। আমরা কেবল আমাদের দিকটা দেখবো। তারা যে সুপারিশ করেছে সেটা করা যায় কি না আমরা দেখবো। যেগুলো আমাদের জন্য করা সম্ভব সেগুলো পরবর্তী কমিশনের জন্য সুপারিশ রেখে যাবো।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিদেশি পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদন দেখে সুপারিশ রেখে যাবে ইসি

প্রকাশের সময় : ১০:১৭:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনডিআই-আইআরআইসহ বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দেওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিবেদন দেখে পরবর্তী কমিশনের জন্য বাস্তবায়নের সুপারিশ রেখে যাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বুধবার (৩ এপ্রিল) নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন ইসি মো. আলমগীর।

তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদন দেখে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদনের বিষয়ে ইতোমধ্যেই কর্মকর্তাদের সামারি করতে বলেছি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনডিআই-আইআরআইসহ বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দেওয়া প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা তাদের রিপোর্ট দেখেছি। ফরমালি বসতে পারিনি। প্রাথমিক রিপোর্ট আমরা দেখেছি। আমাদের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে। এখন সামারি করার জন্য বলা হয়েছে, যে তারা আমাদের ভালো দিক এবং দুর্বল দিক কী দেখেছে। ইসি সচিবালয় খসড়া করেছিল, আমরা বিস্তারিতভাবে আবার করতে বলেছি। এক্ষেত্রে পর্যালোচনা করে আমরা পরবর্তী কমিশনের জন্য সাজেশন (পরামর্শ) রেখে যাব। আমাদের আমরা ত্রুটি দেখে ভবিষ্যতে সেটি দেখব।

এক প্রশ্নের জবাবে ইসি মো. আলমগীর বলেন, তারা টোটাল নির্বাচন নিয়ে মতামত দিয়েছে। প্রার্থী, দল, সরকার, ভোটকেন্দ্র নানা বিষয়ে কথা বলেছে। আমরা কেবল আমাদের দিকটা দেখব। তারা যে সুপারিশ করেছে সেগুলো বিবেচনা করা হবে। যেগুলো আমাদের জন্য করা সম্ভব সেগুলো পরবর্তী কমিশনের জন্য সুপারিশ রেখে যাব।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, তারা একটা (প্রতিবেদনের) জায়গায় বলেছে ভোটে কারচুপি হয়েছে বেশ কয়েকটা কেন্দ্রে, যেখানে কমিশন ব্যবস্থাও নিয়েছে। যদি বলত কমিশন অবহেলা করেছে, এমন তো বলেনি। তারা কমিশনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কিছু বলেনি, যে কমিশনের এমন সক্ষমতা ছিল অথচ ব্যবস্থা নেয়নি। অথবা কমিশন এখানে ভোটের এই সমস্ত কেন্দ্রগুলোতে জাল ভোট হয়েছে কিন্তু কমিশন বন্ধ করেনি, এমন কোনো রিপোর্ট নেই। বরং কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে বলে তাদের রিপোর্টে আছে। প্রশাসনে রদবদল করেছে এগুলোও আছে। এখন টোটাল গণতান্ত্রিক বিষয় তো আর নির্বাচন কমিশন দেখে না। তারা নির্বাচন কমিশন নিয়ে যা বলেছে আমাদের দৃষ্টিতে দেখিনি যে খারাপ কিছু বলেছে। আমরা সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণভাবে করেছি। কতটা গ্রহণযোগ্য হয়েছে সেটা দলগুলোর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।

তিনি বলেন, নির্বাচন মানে ছেলেখেলা নয়। রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়, স্থানীয় সরকার পরিচালনার বিষয়। সেখানে নিয়ম করেছিল যে কেউ চাইলেই যেন প্রার্থী হতে না পারে। এজন্য প্রার্থী সমর্থনে সই নেওয়ার বিধান করা হয়েছিল। এটা গণতন্ত্রের পরিপন্থি। এছাড়া যারা সমর্থন দেন তারা অনেক সময় নির্যাতনের শিকার হন। এ ধরনের অভিযোগ আছে। তাই আমরা সেটা তুলে দিয়েছি। সমর্থন দেখানোর জন্য প্রার্থীরা ছলচাতুরি মিথ্যার আশ্রয় নিতেন।

তিনি আরো বলেন, প্রার্থী নিজেই ডান হাত, বাম হাত মিলিয়ে সই করতেন। এ ধরনের আইন কেন থাকবে যা ন্যায়ের পক্ষে না? তাই তুলে দিয়েছি। এটা অন্যায় করার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করে। আমরা এটা তুলে দিয়েছি আমাদের ক্ষমতা ছিল। এখন সংসদ নির্বাচন থেকে তুলে দিতে হলে আরপিও সংশোধন করতে হবে। এজন্য পার্লামেন্টে যেতে হবে। এ বিষয়ে কোনো আলোচনা এখনো হয়নি। আমরা মনে করবো আলোচনার পর। আলোচনাই তো হয়নি।

ইসি আলমগীর বলেন, কোনো দল থেকে প্রার্থী না দিলে স্বতন্ত্র থেকে দাঁড়াবে। এ ক্ষেত্রে কারো সমর্থনসূচক সই লাগবে। জেনে-বুঝে গণতন্ত্র, রাজনীতির জন্য সহায়ক সেটা তো করতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দল সুবিধা দেওয়ার জন্য নয়। তাহলে তো সংসদেও করতাম। পৃথিবীর অনেক দেশেই তৃণমূলে রাজনৈতিক নির্বাচন হয়। আমাদের এখানে সেটা আগে ছিল না। পরে এখানেও করা হয়েছিল। হয়তো ভালো দিক চিন্তা করেই করেছিল। এখন হয়তো তারা মনে করছে অপপ্রয়োগ বেশি হচ্ছে।’

জামানত প্রসঙ্গে ইসি বলেন, জামানত অনেক আগের করা। সংসদেও হয়তো বাড়িয়ে দিয়েছি। সামনের কমিশন আসবে তারা হয়তো করবে। আমাদের সময় জাতীয় নির্বাচন তো হবে না। কাজেই অনেক সময় আছে। প্রাথমিক রিপোর্ট আমরা দেখেছি। আমাদের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে। এখন সামারি করার জন্য বলা হয়েছে। সচিবালয় খসড়া করেছিল, আমরা বিস্তারিতভাবে আবার করতে বলেছি। এক্ষেত্রে পর্যালোচনা করে পরবর্তী কমিশনের জন্য সাজেশন রেখে যাবো। তারা টোটাল নির্বাচন নিয়ে মতামত দিয়েছে। প্রার্থী, দল, সরকার, ভোটকেন্দ্র নানা বিষয়ে কথা বলেছে। আমরা কেবল আমাদের দিকটা দেখবো। তারা যে সুপারিশ করেছে সেটা করা যায় কি না আমরা দেখবো। যেগুলো আমাদের জন্য করা সম্ভব সেগুলো পরবর্তী কমিশনের জন্য সুপারিশ রেখে যাবো।