Dhaka বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিদেশিরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলে মজা পায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচন একটা খেলা, বিদেশিরা এটা নিয়ে কথা বলে মজা পায় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।

রোববার (১৫ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

বিদেশিদের বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলা প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, বিভিন্ন দেশের লোকেরা এসে সাক্ষাৎ করছেন দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য। সেই ফাঁকে কেউ কেউ নির্বাচনের কথা বলে। আর এটা আপনাদের হট টপিক। তারা খুব মজা পান, বাংলাদেশের মিডিয়া তাদের পাত্তা দেয়। এজন্য তারা উপভোগ করে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে অনেকে কথা বলে মজা পায়। এটা একটা খেলা। বিদেশিরা এটা নিয়ে খুব মজা পায়। অন্য দেশে কেউ তো পাত্তা দেয় না। আর আপনারাও মজার মধ্যে তাদের উস্কানি দেন। এটা নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সুপারিশকে সরকার স্বাগত জানায় কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে আমাদের ইয়েস-নো কিছু বলার নেই। তারা কী বলল, না বলল এটা তাদের মাথাব্যথা।

সংলাপ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, আমরা সব সময় বলি আমরা সবার সঙ্গে আলাপ করতে রাজি আছি এবং করেও থাকি।

তিনি বলেন, সংলাপ তো আমরা করছিই। চাইলে তারাও করুক, কোনও আপত্তি নেই। তাদের কথা তারা বলেছে, আমাদের এতে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই। সরকারের ওপর আস্থা রাখুন। আমরা সংলাপের পক্ষে সবসময়ই। সব দলমত নির্বিশেষে আলাপ করি আমরা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইইউ বাংলাদেশের খরচে ছোট আকারের পর্যবেক্ষক পাঠাতে চেয়েছে, আমরা এখনও সিদ্ধান্ত জানাইনি। ১৮ অক্টোবর সৌদি আরবে প্যালেস্টাইন সংকট নিয়ে ওআইসি’র বৈঠক রয়েছে। সেখানে যোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ। দুই রাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নই প্যালেস্টাইন সমস্যার সমাধান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বিদেশিদের কাছে যাই না, তারা আমাদের কাছে আসে। তারা আসে, তারা অনুরোধ করে। দেখেন, আমেরিকার কত লোক আসছে আমাদের কাছে। আমেরিকায় আমরা যাওয়ার পর আমরা তাদের কাছে যাই নাই। তারা আমাদের মিশনে এসে দেখা করেছে। আমরা যাই না। আমরা তাদের হাউজে যাই না। তারা এসেছে আমাদের দপ্তরে।

বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতে অর্থবহ সংলাপের পাশাপাশি দেশের সরকার, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশনসহ অংশীজনদের কাছে পাঁচটি সুপারিশ রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাওয়া হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে।

জবাবে তিনি বলেন, তারা (মার্কিন প্রতিনিধিদল) তাদের বক্তব্য দিয়েছে। দিস ইজ ওয়েলকাম। সব সময় আমরা সংলাপ করে যাচ্ছি বিভিন্ন দলের সঙ্গে। আমাদের তাতে কোনো আপত্তি নেই। তারাও সংলাপ করুক, তারা যদি চায়। আমরা একটা স্বাধীন কমিশন তৈরি করেছি, যেটা তারা বলেছে। সুতরাং এটার সঙ্গে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

ড. মোমেন বলেন, আমরা চাই, সব লোক ভোট দিক; সবাই অংশগ্রহণ করুক। এটা নতুন কিছু নয়। তারা একটা ফরমায়েশি দিয়েছে, ভালো। মতামত, এটা খুব গুরত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি না। আপনাদের এটা নিয়ে অত হৈচৈ করার কোনো প্রয়োজন নাই।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ব্যবস্থায় পর্যবেক্ষক দলের কোনো ভূমিকা নেই। তারপরও দেশটির লোকজন এসে বাংলাদেশের নির্বাচনে পর্যবেক্ষণের কথা বললে, সেটি দুঃখজনক’ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুনিয়ার বেশির ভাগ দেশে নির্বাচনে পর্যবেক্ষণ নাই। কিন্তু সে দেশগুলো ভালো চলতেছে। আমেরিকায় কোনো পর্যবেক্ষণ নাই। আর আমেরিকার লোক এসে যদি বলে, নির্বাচনে পর্যবেক্ষণের কথা বলে, এটা দুঃখজনক। তাদের দেশে নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষণ কোনো দিন হয়নি।

নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ছোট পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, তারা ছোট দল পাঠাবে। তারা বলছে, ওই ছোট দলের খরচ আমরা দেব। আমরা এটাতে খুব আগ্রহী না। আমরা এখনও কোনো উত্তর দেই নাই। গতকাল চিঠিটা আসছে।

‘নির্বাচন পর্যবেক্ষক নয়, ভোটার দরকার’ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষকের দরকার নাই। আমাদের দরকার ভোটার। মানুষ ভোট দিলে ওটাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। বিদেশি কে আসলোৃআমরা বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীল নই।

বিদেশি পর্যবেক্ষক না এলে নির্বাচনের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নে মোমেন বলেন, দ্যাট ইজ ইমম্যাটেরিয়াল। আমার মানুষ যদি ভোট দেয়, ওটাই আমার জন্য যথেষ্ট। খালি বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে থাকেন কেন? এত দেউলিয়া হয়েছেন কেন। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখেন। আমরা দেউলিয়া না।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিদেশিরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলে মজা পায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৮:১৩:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচন একটা খেলা, বিদেশিরা এটা নিয়ে কথা বলে মজা পায় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।

রোববার (১৫ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

বিদেশিদের বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলা প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, বিভিন্ন দেশের লোকেরা এসে সাক্ষাৎ করছেন দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য। সেই ফাঁকে কেউ কেউ নির্বাচনের কথা বলে। আর এটা আপনাদের হট টপিক। তারা খুব মজা পান, বাংলাদেশের মিডিয়া তাদের পাত্তা দেয়। এজন্য তারা উপভোগ করে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে অনেকে কথা বলে মজা পায়। এটা একটা খেলা। বিদেশিরা এটা নিয়ে খুব মজা পায়। অন্য দেশে কেউ তো পাত্তা দেয় না। আর আপনারাও মজার মধ্যে তাদের উস্কানি দেন। এটা নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সুপারিশকে সরকার স্বাগত জানায় কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে আমাদের ইয়েস-নো কিছু বলার নেই। তারা কী বলল, না বলল এটা তাদের মাথাব্যথা।

সংলাপ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, আমরা সব সময় বলি আমরা সবার সঙ্গে আলাপ করতে রাজি আছি এবং করেও থাকি।

তিনি বলেন, সংলাপ তো আমরা করছিই। চাইলে তারাও করুক, কোনও আপত্তি নেই। তাদের কথা তারা বলেছে, আমাদের এতে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই। সরকারের ওপর আস্থা রাখুন। আমরা সংলাপের পক্ষে সবসময়ই। সব দলমত নির্বিশেষে আলাপ করি আমরা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইইউ বাংলাদেশের খরচে ছোট আকারের পর্যবেক্ষক পাঠাতে চেয়েছে, আমরা এখনও সিদ্ধান্ত জানাইনি। ১৮ অক্টোবর সৌদি আরবে প্যালেস্টাইন সংকট নিয়ে ওআইসি’র বৈঠক রয়েছে। সেখানে যোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ। দুই রাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নই প্যালেস্টাইন সমস্যার সমাধান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বিদেশিদের কাছে যাই না, তারা আমাদের কাছে আসে। তারা আসে, তারা অনুরোধ করে। দেখেন, আমেরিকার কত লোক আসছে আমাদের কাছে। আমেরিকায় আমরা যাওয়ার পর আমরা তাদের কাছে যাই নাই। তারা আমাদের মিশনে এসে দেখা করেছে। আমরা যাই না। আমরা তাদের হাউজে যাই না। তারা এসেছে আমাদের দপ্তরে।

বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতে অর্থবহ সংলাপের পাশাপাশি দেশের সরকার, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশনসহ অংশীজনদের কাছে পাঁচটি সুপারিশ রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাওয়া হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে।

জবাবে তিনি বলেন, তারা (মার্কিন প্রতিনিধিদল) তাদের বক্তব্য দিয়েছে। দিস ইজ ওয়েলকাম। সব সময় আমরা সংলাপ করে যাচ্ছি বিভিন্ন দলের সঙ্গে। আমাদের তাতে কোনো আপত্তি নেই। তারাও সংলাপ করুক, তারা যদি চায়। আমরা একটা স্বাধীন কমিশন তৈরি করেছি, যেটা তারা বলেছে। সুতরাং এটার সঙ্গে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

ড. মোমেন বলেন, আমরা চাই, সব লোক ভোট দিক; সবাই অংশগ্রহণ করুক। এটা নতুন কিছু নয়। তারা একটা ফরমায়েশি দিয়েছে, ভালো। মতামত, এটা খুব গুরত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি না। আপনাদের এটা নিয়ে অত হৈচৈ করার কোনো প্রয়োজন নাই।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ব্যবস্থায় পর্যবেক্ষক দলের কোনো ভূমিকা নেই। তারপরও দেশটির লোকজন এসে বাংলাদেশের নির্বাচনে পর্যবেক্ষণের কথা বললে, সেটি দুঃখজনক’ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুনিয়ার বেশির ভাগ দেশে নির্বাচনে পর্যবেক্ষণ নাই। কিন্তু সে দেশগুলো ভালো চলতেছে। আমেরিকায় কোনো পর্যবেক্ষণ নাই। আর আমেরিকার লোক এসে যদি বলে, নির্বাচনে পর্যবেক্ষণের কথা বলে, এটা দুঃখজনক। তাদের দেশে নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষণ কোনো দিন হয়নি।

নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ছোট পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, তারা ছোট দল পাঠাবে। তারা বলছে, ওই ছোট দলের খরচ আমরা দেব। আমরা এটাতে খুব আগ্রহী না। আমরা এখনও কোনো উত্তর দেই নাই। গতকাল চিঠিটা আসছে।

‘নির্বাচন পর্যবেক্ষক নয়, ভোটার দরকার’ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষকের দরকার নাই। আমাদের দরকার ভোটার। মানুষ ভোট দিলে ওটাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। বিদেশি কে আসলোৃআমরা বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীল নই।

বিদেশি পর্যবেক্ষক না এলে নির্বাচনের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নে মোমেন বলেন, দ্যাট ইজ ইমম্যাটেরিয়াল। আমার মানুষ যদি ভোট দেয়, ওটাই আমার জন্য যথেষ্ট। খালি বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে থাকেন কেন? এত দেউলিয়া হয়েছেন কেন। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখেন। আমরা দেউলিয়া না।