Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় থাকা যাবে, কিন্তু জনগণের মন পাওয়া যাবে না : গয়েশ্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় থাকা যাবে, কিন্তু জনগণের মন পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টু’র নবম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় থাকা যাবে, কিন্তু জনগণের মন পাওয়া যাবে না।ক্ষমতা ছাড়তে হবে এটা স্মরণ করলে কেউ জনগণের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। নিজেদের পরিণতি সম্পর্কে সরকারের ধারণা থাকা উচিত। রাজনীতিতে প্রতিশ্রুতির বড় অভাব।

বিদেশি রাষ্ট্রের পরামর্শে দেশ পরিচালনার অভিযোগ এনে বর্তমান সরকারকে ‘টবে সাজানো ফুল গাছের’ সঙ্গে তুলনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যারা পরনির্ভরশীল, অর্থাৎ যাদের শক্তি একটি দেশ, যাদের জনগণের শক্তি নাই, একদম নাই.. শেষ। অর্থাৎ টবের মধ্যে সাজানো ফুল গাছ… পানির অভাব পড়লে গাছটা শুকিয়ে যায়। সুতরাং এই বিদেশি পানি যেদিন বন্ধ যাবে, তখন আপনাদের (সরকার) নিঃশ্বাস স্তব্ধ হয়ে যাবে। বিদেশের নির্ভরতায় যারা দেশ পরিচালনা করে, আর যাই হোক, সরকারে থাকতে পারেন, কিন্তু জনগণের হৃদয়ে তাদের স্থান হয় না, জনগণ নিঃসংকোচে তাদেরকে ঘৃণা করে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র নিয়ে মানুষের মধ্যে যে আস্থা, তা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছে সরকার। শুধু জনগণ নয় আওয়ামী লীগের লোকেরাও ভোট বর্জন করেছে।

তিনি আরো বলেন, আন্দোলন করতে গিয়ে আত্মগোপন করেছি, পালিয়ে যাইনি। প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে আমাদের রাজনীতি করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

একাত্তরে ওবায়দুল কাদেরের পরিবার কোথায় ছিলো জানতে চেয়ে গয়েশ্বর বলেন, ওবায়দুল কাদেরের পরিবারের বাংলাদেশ সৃষ্টিতে কোন ভূমিকা নেই। আন্দোলনের সময় আমি কোথায় ছিলাম তা জানতে ডিবির হারুন কিংবা গোয়েন্দা সংস্থাকে জিজ্ঞেস করুন। হতে পারে, আপনার কোন আত্মীয়ের বাসায় ছিলাম।

বর্তমান সরকারের হাতে বাংলাদেশ নিরাপদ নয় দাবি করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পরবর্তী অধ্যায় কেমন হবে, তা তাদের ভাবা দরকার। এটা উপলব্ধি করতে পারলে, দলটির রাজনীতি অবশিষ্ট থাকবে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যেদিন শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে; সেদিন আমি স্তম্ভিত হয়ে গেছি। ঐদিন আমি পুরো ঢাকা শহর ঘুরেছি। তখন মানুষের মধ্যে কোনো শোকের ছায়া এবং কান্না করতে দেখিনি। পুরো ঢাকা নিশ্চুপ হয়ে আছে। শেখ মুজিব মারা গিয়েছেন কিন্তু তার জন্য কান্না করার মতো লোক ছিল না। তার জানাজা পড়ানোর লোক পর্যন্ত ছিল না। আমার মনে হয়, যখন এসরকারের পরিবর্তন ঘটবে তখন ১৫ আগস্টের মতো চোখের জল ফেলার মানুষও খুঁজে পাওয়া যাবে না ।

তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন ৭ জানুয়ারি নির্বাচনকেও হার মানিয়েছে। মানুষ যে ভোট দেবে এবং ভোট দিতে পারবে কি না এই আত্মবিশ্বাসটা মানুষের মধ্যে নেই, সেজন্য তারা ভোটকেন্দ্রে যায়নি। গণতন্ত্রের যে মূল জায়গা, আস্থা রয়েছে সেটিকে আপনি (শেখ হাসিনা) ধ্বংস করে ফেলেছেন।

স্মরণ সভায় নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টু’র স্মৃতিচারণ করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, পিন্টু যদি জীবিত থাকতো তাহলে বৃহত্তর লালবাগে তার নেতৃত্বে বিশাল আন্দোলন গড়ে উঠতো। আজকে বিএনপির আন্দোলনে তার একটা বড় ভূমিকা থাকতো। তাই, আমাদেরকে সবসময় নাসির উদ্দিন পিন্টুকে স্মরণ করতে হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় থাকা যাবে, কিন্তু জনগণের মন পাওয়া যাবে না : গয়েশ্বর

প্রকাশের সময় : ০৪:৫০:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় থাকা যাবে, কিন্তু জনগণের মন পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টু’র নবম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় থাকা যাবে, কিন্তু জনগণের মন পাওয়া যাবে না।ক্ষমতা ছাড়তে হবে এটা স্মরণ করলে কেউ জনগণের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। নিজেদের পরিণতি সম্পর্কে সরকারের ধারণা থাকা উচিত। রাজনীতিতে প্রতিশ্রুতির বড় অভাব।

বিদেশি রাষ্ট্রের পরামর্শে দেশ পরিচালনার অভিযোগ এনে বর্তমান সরকারকে ‘টবে সাজানো ফুল গাছের’ সঙ্গে তুলনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যারা পরনির্ভরশীল, অর্থাৎ যাদের শক্তি একটি দেশ, যাদের জনগণের শক্তি নাই, একদম নাই.. শেষ। অর্থাৎ টবের মধ্যে সাজানো ফুল গাছ… পানির অভাব পড়লে গাছটা শুকিয়ে যায়। সুতরাং এই বিদেশি পানি যেদিন বন্ধ যাবে, তখন আপনাদের (সরকার) নিঃশ্বাস স্তব্ধ হয়ে যাবে। বিদেশের নির্ভরতায় যারা দেশ পরিচালনা করে, আর যাই হোক, সরকারে থাকতে পারেন, কিন্তু জনগণের হৃদয়ে তাদের স্থান হয় না, জনগণ নিঃসংকোচে তাদেরকে ঘৃণা করে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র নিয়ে মানুষের মধ্যে যে আস্থা, তা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছে সরকার। শুধু জনগণ নয় আওয়ামী লীগের লোকেরাও ভোট বর্জন করেছে।

তিনি আরো বলেন, আন্দোলন করতে গিয়ে আত্মগোপন করেছি, পালিয়ে যাইনি। প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে আমাদের রাজনীতি করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

একাত্তরে ওবায়দুল কাদেরের পরিবার কোথায় ছিলো জানতে চেয়ে গয়েশ্বর বলেন, ওবায়দুল কাদেরের পরিবারের বাংলাদেশ সৃষ্টিতে কোন ভূমিকা নেই। আন্দোলনের সময় আমি কোথায় ছিলাম তা জানতে ডিবির হারুন কিংবা গোয়েন্দা সংস্থাকে জিজ্ঞেস করুন। হতে পারে, আপনার কোন আত্মীয়ের বাসায় ছিলাম।

বর্তমান সরকারের হাতে বাংলাদেশ নিরাপদ নয় দাবি করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পরবর্তী অধ্যায় কেমন হবে, তা তাদের ভাবা দরকার। এটা উপলব্ধি করতে পারলে, দলটির রাজনীতি অবশিষ্ট থাকবে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যেদিন শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে; সেদিন আমি স্তম্ভিত হয়ে গেছি। ঐদিন আমি পুরো ঢাকা শহর ঘুরেছি। তখন মানুষের মধ্যে কোনো শোকের ছায়া এবং কান্না করতে দেখিনি। পুরো ঢাকা নিশ্চুপ হয়ে আছে। শেখ মুজিব মারা গিয়েছেন কিন্তু তার জন্য কান্না করার মতো লোক ছিল না। তার জানাজা পড়ানোর লোক পর্যন্ত ছিল না। আমার মনে হয়, যখন এসরকারের পরিবর্তন ঘটবে তখন ১৫ আগস্টের মতো চোখের জল ফেলার মানুষও খুঁজে পাওয়া যাবে না ।

তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন ৭ জানুয়ারি নির্বাচনকেও হার মানিয়েছে। মানুষ যে ভোট দেবে এবং ভোট দিতে পারবে কি না এই আত্মবিশ্বাসটা মানুষের মধ্যে নেই, সেজন্য তারা ভোটকেন্দ্রে যায়নি। গণতন্ত্রের যে মূল জায়গা, আস্থা রয়েছে সেটিকে আপনি (শেখ হাসিনা) ধ্বংস করে ফেলেছেন।

স্মরণ সভায় নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টু’র স্মৃতিচারণ করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, পিন্টু যদি জীবিত থাকতো তাহলে বৃহত্তর লালবাগে তার নেতৃত্বে বিশাল আন্দোলন গড়ে উঠতো। আজকে বিএনপির আন্দোলনে তার একটা বড় ভূমিকা থাকতো। তাই, আমাদেরকে সবসময় নাসির উদ্দিন পিন্টুকে স্মরণ করতে হবে।