নিজস্ব প্রতিবেদক :
২০০৯ সালে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় দায়ের করা মামলার পুনঃতদন্ত ও নিরপরাধ জওয়ানদের মুক্তিসহ তিন দফা দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছে বিডিআর জওয়ানদের স্বজনরা। এর আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুর সোয়া ১টায় ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু করা হয়। এসময় আন্দোলনকারীদের অনেককে রাস্তায় বসে ও শুয়ে পড়তে দেখা গেছে। এতে করে শাহবাগ হয়ে সড়কগুলোতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো হলো, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মামলায় কারাগারে থাকা সব বন্দির মুক্তি দিতে হবে, চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহাল ও পুনর্বাসন করতে হবে এবং এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের ‘ঙ’ অনুচ্ছেদ বাতিল করতে হবে।
তারা জানিয়েছেন, শহীদ মিনারে অবস্থান করা তাদের মূল কর্মসূচি। তারা ১ ঘণ্টা শাহবাগ ব্লকেড শেষে আবার শহীদ মিনারে ফিরে যাবেন। পরে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে আসার সময় শাহবাগ থানার সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকানোর চেষ্টা করে। তবে, তারা ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগে চলে আসেন।
তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার। শহীদ মিনারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বারবার আদালত স্থানান্তর করার মধ্য দিয়ে বিডিআর হত্যা মামলার বিচার ব্যবস্থাকে বিলম্বিত করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই মামলার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
এসময় বিডিআর হত্যাকাণ্ডকে পরিকল্পিত উল্লেখ করে স্বজনরা বলেন, দেশবিরোধী চক্রান্তের শিকার হয়েছেন বিডিআর সদস্যরা। কারাবন্দী বিডিআর সদস্যদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা বাতিল ও চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল করতে আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
এসময় বিডিয়ার সদস্যদের স্বজনরা ক্ষতিপূরণ এবং আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি সেনা হত্যা দিবস হিসেবে পালনের দাবিও জানান। একইসঙ্গে তারা দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আজকের এই কর্মসূচিতে অবস্থান নেওয়া চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য নুরুল আমিন বলেন, আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য এখানে এসেছি। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের আশ্বাস না পেলে আমরা রাজপথ ছাড়ব না। আমাদের অনেক ভাই এখনো জেলে আছেন, তাঁদের মুক্ত করে আমরা রাজপথ ছাড়ব।
কর্মসূচি চলাকালে আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আরিয়ান বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দিয়ে আপনারা (সরকার) ক্ষমতায় গেছেন। এসি রুমে টিভি স্ক্রিনের সামনে বসে শাহবাগের অবস্থা দেখছেন, কিন্তু শাহবাগে এসে কথা বলতে পারছেন না। ছাত্রদের ন্যায্য দাবি না মানার কারণে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে, আপনারাও সেই পথে হাঁটবেন না। সেই পথে হাঁটলে শেখ হাসিনার মতো অবস্থা আপনাদেরও হবে।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ মুনসুর বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের পর যারা চাকরিচ্যুত হয়েছে ও চাকরিচ্যুত সদস্যদের পরিবারের লোকজন দ্বিতীয় দিনের মতো এ আন্দোলন করছেন। দুপুর থেকে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছে। এখানে সম্পূর্ণ যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।