Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপি সংলাপ ও নির্বাচন চায় না, তারা সহিংসতা চায়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সারাহ কুক সংলাপের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। আমরাও সংলাপের পক্ষে। তবে আমাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য আসতে হবে। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনও সংলাপ নয় বিএনপির সঙ্গে। তারা আসলে সংলাপ চায় না, নির্বাচনও চায় না। তারা সহিংসতা চায়। এখন যা তারা করছে।

বুধবার (১ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

তিনি বলেন, সংকট নিরসনে সংলাপ একটি মূল বিষয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এটা নিয়ে আলোচনা করেছেন সারা কুক।

বিএনপির সঙ্গে সংলাপে সরকার রাজি আছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দরজা তো বন্ধ হয়নি। আমরা সংবিধানের কাঠোমোর মধ্য থেকে যে কোনো আলোচনায় রাজি আছি।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে আলাপ হয়েছে কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উল্লেখযোগ্য কোনো আলাপ হয়নি। তিনি বলেছেন, সংলাপ হচ্ছে প্রধান হাতিয়ার। আমরা বলেছি, আমরা সবসময় সংলাপকে স্বাগত জানাই। সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত বলে আমরাও মনে করি। সংবিধান আমাদের যেভাবে কাঠামো করে দিয়েছে, সেটা অনুসারে সংলাপ করতে হবে। এটা সারাহ কুকও স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনিও বলেছেন, সংলাপের বিকল্প নেই। সব অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার কথা তিনিও বলেছেন। এটা কোনো পরামর্শ না, এটা আমাদের মধ্যে আলাপচারিতা হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় বলছেন, আমরা সবকিছু শান্তিপূর্ণভাবে করতে চাই। সংবিধান মাথায় রেখেই আমরা আলোচনা করতে চাই। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই, সহিংসতা চাই না। তিনি আলাপ-আলোচনা করার জন্য সবসময় নির্দেশ দেন, যেন পরিস্থিতি শান্ত থাকে, সেটা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।

আপনারা সংলাপের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, যারা আসবে, তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলবো। শর্তহীনভাব আসতে হবে। সংবিধানের কাঠামো মেনেই আমাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। সংবিধানের বাইরে যদি কেউ কিছু বলেন, তাহলে তো সেটা হবে না।

আপনারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের (বিরোধীদের) তো আপনাদের ডাকতে হবে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকেই তো আসছেন। তাদের প্রয়োজনে আমাদের ফোন করছেন। তারা তো বলতে পারেন, আমরা কথা বলতে চাই, আমরা হরতাল চাই না। এটা তো তারা বলেননি কোনোদিন। আমরা তো বলছি, দরজা তো বন্ধ হয়নি। আমরা যে কোনো আলোচনায় রাজি আছি, সেটা সংবিধানের কাঠোমোর মধ্য থেকে।

নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলকে আলোচনার জন্য ডেকেছে নির্বাচন কমিশন। বিএনপি বলে দিয়েছে, তারা যাবে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেটা তারা সবসময় বলে থাকে। ২০১৪ সালেও বলেছে। যে দলের প্রতি দেশের জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, সেই দল নিশ্চিতভাবে নির্বাচনে এলে জয়লাভ করতে পারবে না। তারা সংলাপ চায় না, সহিংসতা চায়। সহিংসতা করে তারা একটি পরিবেশ তৈরি করতে চায়। কিন্তু আমাদের দেশের জনগণ সহিংসতা চায় না।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন জায়গায় যানবাহনের অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। যেখানে আগুন ধরাবে, সেখানে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে যে ন্যস্ত দায়িত্ব সেটা তারা পালন করবেন। এখানে কোনো ঘাটতি হবে না। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কাজ করে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও করে যাবেন।

তিনি বলেন, চোরাগুপ্তাভাবে বাসে আগুন ধরানো, এটা তাদের (বিএনপি) প্র্যাকটিস। এটা শুধু আজকে নয় অনেকদিন ধরে করছে তারা। আপনারা সেই দৃশ্যটা নিশ্চয়ই ভুলেননি- একজন রিটায়ার্ড কর্মকর্তার একমাত্র সম্বল বাস। তার বাসে যখন আগুন ধরিয়ে দিয়েছে, তখন তিনি তার স্ত্রীকে বলছে- ‘বউরে আমার সব শেষ। আমার আশা ভরসা শেষ।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই পর্যায়েই তো ওরা (বিএনপি)। সম্পদ নষ্ট করছে, মানুষের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। বাসের মধ্যে ঘুমন্ত হেলপার ছিল, তাকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। যেটা ২০১৪ সালে হয়েছে। সেটাই আবার তারা শুরু করেছেন।

জাতিসংঘ সরকারকে সম্মেলন প্রদর্শনের জন্য বলেছে- এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, জাতিসংঘ তাদের দায়িত্ব পালন করছে। যেন তারা (বিএনপি) ভায়োলেন্সে না যায়, তাদের তো এটা মানা উচিত। ভায়োলেন্সে তারা না গেলেই তো পারে, আমরা তো সংযম দেখাচ্ছি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এত অত্যাচারের পরেও ধৈর্য্য ধরেছে। একজন পুলিশকে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল। আমাদের পুলিশ যেভাবে সংযম দেখিয়েছে এজন্য আমি গর্বিত। ভায়োলেন্স আমরা করছি না। জাতিসংঘ এটা বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছে।

অবরোধের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সব তো আপনারা নিজেরাই দেখছেন। গাড়ি-ঘোড়া চলছে। দোকান-পাট খুলছে, অফিস আদালত চলছে। বিচ্ছিন্নভাবে দু-একটি বাসে আগুন ধরাচ্ছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনকে কি এসওপির মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে? উত্তরে তিনি বলেন, আমরা আমাদের চেষ্টা করবোই। তারা কতখানি করবেন, সেটা তারা জানেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

বিএনপি সংলাপ ও নির্বাচন চায় না, তারা সহিংসতা চায়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৩:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সারাহ কুক সংলাপের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। আমরাও সংলাপের পক্ষে। তবে আমাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য আসতে হবে। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনও সংলাপ নয় বিএনপির সঙ্গে। তারা আসলে সংলাপ চায় না, নির্বাচনও চায় না। তারা সহিংসতা চায়। এখন যা তারা করছে।

বুধবার (১ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

তিনি বলেন, সংকট নিরসনে সংলাপ একটি মূল বিষয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এটা নিয়ে আলোচনা করেছেন সারা কুক।

বিএনপির সঙ্গে সংলাপে সরকার রাজি আছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দরজা তো বন্ধ হয়নি। আমরা সংবিধানের কাঠোমোর মধ্য থেকে যে কোনো আলোচনায় রাজি আছি।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে আলাপ হয়েছে কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উল্লেখযোগ্য কোনো আলাপ হয়নি। তিনি বলেছেন, সংলাপ হচ্ছে প্রধান হাতিয়ার। আমরা বলেছি, আমরা সবসময় সংলাপকে স্বাগত জানাই। সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত বলে আমরাও মনে করি। সংবিধান আমাদের যেভাবে কাঠামো করে দিয়েছে, সেটা অনুসারে সংলাপ করতে হবে। এটা সারাহ কুকও স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনিও বলেছেন, সংলাপের বিকল্প নেই। সব অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার কথা তিনিও বলেছেন। এটা কোনো পরামর্শ না, এটা আমাদের মধ্যে আলাপচারিতা হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় বলছেন, আমরা সবকিছু শান্তিপূর্ণভাবে করতে চাই। সংবিধান মাথায় রেখেই আমরা আলোচনা করতে চাই। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই, সহিংসতা চাই না। তিনি আলাপ-আলোচনা করার জন্য সবসময় নির্দেশ দেন, যেন পরিস্থিতি শান্ত থাকে, সেটা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।

আপনারা সংলাপের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, যারা আসবে, তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলবো। শর্তহীনভাব আসতে হবে। সংবিধানের কাঠামো মেনেই আমাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। সংবিধানের বাইরে যদি কেউ কিছু বলেন, তাহলে তো সেটা হবে না।

আপনারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের (বিরোধীদের) তো আপনাদের ডাকতে হবে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকেই তো আসছেন। তাদের প্রয়োজনে আমাদের ফোন করছেন। তারা তো বলতে পারেন, আমরা কথা বলতে চাই, আমরা হরতাল চাই না। এটা তো তারা বলেননি কোনোদিন। আমরা তো বলছি, দরজা তো বন্ধ হয়নি। আমরা যে কোনো আলোচনায় রাজি আছি, সেটা সংবিধানের কাঠোমোর মধ্য থেকে।

নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলকে আলোচনার জন্য ডেকেছে নির্বাচন কমিশন। বিএনপি বলে দিয়েছে, তারা যাবে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেটা তারা সবসময় বলে থাকে। ২০১৪ সালেও বলেছে। যে দলের প্রতি দেশের জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, সেই দল নিশ্চিতভাবে নির্বাচনে এলে জয়লাভ করতে পারবে না। তারা সংলাপ চায় না, সহিংসতা চায়। সহিংসতা করে তারা একটি পরিবেশ তৈরি করতে চায়। কিন্তু আমাদের দেশের জনগণ সহিংসতা চায় না।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন জায়গায় যানবাহনের অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। যেখানে আগুন ধরাবে, সেখানে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে যে ন্যস্ত দায়িত্ব সেটা তারা পালন করবেন। এখানে কোনো ঘাটতি হবে না। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কাজ করে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও করে যাবেন।

তিনি বলেন, চোরাগুপ্তাভাবে বাসে আগুন ধরানো, এটা তাদের (বিএনপি) প্র্যাকটিস। এটা শুধু আজকে নয় অনেকদিন ধরে করছে তারা। আপনারা সেই দৃশ্যটা নিশ্চয়ই ভুলেননি- একজন রিটায়ার্ড কর্মকর্তার একমাত্র সম্বল বাস। তার বাসে যখন আগুন ধরিয়ে দিয়েছে, তখন তিনি তার স্ত্রীকে বলছে- ‘বউরে আমার সব শেষ। আমার আশা ভরসা শেষ।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই পর্যায়েই তো ওরা (বিএনপি)। সম্পদ নষ্ট করছে, মানুষের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। বাসের মধ্যে ঘুমন্ত হেলপার ছিল, তাকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। যেটা ২০১৪ সালে হয়েছে। সেটাই আবার তারা শুরু করেছেন।

জাতিসংঘ সরকারকে সম্মেলন প্রদর্শনের জন্য বলেছে- এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, জাতিসংঘ তাদের দায়িত্ব পালন করছে। যেন তারা (বিএনপি) ভায়োলেন্সে না যায়, তাদের তো এটা মানা উচিত। ভায়োলেন্সে তারা না গেলেই তো পারে, আমরা তো সংযম দেখাচ্ছি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এত অত্যাচারের পরেও ধৈর্য্য ধরেছে। একজন পুলিশকে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল। আমাদের পুলিশ যেভাবে সংযম দেখিয়েছে এজন্য আমি গর্বিত। ভায়োলেন্স আমরা করছি না। জাতিসংঘ এটা বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছে।

অবরোধের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সব তো আপনারা নিজেরাই দেখছেন। গাড়ি-ঘোড়া চলছে। দোকান-পাট খুলছে, অফিস আদালত চলছে। বিচ্ছিন্নভাবে দু-একটি বাসে আগুন ধরাচ্ছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনকে কি এসওপির মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে? উত্তরে তিনি বলেন, আমরা আমাদের চেষ্টা করবোই। তারা কতখানি করবেন, সেটা তারা জানেন।