নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এখনও তারা (বিএনপি) যে পথে চলছে, সেটা ভুল পথ। তাদেরকে বলি, আপনারা এই ভুল পথ ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনের পথে আসুন।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবন থেকে ভার্চুয়ালি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় ১৫০টি সেতু, ১৪টি ওভারপাস, স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষাকেন্দ্র, ডিটিসিএ ভবন, বিআরটিসি’র ময়মনসিংহ বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ময়মনসিংহ জেলার কেওয়াটখালী ও রহমতপুর সেতুর নির্মাণ কাজ এবং সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-আহত ব্যক্তি ও পরিবারের মধ্যে ক্ষতিপূরণ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ দেশের উন্নয়ন, এ দেশের অর্জন, এ দেশের গণতন্ত্র, এ দেশের মুক্তিযুদ্ধ, এ দেশের স্বাধীনতা যদি রক্ষা করতে চান, দেশকে যদি ভালোবাসেন, তাহলে ক্ষমতার মঞ্চে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারাই বলুন তো, আজকে দেশের একটি বিরোধী দল দেশের নামে বিষোদ্গার করেন। যাকে বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী কী বডি ল্যাঙ্গুয়েজে সম্মান করে! এরা কি দেখে নাই? বহু প্রধানমন্ত্রী জি-টুয়েন্টিতে গেছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট তো নিজেই সেলফি তুলেছেন, জি-টোয়েন্টিতে তুলেছেন, নিউ ইয়র্কেও তোলেন। তিনি তো অন্য কারও সঙ্গে তোলেন নাই। আমাদের সমর্থন করছে… আমরা আনন্দিত সেই জন্য না.. শেখ হাসিনাকে গুরুত্ব দিয়েছে, গুরুত্বের মানেটা কী, এখানে সেটাই হচ্ছে বিবেচনার বিষয়। সমর্থনের কথা বলে লাভ নেই।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন আজিমপুর কবরস্থানে শায়িত। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে কথা বলে এখন আর লাভ নেই। ওটা ঘুমিয়ে আছে। জাগবে না। প্রধানমন্ত্রী কোন দুঃখে পদত্যাগ করবে? কী কারণে? বাংলাদেশ আপনি যাদের কথা বলেন, উৎসাহ পাচ্ছেন, তাদের দেশের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা আইআরআই বলেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে ৭০% লোক শেখ হাসিনার পক্ষে। এবার আমাদের মানতে হবে, শত্রুরা ৪৭-এর লাইনে চলে গেছে। তারা দ্বিজাতি তত্ত্বের ওই লাইনে চলে গেছে। আমাদের লাইন ঠিক করতে হবে। কারণ আমি এই বাংলাদেশের লোক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পৃথিবীতে আন্দোলনে সরকারের পতন হয়, আমাদের এখানে ৬৯-এর আন্দোলনে হয়েছে, এরশাদ সাহেবেরও পতন হয়েছে। বিরোধী দলের পতন কি হয় না? বিএনপি কতবার চেষ্টা করল, সব আন্দোলন ফেল করল, বিরোধী দলেরও তো পতন হয়। আমাদের দেশের নেতিবাচক রাজনীতিতে বিরোধী দল বারে বারে পতনের দিকে গেছে। এখনও তারা বিপথে চলছে। সে পথ ভুল পথ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫ বছর আগের বাংলাদেশের দিকে তাকান, আর পনের বছর পর রূপান্তরিত বাংলাদেশ, যার রূপকার এখানে বসে আছে। এই রূপান্তর বিশ্বের বিস্ময়। দেশের জন্য যে মানুষটি সবকিছু বিসর্জন দিয়েছে, নিজের সুখ-শান্তি, একটা কমিটমেন্ট নিয়ে তিনি কাজ করেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা দ্বিজাতি তত্ত্বের লাইনে চলে গেছে। তাই আমাদেরকেও বুঝতে হবে কোন লাইনে আমরা যাব। সাম্প্রদায়িকতা আর জঙ্গিবাদ- এই লাইন আমাদের লাইন নয়। তাদেরকে সুযোগ দিয়ে লাভ নেই। তাদেরকে সুযোগ দিলে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, এখন কত ঘরে কত আগুন। চারদিকে অশান্তির আগুন। এসব ছেড়ে বাংলাদেশের ফখরুল সাহেবকে উৎসাহ দেবে কে? তিনি তো প্রতিদিন এসব মিথ্যাচার করেন। পশ্চিমা বিশ্বের উৎসাহ তিনি পাচ্ছেন, এজন্য ভালো লাগছে, মির্জা আব্বাস বলে চাঁদ রাতের মতো লাগছে।
মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যদি কোনো কারণে ক্ষমতার ময়ুর সিংহাসনের দেখা পান, তখন কি পদ্মা সেতু ভেঙে ফেলবেন? মেট্রোরেল ভেঙে ফেলবেন? রূপপুরে পানি দেবেন? ক্ষমতায় এলে রূপপুর নাকি বন্ধ করে দেবে। আমি বলেছি, এই ইউরেনিয়াম ফখরুলের মাথায় ঢালতে হবে, তাহলে শিক্ষা হবে।
কাদের বলেন, আমি সড়কের কোনো মিটিংয়ে রাজনীতি নিয়ে কথা বলি না। আজ বললাম, এখন সবসময় বলবো। কারণ এটা আমাদের অস্তিত্বের কথা, আমাদের অস্তিত্বের রাজনীতি। এ লড়াই অনেক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল প্রতিদিন বলছেন পশ্চিমা বিশ্ব উৎসাহ দিচ্ছে, এতে তিনি সাহস পাচ্ছেন। বিরোধীদল নেতিবাচক রাজনীতি করে বার বার পতনের দিকে গেছে। এখনো তারা যে পথে গেছে, সে পথ কোন পথ? গতকালও বলেছি, তত্ত্বাবধায়ক আজিমপুরের গোরস্থানে ঘুমিয়ে আছে। ওটা জাগবে না। প্রধানমন্ত্রী কোন দুঃখে পদত্যাগ করবেন? বিদেশি সংস্থা বলছে, বাংলাদেশে ৭০ শতাংশ লোক শেখ হাসিনাকে সমর্থন করে।
তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন, অর্জন ও স্বাধীনতা রক্ষা করতে যদি চান, শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। এবার এটা মানতে হবে। শত্রুরা ৪৭ এর লাইনে চলে গেছে। তারা দ্বিজাতি তত্ত্বের লাইনে। আমার সবুজের মধ্যে লাল পতাকা উঁচিয়ে ধরতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা জঙ্গিবাদ আমাদের লাইন নয়। এদের সুযোগ দিয়ে লাভ নেই। এদের সুযোগ দিলে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। শেখ হাসিনা না এলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধ ধ্বংস হয়ে যাবে। জয় বাংলা, স্বাধীনতা ও গৌরবময় ইতিহাস থাকবে না। রক্ত উপত্যকার বাংলাদেশ আমরা চাই না।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাগত বক্তব্য দেন সওজের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান। আরও বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।