Dhaka শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্যের জন্য হলেও নির্বাচনে আসুক : শেখ হাসিনা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ১২:৪৯:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৩
  • ১৯৭ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মনোনয়ন বাণিজ্যের জন্য হলেও নির্বাচনে আসুক বিএনপি। কার কত দৌড়, সেটি দেখা যাবে নির্বাচনে। এবারের ভোট সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ হবে। সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করলে তার পরিণতি ভালো হবে না। যেসব দল নির্বাচনে এসেছে, তাদের সাধুবাদ জানাই। যারা আসেননি এখনও তাদেরও বলছি ভোটে আসুন। দেশের মানুষ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন, নৌকার পাশে থাকুন।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার পর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মানুষ মেরে সরকারের পতন চায়। তারা আবার মানুষ পোড়ানো শুরু করে দিয়েছে। সরকার উৎখাত করবে, সে জন্য আন্দোলন। কী আন্দোলন? ২৮ অক্টোবর তাদের অগ্নিসন্ত্রাস। চিফ জাস্টিসের বাড়ি আজ পর্যন্ত কেউ কখনও আক্রমণ করে না। এই বিএনপির সন্ত্রাসীরা চিফ জাস্টিসের বাড়ি আক্রমণ করল, ভাঙচুর করল। জাজরা যেখানে থাকেন জাজেস কোয়ার্টার, সেখানে তারা আক্রমণ করেছে। তারা সাংবাদিকদেরও ছাড়েনি।

দেশের জন্য কাজ করেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি কোনো দেশের তাবেদারি করেন না। জাতির পিতাকে হত্যার পরে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। ক্ষমতা দখলকারীরা উর্দি খুলে হঠাৎ রাজনীতিবিদ হয়ে যায়।

দেশবাসীকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। নির্বাচন স্বচ্ছ করতে যা করা দরকার ছিল, সবই করেছে সরকার। ভোটের ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে বিএনপি, আওয়ামী লীগ তা সংস্কার করেছে।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালে আত্মবিশ্বাস ছিল না বলেই জ্বালাও-পোড়াও করে তারা নির্বাচনে আসেনি। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে অপবাদ দিলেও কেউ এখন পর্যন্ত অনিয়মের একটি সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এখনো তারা অগ্নিসন্ত্রাস করছে। আসলে মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করে এবং মানুষকে হত্যা করে সরকারে যাওয়া যায় না।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি মিছিল-মিটিং করলেও আওয়ামী লীগ সেখানে বাধা দেয়নি। মিছিল-মিটিং এবং সুস্থ রাজনীতির সময় বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছিল, ভালো জমায়েতের পাশাপাশি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতাও তো বাড়ছিল। কিন্তু যখন তারা আবার সহিংসতার সেই পুরোনো রূপে ফিরে গেলো তখন তারা আবার জনবিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে জনগণের কাছে পরিচিতি পেয়েছে।

শেখ হাসিনা প্রশ্ন তোলেন, আজ আন্তর্জাতিকভাবে অনেক দেশ কথা বললেও যখন মিলিটারি ডিক্টেটররা মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করেছিল তখন তাদের চেতনা কোথায় ছিল? দেশের জন্য কাজ করেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি কোনো দেশের তাবেদারি করেন না।

এসময় নিজের সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, একসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে আওয়ামী লীগ সরকার আইন করে দিয়েছে। এতে ৮২টি সংশোধনী এনে অবাধ নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের উপযোগী করা হয়। সেই আইনের অধীনে এখন দেশে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়।

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এখন আওয়ামী লীগের লক্ষ্য দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করে স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সোসাইটি গঠন করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন চলাকালীনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসক সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে কোনো অফিসার বদলি করা, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বদলি, এগুলো নির্বাচন কমিশনারের অনুমতি ছাড়া করা যাবে না। যদি নির্বাচন কমিশন চায়, তখন সেটা পরিবর্তন করা যায়, তাছাড়া করা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা যে সংবিধান দিয়েছিলেন এবং নির্বাচনে যে নীতিমালা দিয়েছিলেন, সেখানে একটা বিষয় ছিল যে, ব্যালট পেপারের পেছনে প্রিজাইডিং অফিসারের সিল থাকবে, জিয়াউর রহমান নির্বাচনের আগে অর্ডিন্যান্স করে তা সবকিছু বাতিল করে দেয়। অর্থাৎ বাক্স ভরে ভরে রেখে দেয়া ইত্যাদি ইত্যাদি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগ্রাম করে গেছে। আর বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরই এদেশে হত্যার রাজনীতি শুরু হয়। জনগণের ভোট ও গণতন্ত্রের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়। আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে, তখনই বিভিন্ন সংস্কার করেছে। যাতে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হয়। জনগণ তার ভোট দিতে পারে, যাতে জনগণ তার অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। আমরাই স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা এবং জনগণ যাতে ভোট দিতে পারে, সেক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন করা, সেগুলো আওয়ামী লীগই করেছে। আমরা জোট করে বিভিন্ন প্রস্তাবনা নিয়ে এসে, একে একে তা বাস্তবায়ন করেছি।

আর তাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হয়েছে, মানুষের জীবন সমৃদ্ধ হয়েছে এ কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগ্রাম করে গেছে। আর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী জীবনও দিয়েছেন। নৌকা মানেই শান্তি-সমৃদ্ধি৷ নিশ্চয়ই দেশবাসী এসব বাস্তবতা মাথায় রেখেই ভোট দেবেন৷ বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশকে খুবলে খাবে, নিজেদের ভাগ্য গড়বে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, সন্ত্রাসী দল বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনগণকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। তবে নিজেরা আইন হাতে তুলে নেবেন না। জনগণ ধরা শুরু করলে ওই সব মুষ্টিমেয় আগুন সন্ত্রাসীরা এদেশে ঠাঁই পাবে না। কোনো একটি বড় দেশ বিএনপিকে সমর্থন দিচ্ছে দিক, তবে আমার কাছে বাংলাদেশের চেয়ে বড় আর কেউ না। দেশের জন্য কাজ করি, কারও তাবেদারি করার জন্য ক্ষমতায় বসিনি। নির্বাচনে অংশ নেবার মত আস্থা-বিশ্বাস নেই বিএনপির। তারা কী একটা নেতাও দেশে পেল না, যাকে তাদের প্রধান বানাবে?

জিয়াউর রহমান হ্যাঁ/না ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের নামে প্রহসন করেছিলো দেশে। গণতন্ত্রের নামে তারা দেশের মানুষকে ধোঁকা দিয়েছিলো। বিএনপির জন্মই মিলিটারি ডিক্টেটরের হাত ধরে। তারা যুদ্ধপরাধীদের রাজনীতির সুযোগ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে হয়েছিলো। বিদেশি যারা এখন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অনেক মাথা ঘামাচ্ছে। তারা তো অতীতের এসব নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলে না।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার ভুয়া ভোট মেনে নেয়নি দেশের মানুষ; পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল। এক সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে আওয়ামী লীগ সরকার আইন করে দিয়েছে, যার অধীনে এখন দেশে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। নির্বাচনে অবৈধভাবে জেতার জন্য বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে, জনগণের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলেছে। ভোটাধিকার মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের ষড়যন্ত্র করেও পেরে ওঠেনি, কারণ জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলো। মানুষ ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে, সঠিক ভোটটিই দেয়। আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি আছে দেশে। নির্বাচনী সবকটি ইশতেহার পূরণ করেছি আমরা। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগের শক্তি দেশের জনগণ বলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

যারা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাদের স্বাগত জানাই। যারা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি তারাও আশা করি সিদ্ধান্ত নেবেন। দেশবাসী ভোটাধিকার আত্মবিশ্বের সঙ্গে প্রয়োগ করবেন। আমি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বলছি আপনারা সবাই নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। তারপরেও জনগণের ইচ্ছা যাকে খুশি তাকে ভোট দেবেন।

তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করেছে। অধিকার আদায়ের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগ্রাম করে গেছে। আর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী জীবন দিয়েছে। তৃণমূল পর্যন্ত সব সুবিধা দেওয়ার কারণে দেশের মানুষ এখন একটা সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখে। নৌকা মার্কা বাংলাদেশের জনগণকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। নৌকা মার্কা থাকলে জনগণের শান্তি ও সমৃদ্ধি হয়। তাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের প্রার্থীদেরকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে বিদেশিদের নাক গলানোর বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, আজ আন্তর্জাতিকভাবে অনেক দেশ কথা বললেও যখন মিলিটারি ডিক্টেটররা মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করেছিল, তখন তাদের চেতনা কোথায় ছিল?’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ পদত্যাগ করতে হয়েছে।’

সরকারপ্রধান বলেন, একসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে আওয়ামী লীগ সরকার আইন করে দিয়েছে। এতে ৮২টি সংশোধনী এনে অবাধ নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের উপযোগী করা হয়। সেই আইনের অধীনে এখন দেশে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়।

বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগের শক্তি ও দেশের জনগণের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ঘোষিত ইশতেহার অনুযায়ী প্রতিবছর বাজেট প্রণয়ন ও প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এখন আওয়ামী লীগের লক্ষ্য দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করে স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সোসাইটি গঠন করা।’

শেখ হাসিনা বলেন, প্রজন্মের পর প্রজন্ম যাতে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে সেটি করে দেওয়ার জন্য কাজ করছি। কিন্তু ২০১৩ ও ১৪ সালে বিএনপি অগ্নি সন্ত্রাসের কারণে পোড়া মানুষগুলো বিকৃত চেহারা নিয়ে কী কষ্টে জীবন যাপন করে আসছেন। প্রায় ৩০০০ এর উপর মানুষ আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। ৫০০ স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছে। এই সমস্ত ধ্বংসযজ্ঞ করেও তারা ইলেকশনে আসেনি। আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। সেটা জেনেই তারা ইলেকশনে না আসে ইলেকশন বানচাল করার চেষ্টা করছে। সারাদেশে যাতে অল্প পয়সায় চলাফেরা করতে পারে সেজন্য রেললাইন করে দিয়েছি। সেই রেললাইনে তারা উপড়ে ফেলেছে। ট্রেনে আগুন দিয়েছে। তারা যদি নির্বাচন থেকে সরে যায় যেতে পারে। কিন্তু তারা নির্বাচনে না এসে অগ্নিসন্ত্রাসী করছে। যারা অগ্নি সন্ত্রাস করবে তাদের যেখানেই পাওয়া যাবে দেশবাসীকে বলবো তাদের ধরিয়ে দিন।

সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে, তখনই বিভিন্ন সংস্কার করেছে। যাতে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হয়। জনগণ তার ভোট দিতে পারে, যাতে জনগণ তার অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। আমরাই স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা এবং জনগণ যাতে ভোট দিতে পারে, সেক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন করা, সেগুলো আওয়ামী লীগই করেছে। আমরা জোট করে বিভিন্ন প্রস্তাবনা নিয়ে এসে, একে একে তা বাস্তবায়ন করেছি।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বাজেট থেকে শুরু করে সবকিছু প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে যেত। সেই জায়গা থেকে স্বাধীন করে দিয়েছি। নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে আমরা আইন করি। যেগুলো আগে করা ছিল না। আইনের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। সেখানে কোনো হস্তক্ষেপ করা হয়নি।

শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন চলাকালীন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসক সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে কোনো অফিসার বদলি করা, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বদলি, এগুলো নির্বাচন কমিশনারের অনুমতি ছাড়া করা যাবে না। যদি নির্বাচন কমিশন চায় তখন সেটা পরিবর্তন করা যায়, তাছাড়া করা যাবে না।

‘বিএনপির মিটিং-মিছিলে বাধা নেই, তাহলে অগ্নিসন্ত্রাস কেন’ এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, বিএনপি যখন ভদ্রচিতভাবে কর্মসূচি পালন করছিল, তখন মানুষের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। কিন্তু অগ্নিসন্ত্রাস খুন ও হামলা শুরুর পর তারা আবার জনবিছিন্ন ও সন্ত্রাসী দল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। যখনই সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে, তখনই জবাবদিহিতার মধ্যে পড়েছে তারা। তাদের প্রতি জনগণের আস্থা উঠে গেছে।

এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়া অন্য সদস্যদের মধ্যে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, কাজী জাফর উল্ল্যাহ, রমেশ চন্দ্র সেন, ওবায়দুল কাদের, মো. রশিদুল আলম ও ডা. দীপু মনি উপস্থিত রয়েছেন।

আবহাওয়া

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিএনপি : সালাহউদ্দিন

বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্যের জন্য হলেও নির্বাচনে আসুক : শেখ হাসিনা

প্রকাশের সময় : ১২:৪৯:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মনোনয়ন বাণিজ্যের জন্য হলেও নির্বাচনে আসুক বিএনপি। কার কত দৌড়, সেটি দেখা যাবে নির্বাচনে। এবারের ভোট সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ হবে। সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করলে তার পরিণতি ভালো হবে না। যেসব দল নির্বাচনে এসেছে, তাদের সাধুবাদ জানাই। যারা আসেননি এখনও তাদেরও বলছি ভোটে আসুন। দেশের মানুষ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন, নৌকার পাশে থাকুন।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার পর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মানুষ মেরে সরকারের পতন চায়। তারা আবার মানুষ পোড়ানো শুরু করে দিয়েছে। সরকার উৎখাত করবে, সে জন্য আন্দোলন। কী আন্দোলন? ২৮ অক্টোবর তাদের অগ্নিসন্ত্রাস। চিফ জাস্টিসের বাড়ি আজ পর্যন্ত কেউ কখনও আক্রমণ করে না। এই বিএনপির সন্ত্রাসীরা চিফ জাস্টিসের বাড়ি আক্রমণ করল, ভাঙচুর করল। জাজরা যেখানে থাকেন জাজেস কোয়ার্টার, সেখানে তারা আক্রমণ করেছে। তারা সাংবাদিকদেরও ছাড়েনি।

দেশের জন্য কাজ করেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি কোনো দেশের তাবেদারি করেন না। জাতির পিতাকে হত্যার পরে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। ক্ষমতা দখলকারীরা উর্দি খুলে হঠাৎ রাজনীতিবিদ হয়ে যায়।

দেশবাসীকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। নির্বাচন স্বচ্ছ করতে যা করা দরকার ছিল, সবই করেছে সরকার। ভোটের ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে বিএনপি, আওয়ামী লীগ তা সংস্কার করেছে।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালে আত্মবিশ্বাস ছিল না বলেই জ্বালাও-পোড়াও করে তারা নির্বাচনে আসেনি। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে অপবাদ দিলেও কেউ এখন পর্যন্ত অনিয়মের একটি সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এখনো তারা অগ্নিসন্ত্রাস করছে। আসলে মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করে এবং মানুষকে হত্যা করে সরকারে যাওয়া যায় না।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি মিছিল-মিটিং করলেও আওয়ামী লীগ সেখানে বাধা দেয়নি। মিছিল-মিটিং এবং সুস্থ রাজনীতির সময় বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছিল, ভালো জমায়েতের পাশাপাশি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতাও তো বাড়ছিল। কিন্তু যখন তারা আবার সহিংসতার সেই পুরোনো রূপে ফিরে গেলো তখন তারা আবার জনবিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে জনগণের কাছে পরিচিতি পেয়েছে।

শেখ হাসিনা প্রশ্ন তোলেন, আজ আন্তর্জাতিকভাবে অনেক দেশ কথা বললেও যখন মিলিটারি ডিক্টেটররা মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করেছিল তখন তাদের চেতনা কোথায় ছিল? দেশের জন্য কাজ করেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি কোনো দেশের তাবেদারি করেন না।

এসময় নিজের সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, একসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে আওয়ামী লীগ সরকার আইন করে দিয়েছে। এতে ৮২টি সংশোধনী এনে অবাধ নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের উপযোগী করা হয়। সেই আইনের অধীনে এখন দেশে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়।

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এখন আওয়ামী লীগের লক্ষ্য দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করে স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সোসাইটি গঠন করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন চলাকালীনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসক সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে কোনো অফিসার বদলি করা, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বদলি, এগুলো নির্বাচন কমিশনারের অনুমতি ছাড়া করা যাবে না। যদি নির্বাচন কমিশন চায়, তখন সেটা পরিবর্তন করা যায়, তাছাড়া করা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা যে সংবিধান দিয়েছিলেন এবং নির্বাচনে যে নীতিমালা দিয়েছিলেন, সেখানে একটা বিষয় ছিল যে, ব্যালট পেপারের পেছনে প্রিজাইডিং অফিসারের সিল থাকবে, জিয়াউর রহমান নির্বাচনের আগে অর্ডিন্যান্স করে তা সবকিছু বাতিল করে দেয়। অর্থাৎ বাক্স ভরে ভরে রেখে দেয়া ইত্যাদি ইত্যাদি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগ্রাম করে গেছে। আর বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরই এদেশে হত্যার রাজনীতি শুরু হয়। জনগণের ভোট ও গণতন্ত্রের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়। আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে, তখনই বিভিন্ন সংস্কার করেছে। যাতে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হয়। জনগণ তার ভোট দিতে পারে, যাতে জনগণ তার অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। আমরাই স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা এবং জনগণ যাতে ভোট দিতে পারে, সেক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন করা, সেগুলো আওয়ামী লীগই করেছে। আমরা জোট করে বিভিন্ন প্রস্তাবনা নিয়ে এসে, একে একে তা বাস্তবায়ন করেছি।

আর তাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হয়েছে, মানুষের জীবন সমৃদ্ধ হয়েছে এ কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগ্রাম করে গেছে। আর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী জীবনও দিয়েছেন। নৌকা মানেই শান্তি-সমৃদ্ধি৷ নিশ্চয়ই দেশবাসী এসব বাস্তবতা মাথায় রেখেই ভোট দেবেন৷ বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশকে খুবলে খাবে, নিজেদের ভাগ্য গড়বে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, সন্ত্রাসী দল বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনগণকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। তবে নিজেরা আইন হাতে তুলে নেবেন না। জনগণ ধরা শুরু করলে ওই সব মুষ্টিমেয় আগুন সন্ত্রাসীরা এদেশে ঠাঁই পাবে না। কোনো একটি বড় দেশ বিএনপিকে সমর্থন দিচ্ছে দিক, তবে আমার কাছে বাংলাদেশের চেয়ে বড় আর কেউ না। দেশের জন্য কাজ করি, কারও তাবেদারি করার জন্য ক্ষমতায় বসিনি। নির্বাচনে অংশ নেবার মত আস্থা-বিশ্বাস নেই বিএনপির। তারা কী একটা নেতাও দেশে পেল না, যাকে তাদের প্রধান বানাবে?

জিয়াউর রহমান হ্যাঁ/না ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের নামে প্রহসন করেছিলো দেশে। গণতন্ত্রের নামে তারা দেশের মানুষকে ধোঁকা দিয়েছিলো। বিএনপির জন্মই মিলিটারি ডিক্টেটরের হাত ধরে। তারা যুদ্ধপরাধীদের রাজনীতির সুযোগ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে হয়েছিলো। বিদেশি যারা এখন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অনেক মাথা ঘামাচ্ছে। তারা তো অতীতের এসব নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলে না।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার ভুয়া ভোট মেনে নেয়নি দেশের মানুষ; পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল। এক সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে আওয়ামী লীগ সরকার আইন করে দিয়েছে, যার অধীনে এখন দেশে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। নির্বাচনে অবৈধভাবে জেতার জন্য বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে, জনগণের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলেছে। ভোটাধিকার মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের ষড়যন্ত্র করেও পেরে ওঠেনি, কারণ জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলো। মানুষ ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে, সঠিক ভোটটিই দেয়। আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি আছে দেশে। নির্বাচনী সবকটি ইশতেহার পূরণ করেছি আমরা। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগের শক্তি দেশের জনগণ বলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

যারা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাদের স্বাগত জানাই। যারা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি তারাও আশা করি সিদ্ধান্ত নেবেন। দেশবাসী ভোটাধিকার আত্মবিশ্বের সঙ্গে প্রয়োগ করবেন। আমি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বলছি আপনারা সবাই নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। তারপরেও জনগণের ইচ্ছা যাকে খুশি তাকে ভোট দেবেন।

তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করেছে। অধিকার আদায়ের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগ্রাম করে গেছে। আর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী জীবন দিয়েছে। তৃণমূল পর্যন্ত সব সুবিধা দেওয়ার কারণে দেশের মানুষ এখন একটা সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখে। নৌকা মার্কা বাংলাদেশের জনগণকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। নৌকা মার্কা থাকলে জনগণের শান্তি ও সমৃদ্ধি হয়। তাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের প্রার্থীদেরকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে বিদেশিদের নাক গলানোর বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, আজ আন্তর্জাতিকভাবে অনেক দেশ কথা বললেও যখন মিলিটারি ডিক্টেটররা মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করেছিল, তখন তাদের চেতনা কোথায় ছিল?’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ পদত্যাগ করতে হয়েছে।’

সরকারপ্রধান বলেন, একসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে আওয়ামী লীগ সরকার আইন করে দিয়েছে। এতে ৮২টি সংশোধনী এনে অবাধ নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের উপযোগী করা হয়। সেই আইনের অধীনে এখন দেশে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়।

বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগের শক্তি ও দেশের জনগণের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ঘোষিত ইশতেহার অনুযায়ী প্রতিবছর বাজেট প্রণয়ন ও প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এখন আওয়ামী লীগের লক্ষ্য দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করে স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সোসাইটি গঠন করা।’

শেখ হাসিনা বলেন, প্রজন্মের পর প্রজন্ম যাতে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে সেটি করে দেওয়ার জন্য কাজ করছি। কিন্তু ২০১৩ ও ১৪ সালে বিএনপি অগ্নি সন্ত্রাসের কারণে পোড়া মানুষগুলো বিকৃত চেহারা নিয়ে কী কষ্টে জীবন যাপন করে আসছেন। প্রায় ৩০০০ এর উপর মানুষ আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। ৫০০ স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছে। এই সমস্ত ধ্বংসযজ্ঞ করেও তারা ইলেকশনে আসেনি। আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। সেটা জেনেই তারা ইলেকশনে না আসে ইলেকশন বানচাল করার চেষ্টা করছে। সারাদেশে যাতে অল্প পয়সায় চলাফেরা করতে পারে সেজন্য রেললাইন করে দিয়েছি। সেই রেললাইনে তারা উপড়ে ফেলেছে। ট্রেনে আগুন দিয়েছে। তারা যদি নির্বাচন থেকে সরে যায় যেতে পারে। কিন্তু তারা নির্বাচনে না এসে অগ্নিসন্ত্রাসী করছে। যারা অগ্নি সন্ত্রাস করবে তাদের যেখানেই পাওয়া যাবে দেশবাসীকে বলবো তাদের ধরিয়ে দিন।

সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে, তখনই বিভিন্ন সংস্কার করেছে। যাতে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হয়। জনগণ তার ভোট দিতে পারে, যাতে জনগণ তার অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। আমরাই স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা এবং জনগণ যাতে ভোট দিতে পারে, সেক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন করা, সেগুলো আওয়ামী লীগই করেছে। আমরা জোট করে বিভিন্ন প্রস্তাবনা নিয়ে এসে, একে একে তা বাস্তবায়ন করেছি।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বাজেট থেকে শুরু করে সবকিছু প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে যেত। সেই জায়গা থেকে স্বাধীন করে দিয়েছি। নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে আমরা আইন করি। যেগুলো আগে করা ছিল না। আইনের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। সেখানে কোনো হস্তক্ষেপ করা হয়নি।

শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন চলাকালীন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসক সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে কোনো অফিসার বদলি করা, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বদলি, এগুলো নির্বাচন কমিশনারের অনুমতি ছাড়া করা যাবে না। যদি নির্বাচন কমিশন চায় তখন সেটা পরিবর্তন করা যায়, তাছাড়া করা যাবে না।

‘বিএনপির মিটিং-মিছিলে বাধা নেই, তাহলে অগ্নিসন্ত্রাস কেন’ এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, বিএনপি যখন ভদ্রচিতভাবে কর্মসূচি পালন করছিল, তখন মানুষের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। কিন্তু অগ্নিসন্ত্রাস খুন ও হামলা শুরুর পর তারা আবার জনবিছিন্ন ও সন্ত্রাসী দল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। যখনই সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে, তখনই জবাবদিহিতার মধ্যে পড়েছে তারা। তাদের প্রতি জনগণের আস্থা উঠে গেছে।

এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়া অন্য সদস্যদের মধ্যে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, কাজী জাফর উল্ল্যাহ, রমেশ চন্দ্র সেন, ওবায়দুল কাদের, মো. রশিদুল আলম ও ডা. দীপু মনি উপস্থিত রয়েছেন।