নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি বিভিন্ন সময় এই দেশকে শাসন ও শোষণ ও লুট করার জন্য ভারত জুজু ভয় দেখিয়েছে মন্তব্য করেছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মোহাম্মদপুরে সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) আয়োজিত ‘বহুমুখী পাট পণ্যের একক মেলা’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি বিভিন্ন সময় এই দেশকে শাসন ও শোষণ ও লুট করার জন্য ভারত জুজু ভয় দেখিয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া তার বক্তৃতায় বলেছিলেন, আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে, নৌকায় ভোট দিলে ফেনী পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে। আমরা সে কথা ভুলিনি, এই জাতি ভুলে যায়নি। বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেছিলেন, আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে, নৌকায় ভোট দিলে মসজিদে আজানের ধ্বনি শোনা যাবে না, হিন্দুদের উলুধ্বনি শোনা যাবে। আমি সে কারণে বিএনপিকে বলতে চাই, যখন সব ইস্যু তাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে, এখন তারা পাগলের প্রলাপ বকছে।
তিনি আরও বলেন, ভারত বিরোধিতার নামে পাকিস্তানের চিন্তা চেতনা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছিল তাদের প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ। কিন্তু বাঙালি জাতি এই অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ ছিল, সংঘবদ্ধ ছিল।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, পাট পণ্য রপ্তানিকারক এবং সংশ্লিষ্টরা পাটের উৎপাদন থেকে শুরু করে পাট পণ্য নিয়ে গবেষণা, নকশার উন্নয়ন, বিপণনসহ বিভিন্ন বিষয়ে একটি সমন্বিত পথনকশা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। আমরা দ্রুত পথনকশা প্রণয়ন ও তা যথাযথ বাস্তবায়নে কার্যক্রম গ্রহণ করব।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, আমরা পাটের উৎপাদনের দিকে যেমন গুরুত্ব দিচ্ছি, তেমনি মূল্য সংযোজিত পাটপণ্য উৎপাদনে আরও জোর দিচ্ছি। এজন্য জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উদ্ভাবন, ব্যবহার ও বাজার সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে জেডিপিসি পাটপণ্য উৎপাদনকারী, বিপণনকারী, ব্যবহারকারী এবং বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে অধিক যোগাযোগ স্থাপনে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। ইতোমধ্যে, এখাতের উদ্যোক্তারা বিভিন্ন প্রকার দৃষ্টিনন্দন, আধুনিক ও স্মার্ট পাটপণ্য উৎপাদন করেছেন, যার অধিকাংশই বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। এসব পণ্যকে জনপ্রিয় করতে প্রচার প্রচারণাসহ বিদেশে বিভিন্ন মেলার আয়োজন করার কাজ চলমান রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে পাট উৎপাদনে বাংলাদেশ দ্বিতীয়। পাট পণ্যের উৎপাদন খরচ যে-সকল দেশে সবচেয়ে কম তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। পাটের তৈরি গৃহসজ্জার পণ্যের চাহিদার পাশাপাশি পাটের তৈরি শপিং ব্যাগ, জিওটেক্সটাইল ও ফ্লোর কভারের চাহিদাও বাড়ছে। এ ছাড়া পাঠকাঠির তৈরি চারকোলের চাহিদাও রয়েছে চীনসহ বিভিন্ন দেশে। এছাড়া পাটভিত্তিক জিওটেক্সটাইলের বৈশ্বিক বাজারের আকার ক্রমে বেড়েই চলেছে। এ সব সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা পাটের উৎপাদনের দিকে যেমন গুরুত্ব দিচ্ছি, তেমনি মূল্য সংযোজিত পাটপণ্য উৎপাদনে আরও জোর দিচ্ছি। এজন্য জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উদ্ভাবন, ব্যবহার ও বাজার সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছে।
মন্ত্রী নানক বলেন, পরিবেশবান্ধব সোনালী আঁশ পাট বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। শুধু তাই নয়, বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে পাটের ভূমিকা একটি স্বীকৃত ইতিহাস। স্বাধীনতার পর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাটশিল্পের উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সদয় নির্দেশনায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় কর্তৃক পাটক্ষেতে নানামুখী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন হচ্ছে। পাট ও পাটজাত পণ্য নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে সরকার।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) জিনাত আরা, বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. নূরুজ্জামান, জেডিপিসির নির্বাহী পরিচালক (যুগ্ম সচিব) গোপাল চন্দ্র দাস প্রমুখ।
বহুমুখী পাটপণ্যের একক মেলায় জেডিপিসির আওতাভুক্ত ৩০টি স্টল রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।