নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি সংসদ নির্বাচনে আসতে চাইলে আইন দেখে সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। নির্বাচন কমিশন তাদের স্বাগত জানাবে। ভোটের সময় বাড়ানোর প্রয়োজন হলে আইন মেনে তাদের জন্য নির্বাচনে আসার পথ তৈরি করা হবে।
সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শেষ পর্যন্ত সমঝোতা হলে নির্বাচনের স্বার্থে ভোটের তারিখ পেছানোর বিষয়টি কমিশন ভেবে দেখবে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসতে চাইলে আইন দেখে সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। ভোটের তারিখ পেছানোর প্রয়োজন হলে ভেবে দেখবে কমিশন।
রাশেদা সুলতানা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও আমরা চাই, নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করুক। সবাই আসুক, একটি উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হোক। যতক্ষণ পর্যন্ত সুযোগ আছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা চাই; সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন হোক।
নির্বাচনে বিএনপির আসা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা আরও বলেন, বিএনপি যদি আসতে চায়; আমরা তখন সিদ্ধান্ত নিবো। তারা যদি আসে; আমরা বিবেচনা করবো। আমরা চাই সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা (বিএনপি) কিন্তু অংশগ্রহণ করেছিল। সেসময় তাদের জন্য স্পেস তৈরি করা হয়েছিল। এবারও সে সুযোগ থাকবে। তারা কবে আসতে চায়, কখন আসতে চায়, সেই পরিস্থিতি বুঝে আইন অনুসারে তাদের স্পেস করে দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, যদি কোনো দল সঠিক সময়ের মধ্যে না আসে তাহলে আমাদের আর কোনো কিছু করার থাকবে না।
এসময় শুধু যারা নির্বাচনে আসতে চায় তাদের কথা ভাবলেই হবে না, যারা এরইমধ্যে নমিনেশন পেপার নিয়েছেন তাদের কথাও ভাবতে হবে মন্তব্য করে রাশেদা সুলতানা বলেন, যারা এরইমধ্যে নমিনেশন পেপার নিয়েছেন, নির্বাচন করতে চান; তাদের কথাও আমাদের ভাবতে হবে। শুধু যারা আসতে চায় তাদের কথা ভাবলে তো হবে না। তাই যারা আগ্রহী প্রার্থী তাদের জন্য আমাদের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। সে বিষয়ে কমিশন কাজ করবে।
রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হয়ে যাবে এ প্রত্যাশা করে রাশেদা সুলতানা বলেন, যখন বিভাজন তৈরি হয়েছে তখন রাজনৈতিক মাঠ অশান্ত আছে, সেটা আপনারাই (সাংবাদিক) দেখতে পাচ্ছেন। তবে রাজনৈতিক দলগুলো চাইলে পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক হওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সংকট সমাধানে উদ্যোগ নেয়ার সাংবিধানিকভাবে ইসির কোনো সুযোগ নাই।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনের অপর আস্থা রাখতে হবে। প্রশাসন যদি কমিশনের নির্দেশ না মানে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেনা বাহিনীর স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক সভা হওয়ায় আমাদের জন্য কাজ করা সহজ হচ্ছে।
প্রশাসন যদি কমিশনের নির্দেশ না মানে, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে এ কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সরকার সার্বিক সহযোগিতা না করলে নির্বাচন হবে না। তবে নিশ্চয় সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে প্রত্যাশা তার।
উল্লেখ, তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়নের আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।