নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি কালো মিছিল করছে কেন? তাদের কোন নেতা মারা গেছে? আন্দোলনের বারোটা বাজিয়ে এখন বিএনপি নেতারা নিজেদের অজান্তেই শোকের মিছিল করছে। আন্দোলনের পতাকা হলো লাল-সবুজ। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীকের প্রতি তাদের কোনো দরদ নেই। যে মিছিলে জনগণ নেই সেই মিছিল গণমিছিল হয় কী করে?
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপিকে এবার আওয়ামী লীগ দেখাবে গণমিছিল কাকে বলে। আওয়ামী লীগের মিছিল মানে জনগণের ঢল। আগামী ১ সেপ্টেম্বর লাখ লাখ তরুণদের সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। শোকের কালো পতাকা নয়, বিজয়ের পতাকা হাতে লাখো তরুণের মিছিল দেখাবে আওয়ামী লীগ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতাদের গলার জোর কমে গেছে, মিছিলের শক্তি নেই। তাদের আন্দোলনের মরা গাঙে ঢেউ আসে না। বিএনপির আন্দোলন গরুর হাটে ধ্বংস হয়েছে। সমাবেশের নামে পিকনিক পার্টি করে বিএনপি।
বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভাঙা হাটে কেউ আসে না, বাজার ভেঙে গেছে। বিএনপির বাজার ভাঙা হাটের মতো ভেঙে গেছে। কী গর্জন ১০ তারিখে! ডিসেম্বরে নাকি খালেদা জিয়া ক্ষমতায় বসে দেশ চালাবে, তারেক রহমান বীরের বেশে দেশে ফিরবে। কোথায় গেল লাফালাফি? এই লাফালাফি গোলাপবাগের গরুর হাটে গিয়ে শেষ।
এসময় সেতুমন্ত্রী দাবি করেন, যেখানে দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ শেখ হাসিনাকে চায়, সেখানে তাকে নামানোর (ক্ষমতাচ্যুত) দিবাস্বপ্ন দেখছে বিএনপি। মানুষ যাকে ভালবাসে তাকে বিএনপি ক্ষমতা থেকে বিদায় দেবে কী করে?
বিএনপি নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতির আতঙ্ক ছড়ায় মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশ মুক্তিযোদ্ধাদের দেশ, কোনো অপশক্তিদের নয়। বিএনপির মতো দুর্নীতিবাজদের হাতে বাংলাদেশের ক্ষমতা নিরাপদ বলে মনে করি না আমরা। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে আগামী নির্বাচনে বিজয় সুনিশ্চিত।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে হারানোর মতো কোনো রাজনৈতিক শক্তি বাংলাদেশে নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী জানান, আগামী নির্বাচনে দেশের মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দেবে এবং শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবে।
সভায় রোহিঙ্গা দেশের বোঝা হয়ে আছে বলে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, জাতিসংঘ আগে ১২ ডলার দিত এখন ৮ ডলার দেয়। কীভাবে চলবে? কেউ সাহায্য করে না, শুধু মুখে সুন্দর সুন্দর কথা বলে। রোহিঙ্গাদের জন্য মায়া কান্না করে। তারা তাদের দেশের অন্য দেশের মাইগ্রেট জায়গা দিতে পারে না। আমাদের দেশের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত, আজকে সেখানে জীবন বিপন্ন। কক্সবাজারে জীবন আজ বিপন্ন। আমাদের ট্যুরিজম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মুখে সুন্দর সুন্দর বাণী উচ্চারণ করে, আমাদের নেত্রীর প্রশংসা করে। কিন্তু বাস্তবে সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নিষেধাজ্ঞার আতঙ্ক ছড়ায়। ভিসা নীতি নিয়ে আতঙ্ক ছড়ায়। বিএনপি রাস্তা বন্ধ করেছে প্রবেশপথে অবস্থান করেছে এর জন্যই তো ভিসানীতির আওতায়, নিষেধাজ্ঞা আসা দরকার। বিএনপির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় না কেন? আজকে যেসব খুনিরা বড় বড় দেশে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়, আমাদের দেশে জাতির পিতার হত্যা আসামিদের ফিরিয়ে দিচ্ছে না, এটা কোন দেশের গণতন্ত্র? সে প্রশ্ন আমরা করতে চাই।
এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন ও কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম।