Dhaka মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপি কখনই খুনের রাজনীতি করে নাই : আব্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি কখনই খুনের রাজনীতি করে নাই। বরং শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে দেশ অনেক ভালো অবস্থানে গিয়েছিল। এদেশ তখন বিশ্বের কাছে ইমার্জিন টাইগার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। চোর-বাটপার ছিল না। আজকে সেই বাংলাদেশকে বলা হচ্ছে লুটেরাদের রাষ্ট্র।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, রমনা ও শাহজাহানপুর থানা বিএনপির উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু এবং ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন বিএনপি খুনের রাজনীতি শুরু করেছে। আরে যখন খুনের রাজনীতি শুরু হয় তখন তো বিএনপির জন্মই হয়নি।

তিনি বলেন, খুনের রাজনীতি দেখেছি ৭৪-৭৫ সালে। শাহজাহানপুরে আমার সামনে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনকে ধরে নিয়ে যায় এসপি মাহবুব, সার্জেন কুদ্দুস, সার্জেন্ট কিবরিয়া। এদের টিম লিডার ছিল এসপি মাহবুব। আবুল হোসেনকে আর পাওয়া যায়নি। সে ঘটনার সাক্ষী হিসেবে এখনো আমি বেঁচে আছি।

তিনি আরো বলেন, ৭২ থেকে ৭৫ সালে ত্রিশ হাজার যুবকের রক্তে রঞ্জিত আওয়ামী লীগের হাত।

তিনি বলেন, মাঝখানে কয়েকদিন নেতাকর্মীদের ওপর অন্যায় অবিচার জেল জুলুম বন্ধ ছিল। কি কারণে বন্ধ ছিল তা জানি না। এখন সব শুরু হয়েছে। জীবিত গ্রেফতার হচ্ছে, আর মৃত বেরুচ্ছে। আমাদের কর্মী আবুল বাসার, ইদ্রিস মন্ডলকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো। আর লম্বা লম্বা কথা বলেন আমরা খুনের রাজনীতি করি না। খুনের রাজনীতি দিয়ে শুরু করেছেন এই রাজনীতি শেষ করবেন। এ সরকারকে সরানোর জন্য, দেশে গণতন্ত্র কায়েমের জন্য যতটুকু যাওয়া প্রয়োজন বিএনপি নেতাকর্মীরা ততটুকুই যাবে।

আব্বাস বলেন, নতুন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিছুদিন যাবত সরকারি কর্মকর্তাদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নন, এরা আওয়ামী লীগের চাকর-বাকর। তারা ফরমায়েশী কথা বলছেন। ফরমায়েশি রায় দিচ্ছেন। বিএনপি নেতাকর্মীরা জেল-মৃত্যকে ভয় পায় না। সারাদেশে পোষাকি সন্ত্রাস চলছে। জনগণের টাকায় বেতন নিয়ে জনগণের ওপরেই অত্যাচারের স্টিমরোলার চালাচ্ছেন।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, গতকাল দেখলাম তারেক রহমানের নামে তথাকথিত বিশিষ্টজনেরা নানারকম কথা বলছেন। আসলে তাদের কোনো পরিচয় নেই। এরা আওয়ামী লীগার। কোনো ভদ্রলোক আওয়ামী লীগ করে না। যারা ভদ্র তারা এ দল করতে পারে না, চলে আসতে বাধ্য হয়।

সমাবেশে আব্দুস সালাম বলেন, এ সরকার পতন নিশ্চিত দেখে আন্দোলনের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। শুরু করছে জঙ্গি নাটক। আরও অনেক নাটক করবে। আমরা সব বিষয়ে সজাগ আছি। কোনো ফন্দিফিকির করে লাভ নেই। ক্ষমতা ছাড়তেই হবে এবং অন্যায়ের বিচার এই বাংলার মাটিতেই হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।

সমাবেশ চলাকালে জেলখানায় আটক ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আবুল বাসারের লাশ জানাযার জন্য নয়াপল্টনে আনা হয়।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর মোড় ঘুরে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

এছাড়াও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে মহানগর বিএনপি নেতারা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিএনপি কখনই খুনের রাজনীতি করে নাই : আব্বাস

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৮:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি কখনই খুনের রাজনীতি করে নাই। বরং শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে দেশ অনেক ভালো অবস্থানে গিয়েছিল। এদেশ তখন বিশ্বের কাছে ইমার্জিন টাইগার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। চোর-বাটপার ছিল না। আজকে সেই বাংলাদেশকে বলা হচ্ছে লুটেরাদের রাষ্ট্র।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, রমনা ও শাহজাহানপুর থানা বিএনপির উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু এবং ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন বিএনপি খুনের রাজনীতি শুরু করেছে। আরে যখন খুনের রাজনীতি শুরু হয় তখন তো বিএনপির জন্মই হয়নি।

তিনি বলেন, খুনের রাজনীতি দেখেছি ৭৪-৭৫ সালে। শাহজাহানপুরে আমার সামনে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনকে ধরে নিয়ে যায় এসপি মাহবুব, সার্জেন কুদ্দুস, সার্জেন্ট কিবরিয়া। এদের টিম লিডার ছিল এসপি মাহবুব। আবুল হোসেনকে আর পাওয়া যায়নি। সে ঘটনার সাক্ষী হিসেবে এখনো আমি বেঁচে আছি।

তিনি আরো বলেন, ৭২ থেকে ৭৫ সালে ত্রিশ হাজার যুবকের রক্তে রঞ্জিত আওয়ামী লীগের হাত।

তিনি বলেন, মাঝখানে কয়েকদিন নেতাকর্মীদের ওপর অন্যায় অবিচার জেল জুলুম বন্ধ ছিল। কি কারণে বন্ধ ছিল তা জানি না। এখন সব শুরু হয়েছে। জীবিত গ্রেফতার হচ্ছে, আর মৃত বেরুচ্ছে। আমাদের কর্মী আবুল বাসার, ইদ্রিস মন্ডলকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো। আর লম্বা লম্বা কথা বলেন আমরা খুনের রাজনীতি করি না। খুনের রাজনীতি দিয়ে শুরু করেছেন এই রাজনীতি শেষ করবেন। এ সরকারকে সরানোর জন্য, দেশে গণতন্ত্র কায়েমের জন্য যতটুকু যাওয়া প্রয়োজন বিএনপি নেতাকর্মীরা ততটুকুই যাবে।

আব্বাস বলেন, নতুন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিছুদিন যাবত সরকারি কর্মকর্তাদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নন, এরা আওয়ামী লীগের চাকর-বাকর। তারা ফরমায়েশী কথা বলছেন। ফরমায়েশি রায় দিচ্ছেন। বিএনপি নেতাকর্মীরা জেল-মৃত্যকে ভয় পায় না। সারাদেশে পোষাকি সন্ত্রাস চলছে। জনগণের টাকায় বেতন নিয়ে জনগণের ওপরেই অত্যাচারের স্টিমরোলার চালাচ্ছেন।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, গতকাল দেখলাম তারেক রহমানের নামে তথাকথিত বিশিষ্টজনেরা নানারকম কথা বলছেন। আসলে তাদের কোনো পরিচয় নেই। এরা আওয়ামী লীগার। কোনো ভদ্রলোক আওয়ামী লীগ করে না। যারা ভদ্র তারা এ দল করতে পারে না, চলে আসতে বাধ্য হয়।

সমাবেশে আব্দুস সালাম বলেন, এ সরকার পতন নিশ্চিত দেখে আন্দোলনের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। শুরু করছে জঙ্গি নাটক। আরও অনেক নাটক করবে। আমরা সব বিষয়ে সজাগ আছি। কোনো ফন্দিফিকির করে লাভ নেই। ক্ষমতা ছাড়তেই হবে এবং অন্যায়ের বিচার এই বাংলার মাটিতেই হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।

সমাবেশ চলাকালে জেলখানায় আটক ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আবুল বাসারের লাশ জানাযার জন্য নয়াপল্টনে আনা হয়।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর মোড় ঘুরে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

এছাড়াও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে মহানগর বিএনপি নেতারা।