Dhaka মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপি-এনসিপি জোট হবে কিনা বলার সময় আসেনি : সালাহউদ্দিন আহমদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচনে বিএনপি ও এনসিপি জোট গড়বে কিনা সেটি বলার সময় এখনো আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে বৈঠক করেন সালাহউদ্দিন আহমদসহ চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। এরপর গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচন করলেও প্রতিটি দল নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করা উচিত এমন বিধানে আরপিওর আগের আইন বহাল রাখার অনুরোধ জানাতে আইন উপদেষ্টার কাছে এসেছি। আইন উপদেষ্টা জানিয়েছেন যে, বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। আমরা সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করব।

তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশন আজকে তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়ায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে, এই প্রতিবেদনে কিছু অনৈক্য তৈরি হয়েছে, যার সঙ্গে একমত নয় বিএনপি।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আজকে তাদের সুপারিশ সরকারের কাছে পেশ করেছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে ধন্যবাদ না দিয়ে উপায় নেই। কেন ধন্যবাদ দিচ্ছি? অবশেষে তারা তাদের প্রক্রিয়া বা কার্যক্রম সমাপ্ত করতে পেরেছেন।

বিএনপির এ নেতা বলেন, দ্বিতীয়বার তাদের ধন্যবাদ দিচ্ছি—তারা জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বদলে ‘জাতীয় অনৈক্য’ প্রতিষ্ঠার একটি প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছেন। আমার মনে হয়, যা কিছু প্রস্তাব ওখানে দেওয়া হয়েছে, আপনারা যদি সেটা দেখেন, তাহলে দেখবেন আমরা যে জুলাই জাতীয় সনদ সই করেছি, সেই সনদবহির্ভূত অনেক আদেশ এতে সংযুক্ত করা হয়েছে।

সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, যারা জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করবে, রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত, তারা হয় নিজেদের প্রতীক বা জোটের অন্য প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার একটা স্বাধীনতা ছিল। সেই আইনটার খসড়া যখন আমরা দেখেছি—নির্বাচন কমিশনও আমাদের পাঠিয়েছিল যে এ বিষয়ে মতামত আছে কিনা। এখানে অনেকগুলো সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি সংশোধনীর সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করেছি। যেমন, না ভোট, প্রার্থীদের জামানত বৃদ্ধি, নির্বাচনে যদি কোনো অনিয়ম হয়, সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার বৃদ্ধি, ইচ্ছা করলে যেকোনো নির্বাচন তারা বাতিল করতে পারবে।

তিনি বলেন, আরও বেশ কয়েকটি বিধান সেখানে যুক্ত ছিল। আমরা সবগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করেছি। শুধু এ বিধানটির সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করিনি। যখন আইনটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়, তখনও অনানুষ্ঠানিকভাবে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আমি আলোচনা করেছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন, এটি সরকারের নজরে আনবেন। বিষয়টি আলোচনা করে যাতে একটা বিহিত হয়, সেটা বিবেচনা করবেন বা সরকার বিবেচনা করতে পারে।

তারপরে এ বিষয়ে তার সঙ্গে আবার কথা বলেছি। এ বিষয়ে আমাদের যে কনসার্ন (উদ্বেগ), আগে যে বিষয়টি ছিল, সেটি যাতে বহাল থাকে সে জন্য আমরা আবেদন করেছি। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে কাগজটি তাকে দিয়েছি। কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশনকেও একই চিঠি দিয়েছি।

সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা আশা করছি, বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে এ বিধানটি আগের মতো বহাল থাকবে। কারণ, আমরা মনে করি অনেক দলের আকার ছোট হলেও সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নেতৃত্ব আছেন। তারা নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে আসতে পারলে জাতীয় সংসদ সমৃদ্ধ হবে। বহু দলের, বহু আদর্শের প্রতিনিধিত্ব থাকলে জাতীয় সংসদটা সমৃদ্ধ হয়, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তারা ভূমিকা রাখতে পারবেন।

আমরা মনে করি, যেসব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচন করতে চায়, তারা হয় নিজেদের প্রতীকে কিংবা জোটবদ্ধ অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করার যে স্বাধীনতা আগে যে বিধান ছিল, সেটা বহাল রাখা হোক।

আইন উপদেষ্টা কী বলেছেন জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, তিনি সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন, প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তারপরে কী করা যায়, সেটা বিবেচনা করে দেখবেন।

তিনি বলেন, আমি নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের সমালোচনা করতে চাই। কারণ তারা এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনেও বিষয়টি আলোচিত হয়নি। এ বিষয়ে কোনো ঐকমত্যও প্রতিষ্ঠা হয়নি। এ বিষয়ে হঠাৎ করে নির্বাচন সংস্কার কমিশন একটি বিষয় আরোপ করবে, সেটা সঠিক না।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

খুলনায় জোড়া খুনের মামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

বিএনপি-এনসিপি জোট হবে কিনা বলার সময় আসেনি : সালাহউদ্দিন আহমদ

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৭:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নির্বাচনে বিএনপি ও এনসিপি জোট গড়বে কিনা সেটি বলার সময় এখনো আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে বৈঠক করেন সালাহউদ্দিন আহমদসহ চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। এরপর গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচন করলেও প্রতিটি দল নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করা উচিত এমন বিধানে আরপিওর আগের আইন বহাল রাখার অনুরোধ জানাতে আইন উপদেষ্টার কাছে এসেছি। আইন উপদেষ্টা জানিয়েছেন যে, বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। আমরা সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করব।

তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশন আজকে তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়ায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে, এই প্রতিবেদনে কিছু অনৈক্য তৈরি হয়েছে, যার সঙ্গে একমত নয় বিএনপি।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আজকে তাদের সুপারিশ সরকারের কাছে পেশ করেছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে ধন্যবাদ না দিয়ে উপায় নেই। কেন ধন্যবাদ দিচ্ছি? অবশেষে তারা তাদের প্রক্রিয়া বা কার্যক্রম সমাপ্ত করতে পেরেছেন।

বিএনপির এ নেতা বলেন, দ্বিতীয়বার তাদের ধন্যবাদ দিচ্ছি—তারা জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বদলে ‘জাতীয় অনৈক্য’ প্রতিষ্ঠার একটি প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছেন। আমার মনে হয়, যা কিছু প্রস্তাব ওখানে দেওয়া হয়েছে, আপনারা যদি সেটা দেখেন, তাহলে দেখবেন আমরা যে জুলাই জাতীয় সনদ সই করেছি, সেই সনদবহির্ভূত অনেক আদেশ এতে সংযুক্ত করা হয়েছে।

সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, যারা জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করবে, রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত, তারা হয় নিজেদের প্রতীক বা জোটের অন্য প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার একটা স্বাধীনতা ছিল। সেই আইনটার খসড়া যখন আমরা দেখেছি—নির্বাচন কমিশনও আমাদের পাঠিয়েছিল যে এ বিষয়ে মতামত আছে কিনা। এখানে অনেকগুলো সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি সংশোধনীর সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করেছি। যেমন, না ভোট, প্রার্থীদের জামানত বৃদ্ধি, নির্বাচনে যদি কোনো অনিয়ম হয়, সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার বৃদ্ধি, ইচ্ছা করলে যেকোনো নির্বাচন তারা বাতিল করতে পারবে।

তিনি বলেন, আরও বেশ কয়েকটি বিধান সেখানে যুক্ত ছিল। আমরা সবগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করেছি। শুধু এ বিধানটির সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করিনি। যখন আইনটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়, তখনও অনানুষ্ঠানিকভাবে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আমি আলোচনা করেছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন, এটি সরকারের নজরে আনবেন। বিষয়টি আলোচনা করে যাতে একটা বিহিত হয়, সেটা বিবেচনা করবেন বা সরকার বিবেচনা করতে পারে।

তারপরে এ বিষয়ে তার সঙ্গে আবার কথা বলেছি। এ বিষয়ে আমাদের যে কনসার্ন (উদ্বেগ), আগে যে বিষয়টি ছিল, সেটি যাতে বহাল থাকে সে জন্য আমরা আবেদন করেছি। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে কাগজটি তাকে দিয়েছি। কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশনকেও একই চিঠি দিয়েছি।

সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা আশা করছি, বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে এ বিধানটি আগের মতো বহাল থাকবে। কারণ, আমরা মনে করি অনেক দলের আকার ছোট হলেও সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নেতৃত্ব আছেন। তারা নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে আসতে পারলে জাতীয় সংসদ সমৃদ্ধ হবে। বহু দলের, বহু আদর্শের প্রতিনিধিত্ব থাকলে জাতীয় সংসদটা সমৃদ্ধ হয়, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তারা ভূমিকা রাখতে পারবেন।

আমরা মনে করি, যেসব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচন করতে চায়, তারা হয় নিজেদের প্রতীকে কিংবা জোটবদ্ধ অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করার যে স্বাধীনতা আগে যে বিধান ছিল, সেটা বহাল রাখা হোক।

আইন উপদেষ্টা কী বলেছেন জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, তিনি সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন, প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তারপরে কী করা যায়, সেটা বিবেচনা করে দেখবেন।

তিনি বলেন, আমি নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের সমালোচনা করতে চাই। কারণ তারা এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনেও বিষয়টি আলোচিত হয়নি। এ বিষয়ে কোনো ঐকমত্যও প্রতিষ্ঠা হয়নি। এ বিষয়ে হঠাৎ করে নির্বাচন সংস্কার কমিশন একটি বিষয় আরোপ করবে, সেটা সঠিক না।