নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি আসুক বা না আসুক, সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১৩জুন) বিকেলে হাজারীবাগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজিত শান্তি সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কদের বলেন, বিএনপি বিদেশি শক্তিকে দিয়ে দুই বছরের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার বসানোর পরিকল্পনা করছে। বিএনপি এখনো মনে মনে মন কলা খাচ্ছে। মনে করছে ১ তারিখের মতো, অক্টোবর মাস। সেই তত্ত্বাবধায়ক। নিজের দলের ফখরুদ্দীন, মঈনুদ্দিনকে বসাবে। আমরা বেঁচে থাকতে সেটা আর হবে না।
তিনি আরও বলেন, এখন আবার বিদেশি শক্তিকে দিকে ওয়ান ইলেভেনের মতো দুই বছরের জন্য নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক একটা বসাবে। কীভাবে এটা মনে করলেন? সব খবর আমরা রাখি। ওয়ান ইলেভেনের দুঃস্বপ্ন দেখে আর লাভ নেই।
আওয়ামী লীগের সময় কবে শেষ হবে তার দিন তারিখ বিএনপির কাছের জানতে চেয়ে তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা বলছেন, শেখ হাসিনার সময় শেষ, আওয়ামী লীগের সময় শেষ। সময়টা কবে শেষ হলো দিন তারিখ বলুন। ১৪ বছর ধরে দেখছি, সময় তো শেষ হয়নি। এখন আবার বলছেন সময় শেষ। দেখতে দেখতে ১৪ বছর। মানুষ বেঁচে থাকে কত বছর? দিন তারিখ ঠিক করে প্রেস কনফারেন্স করেন। আমরা যাতে এক গোছা গোলাপ, রজনীগন্ধা নিয়ে হাজির হতে পারি।
কাদের বলেন, বিএনপির নেতারা বলছেন, শেখ হাসিনার সময় শেষ। আমি একটু জানতে চাই, ফখরুল সাহেব, আমির খসরু সাবেক, কবে শেষ? দিন তারিখ বলুন। ১৪ বছর ধরে তো শুনছি। বলে রোজার ঈদের পর, কোরবানির ঈদের পর, তারপর বলে বর্ষার পর, পরীক্ষার পর। এই বছর না ওই বছর? আন্দোলন হবে কোন বছর? দেখতে দেখতে ১৪ বছর। মানুষ বাঁচে কয় বছর?
তিনি বলেন, ফখরুল সাবেক, সময় যখন শেষ প্রেস কনফারেন্স করার সময়টা জানিয়ে দেবেন। আমরা এক গোছা গোলাপ, রজনীগন্ধার নিয়ে হাজির হব। সময়টা বলেন। যেন আমরা সময় মতো আপনাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে পারি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কত কথা এরা বলে! জনগণের কাছে একটা বিষয় আমরা জানতে চাই, আপনারা কি মনে করেন শেখ হাসিনা দেশটা ভালো চালিয়েছেন? আপনারা কি মনে করেন, এত দিনে তাপমাত্রা, আল্লাহর কি রহমত, তাপমাত্রা কমে গেছে। লোডশেডিং কমে যায়নি? ফখরুল সাহেব আপনাদের দোয়া, শকুনের দোয়া কাজে লাগেনি। তাপমাত্রা আরও কমবে। লোডশেডিং আরও কমে যাবে। কয়টা দিন অপেক্ষা করেন।
বাজেট প্রসঙ্গে বলেন, বাজেটে একটু ঘাটতি ছিল। জাপান সহযোগিতা করেছে। সোয়া ৪০০ মিলিয়ন।
কাদের বলেন, শেখ হাসিনা যখন বিদেশে সম্মানিত হন, বাংলাদেশের মানুষ খুশি হয়। কষ্ট পায় বিএনপি। তাদের কলিজা শুকিয়ে যায়। শেখ হাসিনা সম্মান আনছে দেশের জন্য, এটা যখন দেখে তখন তাদের মুখের দিকে তাকানো যায় না।
রবীন্দ্রনাথের কবিতার চরণ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি এবং তাদের দোসররা মনে করে তাদের মনের কথা সেদিন তারা বলবে, নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়েছে, সুষ্ঠু হয়েছে, যেদিন আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলে, তারা কোনোদিন পরাজয় মেনে নেবে না। কাঁদন বিবি মরিয়া প্রমাণ করিলো তিনি মরেন নাই।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলে, তারা কোনোদিন পরাজয় মেনে নেবে না। ৫২ দল, ৫৩ দল এগুলো ভুয়া। বেগম জিয়া নাকি দেশ চালাবেন ডিসেম্বর মাসে!
কাদের বলেন, বিএনপি একটা দল! তারা আইন মানে না, বিচার মানে না। শালিস মানে না। তারা আইন অমান্যকারী।
নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ প্রস্তুত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা প্রস্তুত আছি। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। যারা বাধা দেয়, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি তাদের বাধা দেয় কিনা, আমরা তা দেখতে চাই। গাজীপুর, খুলনা, বরিশালের মতো সামনের সকল নির্বাচন সুন্দর হবে। সংবিধানের নিয়ম কারও জন্য অপেক্ষা করে না।
শান্তি সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস, ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল আলম মহিউদ্দিন প্রমুখ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।