Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপি আসলে আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ইউনূসের আশ্রয় নিয়েছে : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি বলে বেড়াচ্ছে তাদের আন্দোলন ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রসঙ্গ সামনে আনা হচ্ছে। কিন্তু দেশের জনগণ মনে করে বিএনপি আসলে আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ইউনূসের আশ্রয় নিয়েছে। এভাবে আশ্রয় নিয়ে যারা খুন, মানুষ পোড়ানো ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করে, যাদের জন্মটাই খুন ও রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে, তাদের হাতে দেশ ও জাতির কখনো উন্নয়ন-অগ্রগতি হয় না।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বেদনাতুর ১৯৭৫ আগস্টের শহীদদের আলেখ্য’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। বইটি লিখেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জেবউননেছা।

হাছান মাহমুদ বলেন, আমি ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান রেখে জানতে চাই নোবেল পেলে কেউ কি আইনের ঊর্ধ্বে চলে যান? দেশের রাষ্ট্রপতি হলে কি কেউ আইনের ঊর্ধ্বে? হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তাকেও কয়েক বছর জেলখানায় কাটাতে হয়েছে। এ দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন খালেদা জিয়া। তিনিও শাস্তি ভোগ করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকেও কিছুদিনের জন্য জেলখানায় যেতে হয়েছে। উনার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি তা দেননি বলে অভিযোগ উঠছে। যদি উনি দিয়ে থাকেন, তাহলে আদালতে প্রমাণ করবেন। এত ইস্যু তৈরির তো কোনো প্রয়োজন নেই।

বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, তারা এখন বড় বড় কথা বলে। রাত-বিরাতে বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। কেউ তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার সমর্থন করেনি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আসছেন, আবার রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীও ছুটে আসছেন আগামীকাল। এতেই প্রমাণিত হয়, বিশ্ব সম্প্রদায় আমাদের সঙ্গে আছে।

১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল জাতিরাষ্ট্রকে হত্যা করা। এ হত্যাকাণ্ড মানব ইতিহাসের জঘন্য হত্যাকাণ্ড। কারবালার প্রান্তরে নারী শিশুদের রেহাই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু পরিবারের নারীসহ ছোট্ট শিশু রাসেল, সবাইকেই হত্যা করা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। এমনকি তাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন আইয়ুব খান। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তা প্রত্যাখ্যান করেন। তাকে বলা হয়েছিল, ৬ দফার দুটি দফা বাদ দিতে। তার বিপরীতে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ৭০‘র নির্বাচনের আগে ৬ দফা ছিল আওয়ামী লীগের। এখন তা জনগণের দফা। বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্রব্যবস্থায় বাঙালিদের মুক্তি নেই। তাই তিনি ৬ দফা প্রণয়ন করেছিলেন। তিনি যখন মনে করলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাক দেওয়া দরকার, তখনই স্বাধীনতার ডাক দিলেন।

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে প্রধান দুই কুশীলব খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমান উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতা দখল করার পর তাকে (জিয়াউর রহমান) সেনাপতি বানানো। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য, যারা খুনের ওপর দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলেন, তারা এখন রাজনৈতিক দল গঠন করেন এবং ভোটও পান। রাত-বিরাতে বিদেশিদের কাছে ধরনা দেন। অথচ কেউ তাদের তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা নেননি।

ব্যাতিক্রমধর্মী ও গবেষণালব্ধ গ্রন্থ রচনা করার জন্য অধ্যাপক জেবউননেছাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের ওপর অনেক বই রচিত হয়েছে। কিন্তু অনেক বইয়ের মান সঠিক থাকে না। সেখানে জেবউনেছার বইটি ব্যতিক্রম। কারণ ১৫ আগস্টে নিহতদের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে জেনে দীর্ঘদিন ধরে খোঁজ-খবর নিয়ে বইয়ের মধ্যে নিয়ে আসার কাজটি সম্ভবত আগে কেউ ভালোভাবে করেনি।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, শিল্পী হাশেম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজের সুফল পাচ্ছে না সাত গ্রামের মানুষ

বিএনপি আসলে আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ইউনূসের আশ্রয় নিয়েছে : তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৬:৩৭:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি বলে বেড়াচ্ছে তাদের আন্দোলন ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রসঙ্গ সামনে আনা হচ্ছে। কিন্তু দেশের জনগণ মনে করে বিএনপি আসলে আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ইউনূসের আশ্রয় নিয়েছে। এভাবে আশ্রয় নিয়ে যারা খুন, মানুষ পোড়ানো ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করে, যাদের জন্মটাই খুন ও রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে, তাদের হাতে দেশ ও জাতির কখনো উন্নয়ন-অগ্রগতি হয় না।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বেদনাতুর ১৯৭৫ আগস্টের শহীদদের আলেখ্য’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। বইটি লিখেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জেবউননেছা।

হাছান মাহমুদ বলেন, আমি ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান রেখে জানতে চাই নোবেল পেলে কেউ কি আইনের ঊর্ধ্বে চলে যান? দেশের রাষ্ট্রপতি হলে কি কেউ আইনের ঊর্ধ্বে? হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তাকেও কয়েক বছর জেলখানায় কাটাতে হয়েছে। এ দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন খালেদা জিয়া। তিনিও শাস্তি ভোগ করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকেও কিছুদিনের জন্য জেলখানায় যেতে হয়েছে। উনার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি তা দেননি বলে অভিযোগ উঠছে। যদি উনি দিয়ে থাকেন, তাহলে আদালতে প্রমাণ করবেন। এত ইস্যু তৈরির তো কোনো প্রয়োজন নেই।

বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, তারা এখন বড় বড় কথা বলে। রাত-বিরাতে বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। কেউ তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার সমর্থন করেনি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আসছেন, আবার রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীও ছুটে আসছেন আগামীকাল। এতেই প্রমাণিত হয়, বিশ্ব সম্প্রদায় আমাদের সঙ্গে আছে।

১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল জাতিরাষ্ট্রকে হত্যা করা। এ হত্যাকাণ্ড মানব ইতিহাসের জঘন্য হত্যাকাণ্ড। কারবালার প্রান্তরে নারী শিশুদের রেহাই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু পরিবারের নারীসহ ছোট্ট শিশু রাসেল, সবাইকেই হত্যা করা হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। এমনকি তাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন আইয়ুব খান। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তা প্রত্যাখ্যান করেন। তাকে বলা হয়েছিল, ৬ দফার দুটি দফা বাদ দিতে। তার বিপরীতে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ৭০‘র নির্বাচনের আগে ৬ দফা ছিল আওয়ামী লীগের। এখন তা জনগণের দফা। বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্রব্যবস্থায় বাঙালিদের মুক্তি নেই। তাই তিনি ৬ দফা প্রণয়ন করেছিলেন। তিনি যখন মনে করলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাক দেওয়া দরকার, তখনই স্বাধীনতার ডাক দিলেন।

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে প্রধান দুই কুশীলব খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমান উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতা দখল করার পর তাকে (জিয়াউর রহমান) সেনাপতি বানানো। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য, যারা খুনের ওপর দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলেন, তারা এখন রাজনৈতিক দল গঠন করেন এবং ভোটও পান। রাত-বিরাতে বিদেশিদের কাছে ধরনা দেন। অথচ কেউ তাদের তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা নেননি।

ব্যাতিক্রমধর্মী ও গবেষণালব্ধ গ্রন্থ রচনা করার জন্য অধ্যাপক জেবউননেছাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের ওপর অনেক বই রচিত হয়েছে। কিন্তু অনেক বইয়ের মান সঠিক থাকে না। সেখানে জেবউনেছার বইটি ব্যতিক্রম। কারণ ১৫ আগস্টে নিহতদের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে জেনে দীর্ঘদিন ধরে খোঁজ-খবর নিয়ে বইয়ের মধ্যে নিয়ে আসার কাজটি সম্ভবত আগে কেউ ভালোভাবে করেনি।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, শিল্পী হাশেম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।