নিজস্ব প্রতিবেদক :
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির তোষণ না করলে আওয়ামী লীগের ৭৫ বছরের দীপ্ত পথচলায় দেশ আরও এগিয়ে যেতো।
রোববার (২৩ জুন) দুপুরে রাজধানীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল এবং সব সেক্টর কমান্ডাররা ও জিয়াউর রহমান ৪০০ টাকা বেতনের কর্মচারী ছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে মন্ত্রী হাছান বলেন, বাংলাদেশ আজ নিম্ন আয় থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়, ধান ও শাক-সবজি উৎপাদনে তৃতীয় স্থানসহ ১৪টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে দেশ আজ বিশ্বের শীর্ষ ১০ দেশের অন্যতম।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, ‘স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরেও আওয়ামী লীগকে এখনও দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির মোকাবিলা করতে হয়। বিএনপি যদি এ সব অপশক্তির তোষণ না করতো, তাহলে দেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যেতো।’
ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানে সরকার গঠন করে। পাকিস্তানের কোনো সংবিধান ছিলো না। আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান রচিত হয়। এবং ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা হলেও ১৯৫৬ সালেই রাষ্ট্রভাষা হিসেবে কার্যকর হয়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারিভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনও সেসময়েই চালু হয়।
প্রধানমন্ত্রীর সদ্যসমাপ্ত ভারত সফর নিয়ে প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত সফর অত্যন্ত চমৎকার, ফলপ্রসূ ও আন্তরিকতাপূর্ণ হয়েছে এবং শীঘ্রই প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে হজপালনে সৌদি আরব সফরে সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন উল্লেখ করেন ড. হাছান মাহমুদ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মতিউর রহমানকে। তাকে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক পিএলসির পরিচালক পদ থেকে অপসারণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পত্রপত্রিকায় যেভাবে খবরটি এসেছে, সেটি সত্যি অনভিপ্রেত এবং এটি যদি সত্য হয় তাহলে দুঃখজনক। আমি ইতোমধ্যে এনবিআরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি, তাকে এনবিআরের সদস্যপদ থেকে ইতোমধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গেও কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, তাকে (মতিউর) সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকে সরানোর জন্য ইতোমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, তদন্ত হবে। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উত্থাপন হয়েছে, সেগুলো সত্য কিনা তা তদন্তের পর বেরিয়ে আসবে। তারপর নিশ্চই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ দুর্নীতির মাধ্যমে এভাবে সম্পদ অর্জন করা কখনও সমীচীন নয়। আমাদের সরকার সবসময় দুর্নীতি দমনে জিরো টলারেন্স এবং সে কারণে এ সরকারের আমলে নানা দুর্নীতির ঘটনাগুলো উঠে আসছে।
বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে টানাপড়েন চলছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের দিল্লি সফরে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীন বিষয়ে কোনো আলোচনা না হওয়ার কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত সফরটি অত্যন্ত চমৎকার, ফলপ্রসূ এবং আন্তরিকতাপূর্ণ ছিল। তিস্তা নদী নিয়ে বা আমাদের যৌথ নদী ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের ৫৪টি যৌথ নদী রয়েছে, সেই যৌথ নদীর যদি একটা অভিন্ন ব্যবস্থাপনা করতে পারি সেটি দুদেশকে উপকৃত করবে। সে নিয়ে আমরা আলোচনা উপস্থাপন করেছি।
হাছান মাহমুদ বলেন, তিস্তা নদী ও চীনের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা ভারতের সহায়তা চেয়েছি। তখন চীন প্রসঙ্গ এসেছে। যেখানে জাতিগত যে সংঘাত চলছে সেই প্রসঙ্গে চীনের কথা এসেছে।
আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অগ্রযাত্রার চিত্র উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ নিম্ন আয় থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়, ধান ও শাক-সবজি উৎপাদনে তৃতীয়। ১৪টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০ দেশের অন্যতম।’
তিনি ‘আক্ষেপ’ করে বলেন, ‘স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরও আওয়ামী লীগকে এখনও দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির মোকাবিলা করতে হয়। বিএনপি যদি এসব অপশক্তির তোষণ না করত, তাহলে দেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যেত।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানে সরকার গঠন করে। পাকিস্তানের কোনো সংবিধান ছিল না। আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান রচিত হয়। ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা হলেও ১৯৫৬ সালেই রাষ্ট্রভাষা হিসেবে কার্যকর হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনও সেসময়েই চালু হয়।’