নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির মধ্যে ভয়ঙ্কর সঙ্কট চলছে। এটিই হলো বাস্তবতা। দেশে কোনো রাজনৈতিক সঙ্কট নেই, এমন দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তথ্য অধিদপ্তরের গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন দাবি করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা শাহেনুর মিয়া।
দেশে ভয়াবহ রাজনৈতিক সঙ্কট চলছে- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল যদি কথাটি এভাবে বলতেন, তাহলে ভালো হতো— ‘বিএনপির মধ্যে ভয়ঙ্কর সঙ্কট চলছে। ’ এটিই হলো বাস্তবতা। দেশে কোনো রাজনৈতিক সংকট নেই।
বিএনপির সঙ্কটের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, তাদের চেয়ারপারসন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পলাতক। তারপর তাদের মধ্যে অনেকে আছেন, যারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্ব মানতে নারাজ। আবার অনেকেই আছেন, যারা মির্জা ফখরুলের নেতৃত্ব মানতে নারাজ। তো তাদের মধ্যে ভয়াবহ সঙ্কট আছে। তিনি (ফখরুল) সেই কথা বললেই সঠিক হতো।
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন থেকে ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তারা এ আন্দোলন করেছে। ২০১৪ সালে তাদের আন্দোলনের নমুনা আমরা দেখেছি। যখন বিএনপি আন্দোলনের কথা বলে, তখন পেট্রলবোমার কথা মনে পড়ে, তখন মানুষ পুড়িয়ে হত্যার মহোৎসবের কথা মনে পড়ে। তাদের সেই কাজ আবার বাংলাদেশের মানুষ করতে দেবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারও কখনো ফিরে আসবে না।
বিএনপি সরকারের আমলের সব অর্জন ধ্বংস করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ– বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, হ্যাঁ, বিএনপির অর্জন আমরা ধ্বংস করেছি, তা সঠিক। তারা পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। আমরা সেখান থেকে সরে এসেছি। বিএনপির অর্জন হলো ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ৫০০ জায়গায় একযোগে বোমা হামলা, তাদের সৃষ্টি শায়খ আবদুর রহমান। সেগুলো এখন এদেশে নেই। সেই বিচারে বিএনপির সেসব অর্জন ধ্বংস হয়েছে।
বিএনপির এসব অর্জন ধ্বংস করতেই আমরা কাজ করেছি বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ ঈর্ষণীয় সফলতা অর্জন করেছে, যা আজ সমগ্র বিশ্ব স্বীকার করে নিয়েছে। পাকিস্তানের পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বক্তৃতা করা হয়। পাকিস্তানের টেলিভিশনে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়ন নিয়ে আলোচনার ঝড় বয়। তাদের নিজেদের সমালোচনা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসার ঝড় ওঠে।
বন্ধুপ্রতিম দেশ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল তার বাসায় গিয়েছে। বিএনপির মতো পদলেহন করতে গিয়ে রাত-বিরাতে বসে থাকেনি। এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মধ্যাহ্নভোজের। সেখানে আমাদের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল গেছেন। আমরা বিএনপির মতো রাত-বিরাতে গিয়ে ধরণা দিই না। তাদের আমন্ত্রণে আমরা গেছি। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র। গত ৫১ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে তাদের অবদান আছে। নিরাপত্তা থেকে জঙ্গি দমনে তারা আমাদের সহযোগিতা করছে। বহুমাত্রিক সহযোগিতা তাদের সঙ্গে আছে। সেই দেশের রাষ্ট্রদূত যখন আমন্ত্রণ জানায়, সেখানে তো যেতেই হয়। সে জন্যই আমাদের প্রতিনিধি দল সেখানে গেছে। বিএনপির মতো রাত-বিরাতে গিয়ে আমাদের কেউ পদলেহন করে না।
এ সময়ে মার্কিন মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রতিবেদন একপেশে। পক্ষপাতদুষ্ট সূত্র থেকে সেগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। যে কারণে এই প্রতিবেদন পক্ষপাতদুষ্ট।