নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির কর্মসূচি নিঃসন্দেহে রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করেছে। রমাজানে তাদের কর্মসূচি দুঃখজনক।
রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (বিএসপি) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
রমজান মাসেও বিএনপি আন্দোলন, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া পিকেটিং শুরু করলো- এ বিষয়টি কীভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা কখনো শুনি নাই দেখি নাই পবিত্র রমজানের মধ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ করে। এখন রমজানেও বিএনপি মানুষকে নিস্তার দিচ্ছে না। বিএনপির কর্মসূচি নিসন্দেহে রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করেছে।
তিনি বলেন, তারা ইসলামের কথা বলে অথচ রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করে তারা কর্মসূচি পালন করছে। এটি অনভিপ্রেত, দুঃখজনক, তাদের অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ। এটিই হচ্ছে তাদের সাম্প্রতিক কর্মসূচি।
তথ্যমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, তাদের রাজনীতিই হচ্ছে সহিংসতার রাজনীতি। তারা ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করেছে, জীবন্ত মানুষে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। যারা রাজনীতি জানে না, বুঝে না, করে না তাদেরকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।
বিএনপির এই কর্মকাণ্ডে সরকার শঙ্কিত কি না জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির এই খোঁচানিতে সরকারের কিছু আসে যায় না। এরকম খোঁচানি আমরা ১৪ বছর ধরে দেখছি। ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে তাদের সহিংস রাজনীতি মোকাবিলা করেছি। সরকার জানে কখন কী করতে হবে, আওয়ামী লীগ জানে বোঝে কখন কী করতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেছেন, পল্লবীর ইফতার পার্টিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে আওয়ামী লীগ। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পল্লবীতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, তাদের ইফতার পার্টিতে কি আওয়ামী লীগ গিয়েছিল। ইফতার পার্টির ভিডিও ফুটেজ রয়েছে, কে কোন দলের কার কী পোস্ট, সেটা সরকারও জানে, তারাও জানে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমে দেখতে পাই, কোনো একটি নেতিবাচক সংবাদ হলে সেটিকে যেভাবে ফলাও করে প্রচার করা হয়, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির প্রশংসা কিংবা বিভিন্ন সূচকে যখন আমরা এগিয়ে যাই, সেটি সেভাবে প্রচার করা হয় না। যেটি সমীচীন না।
কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, অনেক সময় খারাপ সংবাদকে গুরুত্ব দিয়ে ছাপানো হয়। ভালো সংবাদকে পরিবেশন করা হয় না। ২৬ মার্চ আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস। সেই দিন মহান জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনে একটি শিশুর হাতে দশ টাকা দিয়ে যেই ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তাকে দিয়ে যে বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, সে সেই বক্তব্য দেয়নি।
হাছান মাহমুদ বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ে সব টেলিভিশনে প্রতিবেদন হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমগুলোতে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়া নিয়ে রিপোর্ট হচ্ছে। এজন্য তো কোনো মামলা হয়নি? দ্রব্যমূল্য বাড়লে কিংবা কমলে রিপোর্ট হবে, খুবই স্বাভাবিক। জনগণের কষ্ট হলেও খবরে আসবে। সে জন্য কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দৈনিক প্রথম আলোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজ দেশের সব মানুষ এ ব্যাপারে মুখ খুলেছে, প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট পত্রিকা ক্ষমা চায়নি। বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই অপপ্রচারও একটি অপরাধ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে লেখার কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে। এটির জন্য কেউ মামলা করে কি না সেটিই দেখার বিষয়।
প্রথম আলোর সাংবাদিককে রাতে কেন গ্রেফতার করা হয়েছে এর জবাব দিতে গিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, রাত চারটায় অনেক সংসদ সদস্যকেও গ্রেফতার করা হয়। দেশের কয়েক দফা মন্ত্রী ছিলেন, বড় রাজনীতিবিদ, তাদেরও রাতে গ্রেফতার করা হয়। তখন তো কোনো প্রশ্ন আসেনি? সবাইকে রাতে গ্রেফতার করা যাবে, আবার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না, এমন কোনো আইন নেই। দেখতে হবে, কোনো নির্যাতন করা হয়েছে কি না; নির্যাতনের কোনো অভিযোগ আসেনি।