স্পোর্টস ডেস্ক :
নতুন মৌসুম এখনও শুরু হয়নি। এখন চলছে ক্লাবগুলোর প্রাক মৌসুম প্রস্তুতি। এ উপলক্ষ্যে প্রতিটি ক্লাবই নিজেদের দেশ ছেড়ে সফর করছে ভিন্ন কোনো দেশে। কিংবা ভিন্ন কোনো দেশের ক্লাবকে নিজেদের মাঠে আমন্ত্রণ জানিয়ে খেলবে প্রাক মৌসুম প্রস্তুতি ম্যাচ।
দুই স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনা এ মুহূর্তে সফর করছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানেই তারা পরস্পর মুখোমুখি হলো। আর কে না জানে, রিয়াল-বার্সা মুখোমুখি হওয়া মানেই এল ক্ল্যাসিকো। প্রাক মৌসুম এল ক্ল্যাসিকোয় রিয়াল মাদ্রিদকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে আগামী মৌসুমের জন্য নিজের শক্তির বার্তা দিয়ে রাখলো বার্সেলোনা।
শনিবার (২৯ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের আরলিংটনের এটি অ্যান্ড টি স্টেডিয়ামে রিয়ালের ওপর এক প্রকার ছড়ি ঘুরিয়েই ৩-০ গোলের জয় তুলে নিয়েছে বার্সেলোনা। প্রথমার্ধে উসমানে ডেম্বেলের গোলে ১-০ তে এগিয়ে থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে ফারমিন লোপেজ আর ফেরান তোরেসের গোলে ৩-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কাতালানরা ।বার্সার প্রথম গোলের পরই অবশ্য রিয়ালের হয়ে পেনাল্টি পেয়েও সেটি মিস করেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ভিনিসিয়াস জুনিয়র।
এল ক্লাসিকোর এই লড়াইয়ে দুই দলই মাঠে নেমেছিল শক্তিশালী একাদশ নিয়ে। ৪-৩-৩ ফরমেশনে রিয়াল আক্রমণভাগে খেলিয়েছে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগো এবং জুড বেলিংহামের মতো তারকাদের। অন্যদিকে বার্সা রবার্ট লেভানডফস্কি, উসমান দেম্বেলে এবং পেদ্রিদের সঙ্গে রেখেছিল ম্যান সিটি থেকে আসা ইলকায় গুন্দোয়ানকেও। ম্যাচে বল দখল এবং আক্রমণে কিন্তু বার্সা নয় এগিয়ে ছিল রিয়ালই। ৫৩ শতাংশ বলের দখল রেখে রিয়াল শট নেয় ২৯টি। যদিও মাত্র ৫টি শটই লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা। অন্যদিকে বার্সা ১২টি শট নিয়ে ৭টিকেই লক্ষ্যে রাখে। এদিন বার্সা বাজিমাত করেছে মূলত ফিনিশিংয়ে। অন্যদিকে রিয়াল বেশ কিছু সুযোগ নষ্ট করে ম্যাচ হাতছাড়া করেছে।
অন্যদিকে, নিজেদের আগের প্রস্ততি ম্যাচে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে জয় পেলেও এবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সার কাছে হারতে হলো লস ব্লাঙ্কোসদের।
বার্সার বিপক্ষে নিজেদের মাঝমাঠের ভরসা লুকা মদ্রিচ আর টনি ক্রুসকে ছাড়াই খেলতে নামে রিয়াল। আর সেটিই যেন তাদের ভুগিয়েছে সবচেয়ে বেশি। ম্যাচের ১৫ মিনিটেই এগিয়ে যায় বার্সা। ফ্রি কিক থেকে ডেম্বেলের উদ্দেশ্যে বল বাড়ান পেদ্রি। বল রিসিভ করে কিছুটা সামনে এগিয়েই দুরূহ কোণ থেকে দুর্দান্ত শটে গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করে রিয়ালের জালে বল জড়িয়ে উল্লাসে মাতেন ডেম্বেলে।
ডেম্বেলের গোলের মিনিট পাঁচেক পরই অবশ্য গোল শোধের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলো রিয়াল। ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হয়ে পেনাল্টি পায় রিয়াল। তবে স্পটকিক থেকে দলকে সমতায় ফেরাতে ব্যর্থ হন ভিনিসিয়াস। তার নেওয়া শট ফিরে আসে গোলপোস্টে লেগে।
প্রথমার্ধের বাকিটা সময়ও কেটেছে আক্রমণ-প্রতি আক্রমণেই। তবে কোনো দলই আর কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা না পেলে ১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় বার্সা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই বার্সার ওপর চাপ প্রয়োগ করে ম্যাচে সমতা ফেরানোর চেষ্টা করেছে রিয়াল। তবে বার্সার গোলমুখে গিয়ে ব্যর্থ হতে হয়েছে বারবার। বদলি হিসেবে মদ্রিচ-ক্রুসদের মাঠে নামিয়েও গোল আদায় করতে সক্ষম হয়নি রিয়াল।
ম্যাচের ৮৫ মিনিটে বার্সার হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন লা মাসিয়া থেকে মুঠে আসা ২০ বছর বয়সী মিডফিল্ডার ফারমিন লোপেজ। ডি-বক্সের বাইইরে থেক দুউর্দান্ত এক শটে রিয়ালের জালে বল জড়ান লোপেজ। এরপর ম্যাচের যোগ করা সময়ে রিয়ালের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকেন ফেরান তোরেস। কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে তার মাথার অপর দিয়ে বল নিয়ে সেই বল জালে জড়ালে ৩-০ গোলের জোয় ন ইশ্চিত করেই মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা।
ম্যাচ শেষে আনচেলত্তি বলেন, বলের সাথে এবং বল ছাড়া দুর্দান্ত একটি ম্যাচ হয়েছে এটি। দুই দলই বেশ ভালো খেলেছে। আমরাও প্রচুর চাপ তৈরি করতে পেরেছি। তাদের ডিফেন্সে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পেরেছিলাম। মাঠজুড়ে বলের ঘূর্ণনও ছিল অবিশ্বাস্য। তবে, দুর্ভাগ্য বলগুলো পোস্টে গিয়েও প্রবেশ করেনি। যে কারণে ফল পক্ষে আসেনি। যা খুব কষ্ট দিয়েছে।