বরিশাল শহর থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেই মিলবে হাজার হাজার পদ্ম। যদিও সেগুলো নীল নয়, সাদা। বাবুগঞ্জের দুর্গাসাগর আলো করে ফুটে আছে হাজার হাজার পদ্ম। এ যেন পদ্মেরই সাগর।
অযত্ন-অবহেলায় ৪৫ দশমিক ৫৫ একরের দুর্গাসাগর তার আবেদন হারাতে বসেছিল। জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমানের উদ্যোগে দুই বছর আগে পদ্মের বীজ লাগানো হয়। এবার পদ্ম তার সৌন্দর্য মেলে ধরেছে।
চোখ যায় যত দূর, পদ্ম আর পদ্ম। পাতার ফাঁকে ফাঁকে স্বচ্ছ জলে হঠাৎ দেখা মেলে মাছের দলের। দুর্গাসাগরের ঠিক মাঝখানে রয়েছে ৭০ শতাংশের মতো আয়তনের স্থলভাগ, ঢিবি। সেখানে কবুতরের আবাসস্থল গড়ে তোলা হয়েছে। আছে হাঁস। পেডাল নৌকায় ঢিবিতে যাওয়া যায়। দুর্গাসাগরের চারদিকে দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ দিতে রাখা আছে হরিণ ও বানর। শিশু-কিশোররা এসব প্রাণী দেখে খুবই মজা পায়। আর বিভিন্ন প্রজাতির পাখপাখালি তো রয়েছেই।
আরও পড়ুন : যে জাহাজ টাইটানিকের চেয়েও ২০ গুণ বড়
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সাগরকে ঘিরে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ এগিয়ে চলছে। ডাকবাংলোর নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। সাগরতীরের জঙ্গল পরিষ্কার করে পিকনিক স্পট গড়ে তোলা হয়েছে। সুরক্ষাপ্রাচীর নির্মাণের পাশাপাশি সাগরতীরে বসছে বিভিন্ন ধরনের খেলনার উপকরণ।
পরিবার নিয়ে এসেছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা হনুফা আক্তার। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, গুঠিয়া মসজিদ দেখতে এর আগে এসেছিলাম, সেই সুবাধে এখানেও এসেছিলাম। তখন সাগরজুড়ে আবর্জনা ছিল, তীরে ছিল জঙ্গল। ছিল না ভালো টয়লেটের ব্যবস্থাও। এবার দেখেছি পুরোটাই পাল্টে গেছে। তিনি বলেন, পদ্ম, হরিণ, বানর, কবুতর ও হাঁস সাগরের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়েছে। সাগরে ভাসছে পেডাল নৌকা। দুর্গাসাগরকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে, না এলে সত্যি বঞ্চিত হতাম।
জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, ইট-কাঠ-পাথরের এই শহরের প্রাকৃতিক বিনোদনের ভালো ব্যবস্থা নেই। তাই শহরের অদূরে বাবুগঞ্জের দুর্গাসাগরকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। তবে করোনার কারণে থমকে ছিল সব আয়োজন। আপাতত পর্যটকদের জন্য এটিকে সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হয়েছে।