Dhaka শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাফুফে সভাপতিসহ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি অনুসন্ধানের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আবু নাঈম সোহাগের শাস্তির পর ফুটবল ফেডারেশনের আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাফুফে কর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (১৫ মে) বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ সময় হাইকোর্ট থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, নিজেদের দুর্নীতির তদন্ত নিজেরাই কীভাবে করে বাফুফে?

রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।

এর আগে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে এ বিষয়ে তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের দুর্নীতির তদন্ত দাবি করা হয়।

আবেদনে বাফুফে সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাতের অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা/নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত হবে না এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। পাশাপাশি বাফুফের কর্তাদের দুর্নীতি, অর্থ পাচার, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়।

রিটে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ)প্রধান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফের) সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

রোববার (১৪ মে) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ সংস্থাটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়ন হচ্ছে না। ফুটবলকে বাঁচাতে হলে তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এ কারণে রিট দায়ের করেছি।

বাফুফের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান চেয়ে ৩ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক। এতে ফল না পেয়ে আজ তিনি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। সায়েদুল হক সুমন জানান, ফিফা নিয়েছে প্রশাসনিক ব্যবস্থা। কিন্তু এটা ফৌজদারি এক্টিভিটিস। এজন্য অনুসন্ধান চেয়ে রিট করেছি।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ফিফা থেকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে যে অনুদান দেওয়া হয়েছিল সেই টাকাসহ সরকার থেকে ফুটবল ফেডারেশনের বরাদ্ধ পাওয়া সব টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে, কোনো দুর্নীতি হয়েছে কিনা, সব বিষয়ে অনুসন্ধান করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

গত ১৪ মে আর্থিক অনিয়ম ও কাগজ জালিয়াতির দায়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগকে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা দুই বছরের জন্য সব ধরনের কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করে। এ ছাড়া বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে তাকে।

আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, ফিফার দেওয়া অর্থ বাফুফের খরচ দেখাতে তিনি ভুল ডকুমেন্ট দেখিয়েছেন। ফিফা শুনানি ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেই এ শাস্তি দিয়েছে বলে তাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

সোহাগের বিরুদ্ধে সাধারণ আর্টিকেল ১৫ (দায়িত্বে অবহেলা), ১৫ (সততা) ও ২৪ (মিথ্যা তথ্য দেওয়া) ভঙ্গের অভিযোগ দেখিয়েছেন তারা। এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে আবু নাঈম সোহাগকেও। অনুলিপি পাঠানো হয়েছে বাফুফে ও এএফসিতে। এরপর ১৭ এপ্রিল ইমরান হোসেন তুষারকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়ে সোহাগকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে বাফুফে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বাফুফে সভাপতিসহ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি অনুসন্ধানের নির্দেশ

প্রকাশের সময় : ০২:১৩:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আবু নাঈম সোহাগের শাস্তির পর ফুটবল ফেডারেশনের আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাফুফে কর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (১৫ মে) বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ সময় হাইকোর্ট থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, নিজেদের দুর্নীতির তদন্ত নিজেরাই কীভাবে করে বাফুফে?

রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।

এর আগে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে এ বিষয়ে তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের দুর্নীতির তদন্ত দাবি করা হয়।

আবেদনে বাফুফে সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাতের অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা/নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত হবে না এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। পাশাপাশি বাফুফের কর্তাদের দুর্নীতি, অর্থ পাচার, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়।

রিটে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ)প্রধান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফের) সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

রোববার (১৪ মে) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ সংস্থাটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়ন হচ্ছে না। ফুটবলকে বাঁচাতে হলে তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এ কারণে রিট দায়ের করেছি।

বাফুফের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান চেয়ে ৩ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক। এতে ফল না পেয়ে আজ তিনি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। সায়েদুল হক সুমন জানান, ফিফা নিয়েছে প্রশাসনিক ব্যবস্থা। কিন্তু এটা ফৌজদারি এক্টিভিটিস। এজন্য অনুসন্ধান চেয়ে রিট করেছি।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ফিফা থেকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে যে অনুদান দেওয়া হয়েছিল সেই টাকাসহ সরকার থেকে ফুটবল ফেডারেশনের বরাদ্ধ পাওয়া সব টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে, কোনো দুর্নীতি হয়েছে কিনা, সব বিষয়ে অনুসন্ধান করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

গত ১৪ মে আর্থিক অনিয়ম ও কাগজ জালিয়াতির দায়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগকে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা দুই বছরের জন্য সব ধরনের কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করে। এ ছাড়া বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে তাকে।

আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, ফিফার দেওয়া অর্থ বাফুফের খরচ দেখাতে তিনি ভুল ডকুমেন্ট দেখিয়েছেন। ফিফা শুনানি ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেই এ শাস্তি দিয়েছে বলে তাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

সোহাগের বিরুদ্ধে সাধারণ আর্টিকেল ১৫ (দায়িত্বে অবহেলা), ১৫ (সততা) ও ২৪ (মিথ্যা তথ্য দেওয়া) ভঙ্গের অভিযোগ দেখিয়েছেন তারা। এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে আবু নাঈম সোহাগকেও। অনুলিপি পাঠানো হয়েছে বাফুফে ও এএফসিতে। এরপর ১৭ এপ্রিল ইমরান হোসেন তুষারকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়ে সোহাগকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে বাফুফে।