Dhaka সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাজেট বড় হবে না, মানুষের আয় বাড়ানোর চেষ্টা থাকবে : অর্থ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এবারের বাজেট বাস্তবমুখী হবে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেটের আকার বেশি বড় হবে না। তবে মানুষের আয় বাড়ানোর জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ করার চেষ্টা থাকবে।

বুধবার (১৯ মার্চ) ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক এবং শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাজেটে মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, শিশুদের শিক্ষাসহ নানা বিষয় আসছে। আমরা বলেছি আগামী বছরের বাজেটটা বাস্তবমুখী করবো। বাজেটের আকার অহেতুক বড় করবো না। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) আকারও খুব একটা বড় হবে না। কিন্তু আমরা কতগুলো বিষয় যেমন মূল্যস্ফীতিটা কমাবো, একই সঙ্গে আমরা আয় যাতে বাড়ে এবং বেসরকারি খাতে যাতে কর্মসংস্থানের প্রসার ঘটে সেটা আমরা চেষ্টা করবো।

তিনি বলেন, আজকে ট্যাক্সের বিষয় আছে, সংবাদপত্রের বেতন বাড়ানো বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবো।

তিনি বলেন, বাজেটের ইমপেক্টটা কী হয় সেটা আগেতো বেশির ভাগ বলে দেওয়া হতো। আমরা এটা এটা করবো। এবার আমরা সেসব বিষয়ে নজর রাখবো। এছাড়া বাজেট বক্তৃতা ২০০ থেকে ৩০০ পৃষ্ঠা হয়। এবার আমি বলেছি ৫০ থেকে ৬০ পৃষ্ঠার বেশি বড় হওয়ার দরকার নেই। বাজেট সংক্ষিপ্ত হবে।

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, মূল কথা হলো আমাদের প্রস্তুতি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রস্তুতিটা নেবো। বাংলাদেশ যদি পদক্ষেপ না নেয় তাহলে অন্যান্য দেশ যেমন ভুটান ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশ বলেছে বাংলাদেশ করলে আমরা সঙ্গে থাকবো। তাই আমরা প্রস্তুতিটা নেবো। আমরা ২০২৬ সালে যদি সময় মতো না পারি তাহলে…।

সামাজিক নিরাপত্তার পরিমাণ বাড়াবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে কিছু বাড়াবো। আর কয়েক লাখ লোক আছে আনডিজার্ভ সেগুলো যদি কমিউনিটিতে আনতে হয় তাহলে আনবো। তবে সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও আইটি খাতে বরাদ্দ কমবে না বাড়াবে।

এলডিসি উত্তরণে যেতে প্রস্তুতি লাগবে উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা গ্র্যাজুয়েশন এড়াতে পারব না। যাব না- এটা কিন্তু খুব ভালো অ্যাটিচিউড (মনোভাব) নয়। ভুটান ও আফ্রিকার পাঁচ-ছয়টি দেশ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা বলেছে, বাংলাদেশ করলে তারা সঙ্গে থাকবে। তাই আমরা প্রস্তুতিটা নেব।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা ভয় পান, গ্র্যাজুয়েশন হলে ধ্বংস হয়ে যেতে হবে, পানিতে পড়ে যাবেন। তাদের ধারণা, তারা প্রতিযোগিতায় যেতে পারবেন না। কিন্তু ব্যবসায়ীদের প্রতিযোগী হতে হবে। এটিই তাদের চ্যালেঞ্জ। গ্র্যাজুয়েশনের পর আমরা আরও তিন বছর সময় পাব নিজেদের প্রমাণ করতে। এই চ্যালেঞ্জটা ব্যবসায়ীদের নিতে হবে।

ক্যাশলেস সোসাইটি হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ক্যাশলেস সোসাইটি ও ফেসলেস ট্যাক্স সিস্টেম হওয়া জরুরি। আমি মনে করি, ট্যাক্স অফিসারদের মুখোমুখি যাওয়া মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়। সামনে গেলেই টেবিলের নিচে হাত চলে যায়। পৃথিবীর কোনো দেশেই ট্যাক্স পেয়াররা ট্যাক্স অফিসে যান না। বাংলাদেশ যদি আইটিতে বা ডিজিটালে (তথ্যপ্রযুক্তির দিকে) না যায়, তাহলে কিন্তু দেশ এগোতে পারবে না।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেটে এ বছর একটি বিষয় আনব। গৃহায়ণে যে নারীরা কাজ করেন, তাদের অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া দরকার। বাজেটে সরাসরি অবদান না রাখলেও কৃষিখাতে তারা অবদান রাখছেন। সেখানে তারা ২ থেকে ৩ শতাংশ রাখছেন। খুব বেশি না হলেও কিছুতো রাখছেন। সেজন্য তাদের সম্মানটা যাতে দিতে পারি।

মতবিনিময় সভায় অর্থ বিভাগের সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেকসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ত্রিশাল জিরো পয়েন্ট-হরিরামপুর সড়কটি যেন মরণফাঁদ

বাজেট বড় হবে না, মানুষের আয় বাড়ানোর চেষ্টা থাকবে : অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৯:৩৮:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এবারের বাজেট বাস্তবমুখী হবে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেটের আকার বেশি বড় হবে না। তবে মানুষের আয় বাড়ানোর জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ করার চেষ্টা থাকবে।

বুধবার (১৯ মার্চ) ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক এবং শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাজেটে মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, শিশুদের শিক্ষাসহ নানা বিষয় আসছে। আমরা বলেছি আগামী বছরের বাজেটটা বাস্তবমুখী করবো। বাজেটের আকার অহেতুক বড় করবো না। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) আকারও খুব একটা বড় হবে না। কিন্তু আমরা কতগুলো বিষয় যেমন মূল্যস্ফীতিটা কমাবো, একই সঙ্গে আমরা আয় যাতে বাড়ে এবং বেসরকারি খাতে যাতে কর্মসংস্থানের প্রসার ঘটে সেটা আমরা চেষ্টা করবো।

তিনি বলেন, আজকে ট্যাক্সের বিষয় আছে, সংবাদপত্রের বেতন বাড়ানো বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবো।

তিনি বলেন, বাজেটের ইমপেক্টটা কী হয় সেটা আগেতো বেশির ভাগ বলে দেওয়া হতো। আমরা এটা এটা করবো। এবার আমরা সেসব বিষয়ে নজর রাখবো। এছাড়া বাজেট বক্তৃতা ২০০ থেকে ৩০০ পৃষ্ঠা হয়। এবার আমি বলেছি ৫০ থেকে ৬০ পৃষ্ঠার বেশি বড় হওয়ার দরকার নেই। বাজেট সংক্ষিপ্ত হবে।

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, মূল কথা হলো আমাদের প্রস্তুতি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রস্তুতিটা নেবো। বাংলাদেশ যদি পদক্ষেপ না নেয় তাহলে অন্যান্য দেশ যেমন ভুটান ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশ বলেছে বাংলাদেশ করলে আমরা সঙ্গে থাকবো। তাই আমরা প্রস্তুতিটা নেবো। আমরা ২০২৬ সালে যদি সময় মতো না পারি তাহলে…।

সামাজিক নিরাপত্তার পরিমাণ বাড়াবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে কিছু বাড়াবো। আর কয়েক লাখ লোক আছে আনডিজার্ভ সেগুলো যদি কমিউনিটিতে আনতে হয় তাহলে আনবো। তবে সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও আইটি খাতে বরাদ্দ কমবে না বাড়াবে।

এলডিসি উত্তরণে যেতে প্রস্তুতি লাগবে উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা গ্র্যাজুয়েশন এড়াতে পারব না। যাব না- এটা কিন্তু খুব ভালো অ্যাটিচিউড (মনোভাব) নয়। ভুটান ও আফ্রিকার পাঁচ-ছয়টি দেশ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা বলেছে, বাংলাদেশ করলে তারা সঙ্গে থাকবে। তাই আমরা প্রস্তুতিটা নেব।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা ভয় পান, গ্র্যাজুয়েশন হলে ধ্বংস হয়ে যেতে হবে, পানিতে পড়ে যাবেন। তাদের ধারণা, তারা প্রতিযোগিতায় যেতে পারবেন না। কিন্তু ব্যবসায়ীদের প্রতিযোগী হতে হবে। এটিই তাদের চ্যালেঞ্জ। গ্র্যাজুয়েশনের পর আমরা আরও তিন বছর সময় পাব নিজেদের প্রমাণ করতে। এই চ্যালেঞ্জটা ব্যবসায়ীদের নিতে হবে।

ক্যাশলেস সোসাইটি হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ক্যাশলেস সোসাইটি ও ফেসলেস ট্যাক্স সিস্টেম হওয়া জরুরি। আমি মনে করি, ট্যাক্স অফিসারদের মুখোমুখি যাওয়া মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়। সামনে গেলেই টেবিলের নিচে হাত চলে যায়। পৃথিবীর কোনো দেশেই ট্যাক্স পেয়াররা ট্যাক্স অফিসে যান না। বাংলাদেশ যদি আইটিতে বা ডিজিটালে (তথ্যপ্রযুক্তির দিকে) না যায়, তাহলে কিন্তু দেশ এগোতে পারবে না।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেটে এ বছর একটি বিষয় আনব। গৃহায়ণে যে নারীরা কাজ করেন, তাদের অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া দরকার। বাজেটে সরাসরি অবদান না রাখলেও কৃষিখাতে তারা অবদান রাখছেন। সেখানে তারা ২ থেকে ৩ শতাংশ রাখছেন। খুব বেশি না হলেও কিছুতো রাখছেন। সেজন্য তাদের সম্মানটা যাতে দিতে পারি।

মতবিনিময় সভায় অর্থ বিভাগের সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেকসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।