নিজস্ব প্রতিবেদক :
পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট মিলে বাজার তদারকি করা প্রধানমন্ত্রীর পছন্দ নয় বলে মন্তব্য করে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।বলেন, আমার আশঙ্কা হয়, ভয় হয়, এই মাসেও নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে। এটা চৈত্র মাস, আমাদের অভাবের মাস। খাবারের দাম বাড়বে। আবার বৈশাখ মাসে ধান তুলতে পারলে দ্রব্যমূল্যের দাম কমবে। আমি আরেকটি কথা বলতে চাই, পুলিশি যে তদারকি, পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট মিলে ড্রাইভ দেওয়া এটা প্রধানমন্ত্রী পছন্দ করেন না। স্বাধীন-মুক্ত দেশে সবার হক আছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, যদি পুলিশ খবর পায় কোনো জায়গায় মাল লুকিয়ে রেখেছে তাহলে অবশ্যই গিয়ে দেখার দায়িত্ব আছে। তবে আমরা প্রচার করে, সড়ক যোগাযোগ পরিষ্কার রেখে, সাপ্লাই ঠিক রেখে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাই। তদারকি শব্দটা ব্যবহার করতে চাই না। আমরা দেখব, যোগাযোগ রাখব। প্রয়োজন হলে হাত দেব, নইলে আমরা চুপ থাকব।
তিনি আরো বলেন, এই রমজানে সরকারের কাছে যথেষ্ট চিনি, ছোলা ও গুঁড়া দুধের স্টক রয়েছে। আমাদের মধ্যে রমজান মাসে বেশি পণ্য কেনার একটা প্রবণতা রয়েছে। একটি প্যানিক ও ভীতি থেকে মানুষ বেশি কেনাকাটা করেন। তবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ছোবল এত ভয়ংকর হবে না। সরকার সজাগ দৃষ্টি রাখছে। কোনো ব্যবসায়ী মাল মজুত করে দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করলে সরকার বিপুল পরিমাণ পণ্য বাজারে ছেড়ে দিয়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করবে। তাতে কাজ না হলে পণ্য আমদানি ওপেন করে দেব। কোনো সমস্যা হবে না।
স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, পবিত্র রমজান ও চৈত্র মাসে পণ্য মজুত করে দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করা যাবে না। সরবরাহ লাইন ঠিক রেখে সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। সব বিষয় সরকার নজরে রাখবে, প্রয়োজনে সরকার ব্যবস্থা নেবে।
এম এ মান্নান বলেন, আমার ভয় হয় এখন চৈত্র মাস। এ মাস হাওড় এলাকার অভাবের মাস। খাবারের দাম বেশি হয় এ সময়। বৈশাখ মাসে ধান গোলায় তুলতে পারলে দ্রব্যমূল্য কমবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযান প্রধানমন্ত্রীও পছন্দ করেন না। স্বাধীন মুক্ত দেশ, সবার অধিকার আছে। তবে পণ্য মজুত রেখে বাজার অস্থিতিশীল করা যাবে না।
হাওড়ের ফসল রক্ষাবাঁধ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ ফুট নিচে রয়েছে। প্রকৃতি যদি আরও মাসখানেক সময় দেয়, তাহলে হাওড়ের ফসল কেটে ঘরে তুলতে কোনো সমস্যা হবে না। তাহলে লাখ লাখ হাওড়বাসীর পরিশ্রম সার্থক হবে।
এ সময় চলমান মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে টেন পয়েন্ট ফোর হয়ে গেছে, বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি এখনও নাইন পয়েন্ট হয়নি। এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য সরকার গোপন করে না।
জেলা প্রশাসক দিদারের আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, পুলিশ সুপার মো. এহসান শাহ, সুনামগঞ্জ পৌর সভার মেয়র নাদের বখত, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আলী আমজাদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার, সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম প্রামাণিক, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আবুল কাসেম প্রমুখ।
সভায় জেলার গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।