নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, বাজারের যেকোনো সিন্ডিকেট ও অপতৎপরতা ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা পুলিশের আছে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির হেডকোয়ার্টারের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন বাজার কমিটির প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিশেষ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বাজারে জিনিসের সংকট নেই, তবে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। তাই আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের যেই মনিটরিং কমিটি রয়েছে তাদের সঙ্গে পুলিশও থাকবে। প্রয়োজনে বড় বড় বাজারে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আমাদের পুলিশও অংশগ্রহণ করবে, যাতে যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায়। যেকোনো সিন্ডিকেট ও যেকোনো অপতৎপরতা যাতে সমূলে নষ্ট করা যায়, সে জন্য আমরা বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, বাজারে কোনো জিনিসের স্বল্পতা নেই। কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ে স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে সংকট তৈরি হয়। আগে দৌলতদিয়া ঘাটে অনেক কাঁচামাল আটকে থেকে পচে যেত। পদ্মা সেতু হওয়ার পর সেখানে এখন আর কোনো মালামাল আটকে থাকছে না।
হাবিবুর রহমান বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। যাতে কোনো সিন্ডিকেট বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে। ব্যবসায়ীদের যেমন রসিদ সংগ্রহ করতে হবে, তেমনি ভোক্তারা যদি চায় সে রসিদ দেখতে পারে।
সড়কে চাঁদাবাজির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগে রাস্তায় পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজির দৃশ্য দেখা যেত। বর্তমানে রাস্তায় কোনো হয়রানি বা চাঁদাবাজি দেখা যায় না। তারপরও কেউ অভিযোগ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নির্বাচন সামনে রেখে বাজার অস্থিতিশীলতার শঙ্কায় রয়েছেন কি না, সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কোনো শঙ্কা নেই। সমন্বয়ের কিছুটা অভাব রয়েছে। আমাদের যেই মনিটরিং ব্যবস্থা রয়েছে এটা ভোক্তা অধিকার বা পুলিশের পক্ষে একা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বাজারে দ্রব্যমূল্য নির্ধারিত হয় চাহিদা-যোগানের ভিত্তিতে। সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশ তাল মিলিয়ে চলছে।
তিনি বলেন, যেই অপতৎপরতা আমরা দেখতে পেয়েছি, সকল জিনিসের পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে, কোনো ব্যবসায়ী বলেনি কোনো পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না। সব পাওয়া যাচ্ছে এবং যেই দাম তা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা হচ্ছে।
কমিশনার বলেন, সবজি উৎপাদনে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয়। আমাদের এমন থাকার কথা নয়। যেই বিষয়টি আছে তা হলো সমন্বয়ের অভাব, সবাই একসঙ্গে কাজ করলে, সবাই সহযোগিতা করলে তখন অবশ্যই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
সিন্ডিকেটের পেছনে রাজনৈতিক যোগসূত্র রয়েছে, সেটা ভাঙা সম্ভব কি না জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, আমাদের কাছে সিন্ডিকেটের বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক অপতৎপরতা কারো আছে, এটি পরিষ্কার নয়। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা আছে, তারা কাজ করছে। যদি এ ধরনের কোনো কিছু আমাদের কাছে আসে, আমি পরিষ্কার ভাষায় বলে দিতে চাই, যেকোনো সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ যেকোনো অবস্থায় তৎপর এবং যেকোনো সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার সক্ষমতা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রয়েছে।
এ সময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার প্রধান মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল জব্বার মণ্ডল প্রমুখ।