Dhaka রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাখমুতে ওয়াগনার গ্রুপের ২০ হাজার সদস্য নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

বাখমুত শহর নিয়ে রাশিয়ার ভাড়াটে গোষ্ঠী ভাগনারের সঙ্গে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চলেছে। এই লড়াইয়ে ২০ হাজার সৈন্য হারিয়েছে ভাগনার।

ভাড়াটে ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন নিজেই এই তথ্য জানিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব ইউক্রেনের বাখমুত শহর নিয়ন্ত্রণের জন্য টানা কয়েক মাসব্যাপী হওয়া যুদ্ধে রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রায় ২০ হাজার সৈন্য নিহত হয়েছেন বলে এর প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বলেছেন।

ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ৫০ হাজার বন্দিকে নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে ২০ শতাংশই নিহত হয়েছে।

টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে তিনি রাশিয়ান রাজনৈতিক কৌশলবিদ কনস্ট্যান্টিন ডলগভকে বলেছেন, শহরটির জন্য যুদ্ধে তার একই সংখ্যক চুক্তি করা সেনাও মারা গেছে।

সম্প্রতি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুত রাশিয়ার দখলে এসেছে বলে দাবি করে রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াগনার।

এছাড়া বাখমুত দখলে নিয়োজিত সেনাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একইসঙ্গে পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, দেশটির বাখমুত শহরটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ওই শহরে রাশিয়ার জয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আকস্মিক হামলা চালায় রাশিয়া। তারপর থেকে দেশটির বিভিন্ন অংশে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছেই।

এই সপ্তাহান্তে ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বাখমুতে তাদের বিজয় হয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেছিলেন, তার সৈন্যরা শেষ পর্যন্ত শহরের অভ্যন্তরে সর্বশেষ এলাকা থেকে ইউক্রেনীয়দের সরিয়ে দিয়েছে। পরে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও এই দাবি সামনে আনে।

সোভিয়েত আমলে বাখমুতের নাম ছিল আর্টিওমভস্ক। বাখমুতের দখল নিয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘ওয়াগনার অ্যাসল্ট ইউনিটের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের ফলে এবং আর্টিলারি ও সাউদার্ন গ্রুপ অব ফোর্সের বিমান হামলার মাধ্যমে আর্টিওমভস্ককে মুক্তির কাজ সম্পন্ন হয়েছে।’

এছাড়া বাখমুত দখলে নিয়োজিত সেনাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একইসঙ্গে পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

তবে ইউক্রেনের সামরিক সূত্র দাবি করেছে, শহরের উপকণ্ঠে কয়েকটি ভবনের নিয়ন্ত্রণ এখনও তাদের হাতে রয়েছে। এমনকি ইউক্রেনীয় বাহিনী শহরের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বলেও দাবি করা হয়েছে।

প্রিগোজিন একজন ব্যবসায়ী হলেও এক বছরেরও বেশি আগে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে তার প্রভাব গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং রুশ সামরিক বাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভকে তাদের অযোগ্যতার জন্য অভিযুক্ত করে রুশ সামরিক নেতৃত্বের তীব্র সমালোচনাও করেছেন তিনি।

আল জাজিরা বলছে, গত বছর ইয়েভজেনি প্রিগোজিন রাশিয়ার কারাগারগুলো পরিদর্শন করেছিলেন। সেসময় তিনি বন্দিদের ইউক্রেনে ওয়াগনারের হয়ে যুদ্ধ করতে রাজি করানোর চেষ্টা করেন। বিনিময়ে তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষে তারা যদি বেঁচে থাকেন তাহলে তারা মুক্তভাবে তাদের দেশে ফিরে যেতে পারবেন।

রাশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ভাড়াটে এই নেতা বলেছেন, ইউক্রেন তার পূর্বাঞ্চলে তীব্র লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দু বাখমুতকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করবে এবং ক্রিমিয়া আক্রমণ করবে।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সম্ভবত, এই ধরনের দৃশ্য রাশিয়ার জন্য ভালো কিছু হবে না। তাই আমাদের কঠিন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। সূত্র : আল জাজিরা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সেনাবাহিনীর সমর্থন না থাকলে এই সরকার টিকবে না : ফরহাদ মজহার

বাখমুতে ওয়াগনার গ্রুপের ২০ হাজার সদস্য নিহত

প্রকাশের সময় : ০৩:৫১:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

বাখমুত শহর নিয়ে রাশিয়ার ভাড়াটে গোষ্ঠী ভাগনারের সঙ্গে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চলেছে। এই লড়াইয়ে ২০ হাজার সৈন্য হারিয়েছে ভাগনার।

ভাড়াটে ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন নিজেই এই তথ্য জানিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব ইউক্রেনের বাখমুত শহর নিয়ন্ত্রণের জন্য টানা কয়েক মাসব্যাপী হওয়া যুদ্ধে রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রায় ২০ হাজার সৈন্য নিহত হয়েছেন বলে এর প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বলেছেন।

ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ৫০ হাজার বন্দিকে নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে ২০ শতাংশই নিহত হয়েছে।

টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে তিনি রাশিয়ান রাজনৈতিক কৌশলবিদ কনস্ট্যান্টিন ডলগভকে বলেছেন, শহরটির জন্য যুদ্ধে তার একই সংখ্যক চুক্তি করা সেনাও মারা গেছে।

সম্প্রতি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুত রাশিয়ার দখলে এসেছে বলে দাবি করে রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াগনার।

এছাড়া বাখমুত দখলে নিয়োজিত সেনাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একইসঙ্গে পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, দেশটির বাখমুত শহরটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ওই শহরে রাশিয়ার জয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আকস্মিক হামলা চালায় রাশিয়া। তারপর থেকে দেশটির বিভিন্ন অংশে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছেই।

এই সপ্তাহান্তে ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বাখমুতে তাদের বিজয় হয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেছিলেন, তার সৈন্যরা শেষ পর্যন্ত শহরের অভ্যন্তরে সর্বশেষ এলাকা থেকে ইউক্রেনীয়দের সরিয়ে দিয়েছে। পরে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও এই দাবি সামনে আনে।

সোভিয়েত আমলে বাখমুতের নাম ছিল আর্টিওমভস্ক। বাখমুতের দখল নিয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘ওয়াগনার অ্যাসল্ট ইউনিটের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের ফলে এবং আর্টিলারি ও সাউদার্ন গ্রুপ অব ফোর্সের বিমান হামলার মাধ্যমে আর্টিওমভস্ককে মুক্তির কাজ সম্পন্ন হয়েছে।’

এছাড়া বাখমুত দখলে নিয়োজিত সেনাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একইসঙ্গে পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

তবে ইউক্রেনের সামরিক সূত্র দাবি করেছে, শহরের উপকণ্ঠে কয়েকটি ভবনের নিয়ন্ত্রণ এখনও তাদের হাতে রয়েছে। এমনকি ইউক্রেনীয় বাহিনী শহরের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বলেও দাবি করা হয়েছে।

প্রিগোজিন একজন ব্যবসায়ী হলেও এক বছরেরও বেশি আগে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে তার প্রভাব গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং রুশ সামরিক বাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভকে তাদের অযোগ্যতার জন্য অভিযুক্ত করে রুশ সামরিক নেতৃত্বের তীব্র সমালোচনাও করেছেন তিনি।

আল জাজিরা বলছে, গত বছর ইয়েভজেনি প্রিগোজিন রাশিয়ার কারাগারগুলো পরিদর্শন করেছিলেন। সেসময় তিনি বন্দিদের ইউক্রেনে ওয়াগনারের হয়ে যুদ্ধ করতে রাজি করানোর চেষ্টা করেন। বিনিময়ে তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষে তারা যদি বেঁচে থাকেন তাহলে তারা মুক্তভাবে তাদের দেশে ফিরে যেতে পারবেন।

রাশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ভাড়াটে এই নেতা বলেছেন, ইউক্রেন তার পূর্বাঞ্চলে তীব্র লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দু বাখমুতকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করবে এবং ক্রিমিয়া আক্রমণ করবে।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সম্ভবত, এই ধরনের দৃশ্য রাশিয়ার জন্য ভালো কিছু হবে না। তাই আমাদের কঠিন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। সূত্র : আল জাজিরা।