Dhaka বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাইরে থেকে এসে নতুন চিন্তা-ভাবনা দিয়ে সমস্যা সমাধান করা যাবে না : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাইরে থেকে এসে নতুন নতুন চিন্তা-ভাবনা দিয়ে কিন্তু দেশের সমস্যার সমাধান করা যাবে না। জুলাই সনদ ঘোষণা করে লন্ডন বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোটের তারিখ দিন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শফিউল বারী স্মৃতি সংসদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কারকে ভয় পায় না বিএনপি, বরং স্বাগত জানায়। কিন্তু সমস্যা তখন হয়, যখন দেখি দেশ ও জাতির জন্য যা প্রয়োজন নয়, সেসব বিষয় সামনে নিয়ে আসা হয়। পিআর দেশের মানুষ বুঝেই না। মানুষ বলে, এটা কী জিনিস ভাই। মানুষ ইভিএম ভোট দেয় না, বুঝে না। সুতরাং পিআর থেকে সরে আসতে হবে।

পিআর বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে না দিলে কিছু দল নির্বাচনে না যাওয়ার পণ করেছে বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, দুঃখজনকভাবে আমাদের দেশের কয়েকটি রাজনৈতিক দল এগুলোকে (পিআর পদ্ধতি) প্রমোট করে। প্রমোট নয় শুধু, পণ করে বসে আছে এটা না হলে নির্বাচনে যাবে না।

বাংলাদেশের মানুষ পিআর বোঝে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেশকিছু বিষয়ে সবাই একমত হচ্ছে, এটা ভালো দিক। কিন্তু সমস্যাটা তৈরি হয়, যখন নতুন নতুন চিন্তা সামনে আসছে। এই চিন্তাগুলো আমাদের দেশ ও জাতির সঙ্গে পরিচিত নয়। পিআর পদ্ধতি আমাদের দেশের মানুষ বোঝেই না। তারা বলে, পিআর কী জিনিস ভাই? তারা এখনো ইভিএমে ভোট দিতে পারে না ঠিকমতো, তাই তারা ভোটই দেয় না। তারা পিআর বুঝবে কী করে। এই চিন্তাভাবনাগুলো থেকে দূরে সরে যেতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষ যেটাতে অভ্যস্ত সেই ভোটের ব্যবস্থা করেন। তাদের প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করেন। তাহলে সমস্যাগুলোর সমাধান হবে, না হলে হবে না। বাইরে থেকে এসে কাউকে নতুন নতুন চিন্তাভাবনা দিয়ে দেশের সমস্যার সমাধান হবে না। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, অবিলম্বে সংস্কারগুলো শেষ করুন। জাতীয় সনদ ঘোষণা করুন। আর দয়া করে নির্বাচনের যে তারিখটা নির্ধারণ করেছেন, সেই সময়টাতে নির্বাচন দিন। মানুষকে তার অধিকার ফিরিয়ে দিন, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন।

শিশু একাডেমির ভবন না সরানোর অনুরোধ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আজ খুব কষ্ট পাই যখন শুনি, পত্রপত্রিকায় দেখি, শহীদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত শিশু একাডেমিকে এখনকার যে জায়গায় ভবন আছে সেখান থেকে ভেঙে সরিয়ে ফেলা হবে। আমি বিবৃতি দিয়েছি, আজ আবার অনুরোধ করবো, এটা যারই জায়গা হোক, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেদিন সবার মতামত নিয়েই আমাদের শিশুদের বিকশিত করার জন্য এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখানে সারাদেশের শিশুরা আসে। এটা যেন না ভাঙা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার আমাদের হাত দিয়েই শুরু। সুতরাং, আমরা সংস্কার ভয় পাই না। সংস্কারকে স্বাগত জানাই। অনেকেই সংস্কারে ভালো কিছু দেখেন না। আমি কিন্তু কিছু ভালো দেখছি। আজকে সংবাদে দেখলাম, ১২টি মৌলিক বিষয়ে সংস্কারের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। এটা অবশ্যই পজিটিভ।

ড. আলী রিয়াজ ও তার টিমকে অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্যে ধন্যবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, আমাদের অনেকে খোঁটা দিয়ে কথা বলে যে, আমরা সংস্কার চাই না। কিন্তু সংস্কারের চিন্তাটাই তো আমাদের। সংস্কারের শুরুটা আমাদের দিয়েই। ১৯৭৫ সালের আগে শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি ফ্যাসিজমের মূলহোতা। তিনি গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলেন। সেই বাকশাল থেকে ফিরিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করলেন কে? জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, এই সংস্কারগুলো তো আমাদেরই। সুতরাং, আমরা সংস্কার কে ভয় পাই না, স্বাগত জানাই। অন্তত ১২টি জায়গায় আমরা একমত হতে পেরেছি এজন্য ধন্যবাদ জানাই।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপনসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বাইরে থেকে এসে নতুন চিন্তা-ভাবনা দিয়ে সমস্যা সমাধান করা যাবে না : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৩:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাইরে থেকে এসে নতুন নতুন চিন্তা-ভাবনা দিয়ে কিন্তু দেশের সমস্যার সমাধান করা যাবে না। জুলাই সনদ ঘোষণা করে লন্ডন বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোটের তারিখ দিন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শফিউল বারী স্মৃতি সংসদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কারকে ভয় পায় না বিএনপি, বরং স্বাগত জানায়। কিন্তু সমস্যা তখন হয়, যখন দেখি দেশ ও জাতির জন্য যা প্রয়োজন নয়, সেসব বিষয় সামনে নিয়ে আসা হয়। পিআর দেশের মানুষ বুঝেই না। মানুষ বলে, এটা কী জিনিস ভাই। মানুষ ইভিএম ভোট দেয় না, বুঝে না। সুতরাং পিআর থেকে সরে আসতে হবে।

পিআর বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে না দিলে কিছু দল নির্বাচনে না যাওয়ার পণ করেছে বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, দুঃখজনকভাবে আমাদের দেশের কয়েকটি রাজনৈতিক দল এগুলোকে (পিআর পদ্ধতি) প্রমোট করে। প্রমোট নয় শুধু, পণ করে বসে আছে এটা না হলে নির্বাচনে যাবে না।

বাংলাদেশের মানুষ পিআর বোঝে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেশকিছু বিষয়ে সবাই একমত হচ্ছে, এটা ভালো দিক। কিন্তু সমস্যাটা তৈরি হয়, যখন নতুন নতুন চিন্তা সামনে আসছে। এই চিন্তাগুলো আমাদের দেশ ও জাতির সঙ্গে পরিচিত নয়। পিআর পদ্ধতি আমাদের দেশের মানুষ বোঝেই না। তারা বলে, পিআর কী জিনিস ভাই? তারা এখনো ইভিএমে ভোট দিতে পারে না ঠিকমতো, তাই তারা ভোটই দেয় না। তারা পিআর বুঝবে কী করে। এই চিন্তাভাবনাগুলো থেকে দূরে সরে যেতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষ যেটাতে অভ্যস্ত সেই ভোটের ব্যবস্থা করেন। তাদের প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করেন। তাহলে সমস্যাগুলোর সমাধান হবে, না হলে হবে না। বাইরে থেকে এসে কাউকে নতুন নতুন চিন্তাভাবনা দিয়ে দেশের সমস্যার সমাধান হবে না। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, অবিলম্বে সংস্কারগুলো শেষ করুন। জাতীয় সনদ ঘোষণা করুন। আর দয়া করে নির্বাচনের যে তারিখটা নির্ধারণ করেছেন, সেই সময়টাতে নির্বাচন দিন। মানুষকে তার অধিকার ফিরিয়ে দিন, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন।

শিশু একাডেমির ভবন না সরানোর অনুরোধ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আজ খুব কষ্ট পাই যখন শুনি, পত্রপত্রিকায় দেখি, শহীদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত শিশু একাডেমিকে এখনকার যে জায়গায় ভবন আছে সেখান থেকে ভেঙে সরিয়ে ফেলা হবে। আমি বিবৃতি দিয়েছি, আজ আবার অনুরোধ করবো, এটা যারই জায়গা হোক, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেদিন সবার মতামত নিয়েই আমাদের শিশুদের বিকশিত করার জন্য এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখানে সারাদেশের শিশুরা আসে। এটা যেন না ভাঙা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার আমাদের হাত দিয়েই শুরু। সুতরাং, আমরা সংস্কার ভয় পাই না। সংস্কারকে স্বাগত জানাই। অনেকেই সংস্কারে ভালো কিছু দেখেন না। আমি কিন্তু কিছু ভালো দেখছি। আজকে সংবাদে দেখলাম, ১২টি মৌলিক বিষয়ে সংস্কারের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। এটা অবশ্যই পজিটিভ।

ড. আলী রিয়াজ ও তার টিমকে অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্যে ধন্যবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, আমাদের অনেকে খোঁটা দিয়ে কথা বলে যে, আমরা সংস্কার চাই না। কিন্তু সংস্কারের চিন্তাটাই তো আমাদের। সংস্কারের শুরুটা আমাদের দিয়েই। ১৯৭৫ সালের আগে শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি ফ্যাসিজমের মূলহোতা। তিনি গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলেন। সেই বাকশাল থেকে ফিরিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করলেন কে? জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, এই সংস্কারগুলো তো আমাদেরই। সুতরাং, আমরা সংস্কার কে ভয় পাই না, স্বাগত জানাই। অন্তত ১২টি জায়গায় আমরা একমত হতে পেরেছি এজন্য ধন্যবাদ জানাই।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপনসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা উপস্থিত ছিলেন।