আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
বাংলাদেশ ও ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশে বড় ধরনের সহায়তা অর্থায়ন বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বাংলাদেশের ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কর্মসূচিও বাতিল করা হয়েছে।
একই সঙ্গে ভারতের জন্য নির্ধারিত ২১ মিলিয়ন ডলারের কর্মসূচিও বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের ও বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন দপ্তর ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই) এই ঘোষণা দিয়েছে।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে। এতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন বাজেট কমিয়ে আনার জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং এর আওতায় ভারত-বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশের জন্য মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের তহবিল বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশের পাশাপাশি এদিন আরও কয়েকটি দেশের জন্য নির্ধারিত বড় ধরনের সহায়তা অর্থায়ন বাতিল করেছে ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন নতুন দপ্তরটি। এর মধ্যে ভারতের জন্য ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের একটি কর্মসূচিও রয়েছে। দেশটির নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন নতুন প্রশাসন আন্তর্জাতিক সহায়তা খাতে ব্যাপক কাটছাঁট করছে। তারই অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশের জন্য বরাদ্দ সহায়তা তহবিল বাতিল করা হয়েছে।
ডিওজিইর ঘোষণায় বলা হয়েছে, মার্কিন করদাতাদের অর্থ ব্যয়ে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক প্রকল্প বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এসব প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
– মোজাম্বিকে স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসা মাধ্যমে পুরুষদের খতনা প্রকল্পে এক কোটি ডলার।
– কম্বোডিয়ার তরুণদের ব্যবসায়িক দক্ষতা উন্নয়নে ৯৭ লাখ ডলার এবং বাকস্বাধীনতা শক্তিশালী করতে ২৩ লাখ মার্কিন ডলার।
– চেক প্রজাতন্ত্রে প্রাগ সিভিল সোসাইটি সেন্টারের জন্য ৩ কোটি ২০ লাখ ডলার।
– নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও নারী ক্ষমতায়ন কেন্দ্র স্থাপনে ৪ কোটি ডলার।
– সার্বিয়ার সরকারি কেনাকাটা ব্যবস্থার উন্নয়নে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
– নির্বাচনী কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পে ৪৮ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে মলদোভার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার জন্য ২ কোটি ২০ লাখ ডলার এবং ভারতে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার বরাদ্দ ছিল।
– বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালীকরণ কর্মসূচিতে ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
– নেপালে রাজস্ব ব্যবস্থা ও রাজ্য পরিচালনা পদ্ধতি উন্নত করতে ২ কোটি ডলার এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ১ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
– লাইবেরিয়ায় ভোটারদের আস্থার জন্য ১৫ লাখ ডলার।
– মালির সামাজিক সম্প্রীতির উন্নয়নে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
– দক্ষিণ আফ্রিকায় অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে ২৫ লাখ ডলার।
– এশিয়ায় শিখন দক্ষতা উন্নয়নে ৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
– কসোভোর রোমা, আশকালি ও মিশরীয় সম্প্রদায়ের আর্থ-সামাজিক সংহতি বাড়াতে টেকসই পুনর্ব্যবহারযোগ্য মডেল তৈরিতে ২০ লাখ ডলার।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, এসব পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ফেডারেল ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে চলমান প্রচেষ্টার অংশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর ফেডারেল ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে নতুন ডিপার্টমেন্ট ‘ডজ’ গঠন করেছেন। আর এর দায়িত্ব দিয়েছেন ইলন মাস্ককে।