Dhaka শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ গভীরভাবে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটকাল অতিক্রম করছে : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশ গভীরভাবে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটকাল অতিক্রম করছে। রাষ্ট্র আবারও ফ্যাসিবাদি শাসনের কবলে পড়েছে। বিশ্ববাসী জানে, গত ৭ জানুয়ারি যা হয়েছে, তা কোনো নির্বাচন নয় বরং জাতির গণতান্ত্রিক প্রত্যাশাকে অপমান করা হয়েছে।

রোববার (২৪মার্চ) গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে কূটনীতিকদের সম্মানে আয়োজিত ইফতারপূর্ব বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতি বছরের মতো এবারও কূটনৈতিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি। এতে কূটনীতিকদের সাথে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের সুশীল সমাজ, বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ও কর্মকর্তারা অংশ নেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিশ্ব জানে, বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারি যা ঘটেছিল তা কোনো নির্বাচন নয় বরং জাতির গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার জন্য তা অপমানজনক।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শাসকগোষ্ঠীর দ্বারা সংঘটিত নির্লজ্জ কারচুপি, অনিয়ম ও সহিংসতা গণমাধ্যমের প্রতিবেদন, ছবি, ঘটনাস্থলে ধারণ করা রিয়েল টাইম ভিডিও এবং সারাদেশের নির্বাচনী কৌশল প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট হয়েছে এই নির্বাচনের চিত্র। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই ডামি নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে।’

ফখরুল বলেন, ‘এই নির্বাচন একটি অত্যন্ত মেরুকৃত রাজনৈতিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন হয়েছে প্রহসনমূলক, যেখানে প্রকৃত প্রতিযোগিতার অভাব ছিল। এ কারণে এ নির্বাচন মূল আন্তর্জাতিক মান পূরণ করে না। এদিকে সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে।’

কূটনীতিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অধিকার ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনকে আমরা গভীরভাবে মূল্যায়ন করি। যার মধ্য দিয়ে প্রকৃতভাবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিশ্চিত করা যেতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা এটা অর্জন করতে না পারি, জনগণের শান্তিপূর্ণ ও অসহিংস আন্দোলন চলবে।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর অমানবিক হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিএনপি গভীরভাবে অবহিত বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ও জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি উল্লেখ করেন, দুই রাষ্ট্র কৌশলই এ সংকটের সমাধান হতে পারে।

গাজায় গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক নিরীহ বেসামরিক জনগণের ওপর পরিচালিত অমানবিক হত্যাকাণ্ডে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতিসঙ্ঘকে এই গণহত্যা বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাই। আমরা বিশ্বাস করি দুই রাষ্ট্রীয় নীতিই এর সঠিক সমাধান।’

ফখরুল বলেন, ‘মানুষে মানুষে সম্পর্ক হলো সেই ভিত্তি যার ওপর স্থায়ী সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সংস্কৃতি, ধারণা এবং অভিজ্ঞতার আদান-প্রদানের মাধ্যমেই আমরা সীমানা অতিক্রম করতে পারি এবং শ্রদ্ধা ও সংহতির মূলে থাকা একটি বিশ্ব সম্প্রদায়কে গড়ে তুলতে পারি।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- কানাডার হাই কমিশনার মিসেস লিলি নিকোলস, ব্রিটিশ হাই কমিশনার মিসেস সারা কুক, আমেরিকার দ্যা চার্জ আফেয়ার্স হেলেন লাফাভ, পাকিস্তান দূতাবাসের সৈয়দ আহমদ মারুফ, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নারদির সিম্পসন, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রাকস্টার, ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশন ড. বিনয় জর্জ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের চার্জ দ্যা আফেয়ার্স ড. ব্রেন্ড স্প্যানিয়ার, চীনের ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর ইয়ান হুয়ালং, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েস্বর চন্দ্র রায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।

এছাড়া জাতিসঙ্ঘ, এনডিআই, আইআরআইসহ ৩৮টি দেশের প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কারের ভবিষ্যৎ পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেব না : নাহিদ ইসলাম

বাংলাদেশ গভীরভাবে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটকাল অতিক্রম করছে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৯:০৭:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশ গভীরভাবে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটকাল অতিক্রম করছে। রাষ্ট্র আবারও ফ্যাসিবাদি শাসনের কবলে পড়েছে। বিশ্ববাসী জানে, গত ৭ জানুয়ারি যা হয়েছে, তা কোনো নির্বাচন নয় বরং জাতির গণতান্ত্রিক প্রত্যাশাকে অপমান করা হয়েছে।

রোববার (২৪মার্চ) গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে কূটনীতিকদের সম্মানে আয়োজিত ইফতারপূর্ব বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতি বছরের মতো এবারও কূটনৈতিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি। এতে কূটনীতিকদের সাথে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের সুশীল সমাজ, বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ও কর্মকর্তারা অংশ নেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিশ্ব জানে, বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারি যা ঘটেছিল তা কোনো নির্বাচন নয় বরং জাতির গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার জন্য তা অপমানজনক।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শাসকগোষ্ঠীর দ্বারা সংঘটিত নির্লজ্জ কারচুপি, অনিয়ম ও সহিংসতা গণমাধ্যমের প্রতিবেদন, ছবি, ঘটনাস্থলে ধারণ করা রিয়েল টাইম ভিডিও এবং সারাদেশের নির্বাচনী কৌশল প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট হয়েছে এই নির্বাচনের চিত্র। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই ডামি নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে।’

ফখরুল বলেন, ‘এই নির্বাচন একটি অত্যন্ত মেরুকৃত রাজনৈতিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন হয়েছে প্রহসনমূলক, যেখানে প্রকৃত প্রতিযোগিতার অভাব ছিল। এ কারণে এ নির্বাচন মূল আন্তর্জাতিক মান পূরণ করে না। এদিকে সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে।’

কূটনীতিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অধিকার ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনকে আমরা গভীরভাবে মূল্যায়ন করি। যার মধ্য দিয়ে প্রকৃতভাবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিশ্চিত করা যেতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা এটা অর্জন করতে না পারি, জনগণের শান্তিপূর্ণ ও অসহিংস আন্দোলন চলবে।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর অমানবিক হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিএনপি গভীরভাবে অবহিত বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ও জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি উল্লেখ করেন, দুই রাষ্ট্র কৌশলই এ সংকটের সমাধান হতে পারে।

গাজায় গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক নিরীহ বেসামরিক জনগণের ওপর পরিচালিত অমানবিক হত্যাকাণ্ডে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতিসঙ্ঘকে এই গণহত্যা বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাই। আমরা বিশ্বাস করি দুই রাষ্ট্রীয় নীতিই এর সঠিক সমাধান।’

ফখরুল বলেন, ‘মানুষে মানুষে সম্পর্ক হলো সেই ভিত্তি যার ওপর স্থায়ী সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সংস্কৃতি, ধারণা এবং অভিজ্ঞতার আদান-প্রদানের মাধ্যমেই আমরা সীমানা অতিক্রম করতে পারি এবং শ্রদ্ধা ও সংহতির মূলে থাকা একটি বিশ্ব সম্প্রদায়কে গড়ে তুলতে পারি।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- কানাডার হাই কমিশনার মিসেস লিলি নিকোলস, ব্রিটিশ হাই কমিশনার মিসেস সারা কুক, আমেরিকার দ্যা চার্জ আফেয়ার্স হেলেন লাফাভ, পাকিস্তান দূতাবাসের সৈয়দ আহমদ মারুফ, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নারদির সিম্পসন, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রাকস্টার, ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশন ড. বিনয় জর্জ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের চার্জ দ্যা আফেয়ার্স ড. ব্রেন্ড স্প্যানিয়ার, চীনের ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর ইয়ান হুয়ালং, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েস্বর চন্দ্র রায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।

এছাড়া জাতিসঙ্ঘ, এনডিআই, আইআরআইসহ ৩৮টি দেশের প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।