নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ ও সরকারকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো এবং ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দৈনিক সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, অভ্যুত্থান এবং সরকারকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এমনকি আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ষড়যন্ত্র হচ্ছে। পাশের দেশের বিভিন্ন মিডিয়াতেও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এই অপপ্রচারকে কাউন্টার দেয়ার জন্য এবং প্রকৃত সত্য তুলে ধরার জন্য গণমাধ্যমসহ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তথ্যের অবাধ প্রবাহের ওপর গুরুত্বারোপ করে নাহিদ বলেন, গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোনো চাপ নেই। এ স্বাধীনতাকে কাজে লাগিয়ে গণমাধ্যমকে সাহসের সঙ্গে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। সঠিক তথ্য ব্যাপকভাবে প্রচার না হওয়ায় গুজব ও অপতথ্যে মানুষ প্রতিনিয়ত বিভ্রান্ত হচ্ছে। গুজব ও অপতথ্য প্রতিরোধে গণমাধ্যমকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গণমাধ্যমের ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন, তাদের ত্যাগের গল্প গণমাধ্যমে প্রচার করতে হবে। আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের জনস্মৃতিতে রাখতে গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সমালোচনা করে উপদেষ্টা বলেন, ওই সময় অনেক গণমাধ্যমকর্মী ভয়ে সত্য ঘটনা প্রকাশ করতে পারেননি। এখন সেই সময় কেটে গেছে।
উপদেষ্টা ফ্যাসিবাদী সরকারের গুম, দুর্নীতি-সহ সব অপকর্মের তথ্য গণমাধ্যমে প্রচারের জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
গণমাধ্যমের গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সরকার গণমাধ্যমের কার্যকর ভূমিকা প্রত্যাশা করে।
গণমাধ্যমের সংস্কার প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, সরকার গণমাধ্যমের সংস্কারের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কমিশন গঠন করেছে। কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গণমাধ্যমের সংস্কার করা হবে।
মতবিনিময় সভায় পত্রিকার সম্পাদকরা বলেন, বর্তমান সময়ে গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই, যা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য আশীর্বাদ। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের কার্যকর ভূমিকা রয়েছে।
গত ১৬ বছর গণমাধ্যম সঠিক ভূমিকা পালন করলে দেশে ফ্যাসিবাদের উত্থান হতো না। মতবিনিময় সভায় ইংরেজি পত্রিকার জন্য আলাদা নীতিমালা প্রণয়নেরও দাবি ওঠে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ এবং দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।