Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে এবারের নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাইলফলক হবে : চীন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী রোবাবর (৭ জানুয়ারি)। এই নির্বাচন নিয়ে চীন বলছে, আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য একটি মাইলফলক হবে। অন্যদিকে, ভারত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছে।

নির্বাচনটি আন্তর্জাতিকভাবে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে, তা নিয়ে অনেকেরই সংশয় রয়েছে। এমনকি নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমানও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্ভাব্য পদক্ষেপের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন ভোট ভালো না হলে ভবিষ্যৎও খুব একটা ভালো হবে না।

চীন আশা করছে, নির্বাচন নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আশা করি, এটি একটি সফল ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতার জন্য একটি মাইলফলক হবে।’ তিনি বলেন, তারা (চীন) আশা করছেন, নির্বাচন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচনের পর বাংলাদেশ ‘শক্তিশালী, আরও স্থিতিশীল ও ঐক্যবদ্ধ’ হবে।

একইদিন নয়া দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ধারাবাহিকভাবে বলে আসছি—বাংলাদেশের নির্বাচন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণই তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।

নবনিযুক্ত মুখপাত্র বলেন, আমরা ঠিক সেখানেই আছি। গত সংবাদ সম্মেলনেও এই প্রশ্ন করা হয়েছিল। আমার আগে যিনি ছিলেন, তিনিও এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। সুতরাং বিষয়টি আমি এই অবস্থাতেই রেখে দিচ্ছি।’

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, তারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। তিনি বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকবার বিষয়টি পরিষ্কার করে বলেছি। আমরা খুব নিবিড়ভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করব।’

মিলার বলেন, যে কোনো অগ্রগতিতে তারা কী পদক্ষেপ নিতে পারেন বা নাও নিতে পারেন সে সম্পর্কে তিনি কখনোই অনুমান করবেন না।

জাতিসংঘ বলেছে, তারা বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া ‘নিবিড়ভাবে’ পর্যবেক্ষণ করছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতো নিনো ৩ জানুয়ারি নিউ ইয়র্কে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশা করি, সব নির্বাচন স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠিত হবে।’

এদিকে ভোটের বিষয়ে গতকাল কূটনীতিকদের সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্রিফ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ব্রিফিংয়ে চীন, রাশিয়া, জাপানসহ পশ্চিমা বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা থাকলেও মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা উপস্থিত ছিলেন না। তবে দুজনই দূতাবাস থেকে প্রতিনিধি পাঠান।

ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।

চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, আমি মনে করি, এটা সফল নির্বাচন হবে। এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্যও মাইলফলক হবে। নির্বাচন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হলে বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী হবে।

জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার বলেন, শুরু থেকে আমার অনুধাবন হচ্ছে তারা (ইসি) সাধ্যমতো কাজ করার চেষ্টা করছে। আমি মনে করি, তারা বেশ গুরুত্বসহকারে কঠোর পরিশ্রম করছেন।

ইইউ রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বলেন, নির্বাচন কমিশন ভোটের সর্বশেষ পরিস্থিতি আমাদেরকে অবহিত করেছে।

২০১৪ সালের মতো এবারের নির্বাচনও বয়কট করেছে আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। দলটি এখন তাদের সমর্থকদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়া এবং ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানাচ্ছে।

বিএনপির নির্বাচন বয়কটের ব্যাপারে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতো নিনোর কাছে বুধবার প্রশ্ন করেছিলেন এক সাংবাদিক। তার প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তাদের কোনো কিছু বলার নেই। জাতিসংঘ চায় বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। তারা এ বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।

বাংলাদেশের একটি পত্রিকার ওই সাংবাদিক জাতিসংঘের মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়াকে প্রশ্ন করে বলেন, ‘আপনি জানেন বাংলাদেশে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের জন্য ৪৪টি রাজনৈতিক দলের ২৮টির ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী নির্বাচন করছেন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ৪০০ বিদেশি পর্যবেক্ষক অবস্থান করছেন। এমন একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বদলে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন বয়কটের কর্মসূচি দিয়েছে। জাতিসংঘের কি এ ব্যাপারে কোনো পর্যবেক্ষণ আছে?

জবাবে সংস্থাটির মুখপাত্র বলেন, না আমাদের নেই। আমরা শুধুমাত্রৃ আমরা শুধুমাত্র নির্বাচন প্রক্রিয়াটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা আশা করি নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে। আমাদের এখন এতটুকুই বলার আছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চাঁদাবাজি নয়, ভাঙারি দোকান দখল দ্বন্দ্বেই মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: ডিএমপি

বাংলাদেশে এবারের নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাইলফলক হবে : চীন

প্রকাশের সময় : ০৬:১০:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী রোবাবর (৭ জানুয়ারি)। এই নির্বাচন নিয়ে চীন বলছে, আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য একটি মাইলফলক হবে। অন্যদিকে, ভারত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছে।

নির্বাচনটি আন্তর্জাতিকভাবে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে, তা নিয়ে অনেকেরই সংশয় রয়েছে। এমনকি নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমানও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্ভাব্য পদক্ষেপের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন ভোট ভালো না হলে ভবিষ্যৎও খুব একটা ভালো হবে না।

চীন আশা করছে, নির্বাচন নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আশা করি, এটি একটি সফল ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতার জন্য একটি মাইলফলক হবে।’ তিনি বলেন, তারা (চীন) আশা করছেন, নির্বাচন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচনের পর বাংলাদেশ ‘শক্তিশালী, আরও স্থিতিশীল ও ঐক্যবদ্ধ’ হবে।

একইদিন নয়া দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ধারাবাহিকভাবে বলে আসছি—বাংলাদেশের নির্বাচন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণই তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।

নবনিযুক্ত মুখপাত্র বলেন, আমরা ঠিক সেখানেই আছি। গত সংবাদ সম্মেলনেও এই প্রশ্ন করা হয়েছিল। আমার আগে যিনি ছিলেন, তিনিও এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। সুতরাং বিষয়টি আমি এই অবস্থাতেই রেখে দিচ্ছি।’

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, তারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। তিনি বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকবার বিষয়টি পরিষ্কার করে বলেছি। আমরা খুব নিবিড়ভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করব।’

মিলার বলেন, যে কোনো অগ্রগতিতে তারা কী পদক্ষেপ নিতে পারেন বা নাও নিতে পারেন সে সম্পর্কে তিনি কখনোই অনুমান করবেন না।

জাতিসংঘ বলেছে, তারা বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া ‘নিবিড়ভাবে’ পর্যবেক্ষণ করছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতো নিনো ৩ জানুয়ারি নিউ ইয়র্কে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশা করি, সব নির্বাচন স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠিত হবে।’

এদিকে ভোটের বিষয়ে গতকাল কূটনীতিকদের সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্রিফ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ব্রিফিংয়ে চীন, রাশিয়া, জাপানসহ পশ্চিমা বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা থাকলেও মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা উপস্থিত ছিলেন না। তবে দুজনই দূতাবাস থেকে প্রতিনিধি পাঠান।

ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।

চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, আমি মনে করি, এটা সফল নির্বাচন হবে। এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্যও মাইলফলক হবে। নির্বাচন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হলে বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী হবে।

জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার বলেন, শুরু থেকে আমার অনুধাবন হচ্ছে তারা (ইসি) সাধ্যমতো কাজ করার চেষ্টা করছে। আমি মনে করি, তারা বেশ গুরুত্বসহকারে কঠোর পরিশ্রম করছেন।

ইইউ রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বলেন, নির্বাচন কমিশন ভোটের সর্বশেষ পরিস্থিতি আমাদেরকে অবহিত করেছে।

২০১৪ সালের মতো এবারের নির্বাচনও বয়কট করেছে আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। দলটি এখন তাদের সমর্থকদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়া এবং ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানাচ্ছে।

বিএনপির নির্বাচন বয়কটের ব্যাপারে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতো নিনোর কাছে বুধবার প্রশ্ন করেছিলেন এক সাংবাদিক। তার প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তাদের কোনো কিছু বলার নেই। জাতিসংঘ চায় বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। তারা এ বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।

বাংলাদেশের একটি পত্রিকার ওই সাংবাদিক জাতিসংঘের মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়াকে প্রশ্ন করে বলেন, ‘আপনি জানেন বাংলাদেশে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের জন্য ৪৪টি রাজনৈতিক দলের ২৮টির ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী নির্বাচন করছেন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ৪০০ বিদেশি পর্যবেক্ষক অবস্থান করছেন। এমন একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বদলে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন বয়কটের কর্মসূচি দিয়েছে। জাতিসংঘের কি এ ব্যাপারে কোনো পর্যবেক্ষণ আছে?

জবাবে সংস্থাটির মুখপাত্র বলেন, না আমাদের নেই। আমরা শুধুমাত্রৃ আমরা শুধুমাত্র নির্বাচন প্রক্রিয়াটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা আশা করি নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে। আমাদের এখন এতটুকুই বলার আছে।