নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকায় সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে একটি ভালো নির্বাচন দেখতে চায় বলে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা কোনো বিষয়ে মধ্যস্থতা করতে আসেনি। তারা বাংলাদেশে একটা ভালো নির্বাচন দেখতে চায়। আমরাও বলেছি, অবধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠনে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।
সোমবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধি দলের বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় শুরু হওয়া বৈঠক চলে আড়াইটা পর্যন্ত।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে অবধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে অঙ্গীকার, সে বিষয়ে মার্কিন প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথা বয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মার্কিন প্রতিনিধিদলকে আওয়ামী লীগের অবস্থান ব্যাখ্যা করা হয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ নিয়েও কথা হয়েছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, মার্কিন প্রতিনিধি দলকে ইতিবাচক মনে হয়েছে, তাদের কথাবার্তা পজিটিভ মনে হয়, বায়াস মনে হয়নি। আমরা আমাদের টকশো, টেলিভিশনে দেখি উপস্থাপক পক্ষ নিয়ে ফেলে, কিন্তু এই প্রতিনিধি দল কারও পক্ষে মনে হয়নি। তারা ভায়োলেন্সের আশঙ্কা আছে কি না, পর্যবেক্ষণ করছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিসহ বিভিন্ন দল যা বলেছে, আমরা জবাবে তাদের জানিয়েছি। আইনের ভুল ব্যাখ্যা ও তথ্যের সঠিকতা নিয়েও জানিয়েছি। এমন এমন গুজব তারা ছড়িয়েছে, তার জবাব তো আমাদের দিতেই হয়।
তিনি বলেন, তারা এখানে মধ্যস্থতা করতে আসেনি। একটা অবাধ সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন চায়, আমরা বলেছি, এটা আমরাও করতে বদ্ধপরিকর।
তিনি আরও বলেন, তারা বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ মূল্যায়নের জন্য এসেছে। অন্যদের মতো আমাদের সঙ্গে বসেছে। নির্বাচন নিয়ে আমরা আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। তাদের সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণতান্ত্রিক চ্যালেঞ্জ নিয়েও কথা বলেছি। ৮২টি সংস্কার শেখ হাসিনার সরকার করেছে। অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে শেখ হাসিনার অঙ্গীকার জানিয়েছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনী ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তারা পরিস্থিতি জানতে চেয়েছে, আমাদের অবস্থান জানতে চেয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ এবং বাস্তব অবস্থা, কোনো ভায়োলেন্সের আশঙ্কা আছে কি না এসব বিষয় তারা পর্যবেক্ষণ করছেন।
প্রতিনিধি দল কোনো প্রস্তাব দিয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা কোনো প্রস্তাব দেয়নি, আলোচনায় উঠে এসেছে বিএনপির দাবি। তারা কথায় কথায় বলেছে আপনাদের মধ্যে কী এখনো কোনো কম্প্রোমাইজের পথ খোলা আছে কি না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার অ্যাডজাস্টমেন্টের কোনো সমাধান খুঁজে পাওয়া যায় কি না? আমরা বলেছি সেই পথ বিএনপি ব্লক করে রেখেছে।
কাদের বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচনের পরিবেশ, ভবিষ্যৎ গণতন্ত্র কীভাবে দেখছি এগুলো জানতে চেয়েছে, আমরা বলেছি।
দেশের ৭০ শতাংশ লোক শেখ হাসিনাকে ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছে এমন কথা প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়েছে জানিয়ে কাদের বলেন, বিএনপির দাবির মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া এগুলো উঠে এসেছে, আমরা বলেছি সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, প্রতিনিধি দল আমাদের বলেছে, তারা কোনো বিষয়ে মধ্যস্থতা করতে আসেননি। আমরাও বলেছি, আমরা একটি অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে জাতির কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা সেভাবেই কাজ করছি।
তিনি বলেন, তাদের কথাবার্তা পজিটিভ মনে হয়েছে। তারা কোনো পক্ষ নিয়ে এসেছে, এমন মনে হয়নি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রতিনিধি দলকে আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি। গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে জাতির কাছে প্রধানমন্ত্রীর যে অঙ্গীকার, তা আমরা প্রতিনিধিদের জানিয়েছি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কম্প্রোমাইজ ও অ্যাডজাস্টমেন্ট করার যে স্পেস, সেটা বিএনপি রাখেনি, ব্লক করে দিয়েছে। বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চায়। আমরা প্রতিনিধি দলের কাছে জানতে চেয়েছি, প্রধানমন্ত্রী কেন পদত্যাগ করবে?
তিনি বলেন, আইআরআই ও এনডিআই’র একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছে। নির্বাচনী পরিবেশ মূল্যায়নের জন্য এসেছে। তারা অন্যান্যদের মতো আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেখানে আমাদের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমরা আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। তাদের সঙ্গে শুধু বাংলাদেশ না, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ নিয়েও কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে ৮২টি সংস্কার শেখ হাসিনা সরকার করেছেন, সে ব্যাপারে আমরা কথা বলেছি। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনে দেশরত্ন শেখ হাসিনার যে অঙ্গীকার জাতির কাছে সে বিষয়েও আমরা কথা বলেছি।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ওবায়দুল কাদের। এতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত মুহাম্মদ ফারুক খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ডক্টর শাম্মী আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ডক্টর সেলিম মাহমুদ ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
নিজস্ব প্রতিবেদক 





















