Dhaka বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে উগ্রবাদ চলছে বলে ভারত অপপ্রচার চালাচ্ছে : নাহিদ ইসলাম

রংপুর জেলা প্রতিনিধি : 

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ভারত চায় বাংলাদেশে উগ্রবাদ চলুক, সেই পরিস্থিতি বিশ্বকে দেখাতে চায়। তাই ভারতে চলমান উগ্রবাদ ঢাকতে বাংলাদেশে উগ্রবাদ চলছে বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তাদের এ ধরনের অপপ্রচার সব সময় ছিল। আমাদের উচিত নিজেদের দিকে তাকানো। যেন সেই বিষয়গুলো কখনো না ঘটে, ঘটলে আমরা দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।’

শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আনন্দ র‌্যালি শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, রাজপথের পরাজিত শক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশকে নিয়ে মিথ্যা ও গুজব ছড়াচ্ছে। তারা ফেক আইডি খুলে এরকম গুজব ছড়াচ্ছে। আমাদের এসব বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে।

তিনি বলেন, অধিকার আদায়ের লড়াই করতে গিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদরা শহীদ হয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন। আবু সাঈদসহ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আজকে স্বাধীনতা ভোগ করছি। যে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়েছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বুকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

ভূ-রাজনৈতিক কারণে তিস্তা মহাপরিকল্পনা আটকে থাকার বিষয়ে বলেন, ‘অন্তর্বতীকালীন সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাস করে না। দেশের ন্যায্য ও সমতার ভিত্তিতে অন্য যে কোনো দেশের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক করব। দুমাস হয়েছে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। আমাদের সময় দিতে হবে কাজ করার জন্য। দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু রয়েছে, আহতদের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে কাজ করছি। আমরা ধীরে ধীরে সকল বিষয়ে মনোযোগ দেব।’

রংপুর বিভাগে বৈষম্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই মনে করি রংপুর বিভাগ দেশে দীর্ঘ সময় ধরে অবহেলিত রয়েছে। বিগত সময়ে রংপুরে যে পরিমাণ বাজেট দেওয়া হয়েছে, তার দ্বিগুণ-তিনগুণ বাজেট দেওয়া হয়েছে গোপালগঞ্জে। আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আমরা অবশ্যই যে অনুযায়ী কাজ করব। রংপুর বিভাগ থেকে বৈষম্য ও অবহেলা দূর করব।’

আবু সাঈদ সম্পর্কে তিনি বলেন, আজকের দিনে আমি আবু সাঈদকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করছি। আরও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি জুলাই বিপ্লবের সকল শহীদ ও আহতদের প্রতি। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শপথ নিতে চাই, আবু সাঈদ যে কারণে শহীদ হয়েছেন, গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্খা তারা ধারণ করেছিল, সেই আকাঙ্খাকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি ছাত্র ছিলেন, সেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার দিক থেকে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিয়ে যাব। আবু সাঈদকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো বাংলার ছাত্র সমাজের অগ্রসৈনিক হিসেবে সব সময় স্মরণ করা হবে।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যা নিয়ে নবনিযুক্ত উপাচার্য স্যারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। হলের সমস্যা রয়েছে, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সংকট রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা অবহেলিত থাকবে না। তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

এর আগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুল প্রতীক্ষিত প্রধান ফটকের উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বের হওয়া একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালিতে অংশ নেন তিনি। এরপর ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপন করেন উপদেষ্টা।

বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীম উদ্দিন খান, শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন, ১৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. তাজুল ইসলামসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিনরা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাবনায় সেপটিক ট্যাংকে আটকা পড়ে দুই নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যু

বাংলাদেশে উগ্রবাদ চলছে বলে ভারত অপপ্রচার চালাচ্ছে : নাহিদ ইসলাম

প্রকাশের সময় : ০৩:০৫:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪

রংপুর জেলা প্রতিনিধি : 

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ভারত চায় বাংলাদেশে উগ্রবাদ চলুক, সেই পরিস্থিতি বিশ্বকে দেখাতে চায়। তাই ভারতে চলমান উগ্রবাদ ঢাকতে বাংলাদেশে উগ্রবাদ চলছে বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তাদের এ ধরনের অপপ্রচার সব সময় ছিল। আমাদের উচিত নিজেদের দিকে তাকানো। যেন সেই বিষয়গুলো কখনো না ঘটে, ঘটলে আমরা দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।’

শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আনন্দ র‌্যালি শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, রাজপথের পরাজিত শক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশকে নিয়ে মিথ্যা ও গুজব ছড়াচ্ছে। তারা ফেক আইডি খুলে এরকম গুজব ছড়াচ্ছে। আমাদের এসব বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে।

তিনি বলেন, অধিকার আদায়ের লড়াই করতে গিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদরা শহীদ হয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন। আবু সাঈদসহ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আজকে স্বাধীনতা ভোগ করছি। যে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়েছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বুকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

ভূ-রাজনৈতিক কারণে তিস্তা মহাপরিকল্পনা আটকে থাকার বিষয়ে বলেন, ‘অন্তর্বতীকালীন সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাস করে না। দেশের ন্যায্য ও সমতার ভিত্তিতে অন্য যে কোনো দেশের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক করব। দুমাস হয়েছে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। আমাদের সময় দিতে হবে কাজ করার জন্য। দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু রয়েছে, আহতদের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে কাজ করছি। আমরা ধীরে ধীরে সকল বিষয়ে মনোযোগ দেব।’

রংপুর বিভাগে বৈষম্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই মনে করি রংপুর বিভাগ দেশে দীর্ঘ সময় ধরে অবহেলিত রয়েছে। বিগত সময়ে রংপুরে যে পরিমাণ বাজেট দেওয়া হয়েছে, তার দ্বিগুণ-তিনগুণ বাজেট দেওয়া হয়েছে গোপালগঞ্জে। আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আমরা অবশ্যই যে অনুযায়ী কাজ করব। রংপুর বিভাগ থেকে বৈষম্য ও অবহেলা দূর করব।’

আবু সাঈদ সম্পর্কে তিনি বলেন, আজকের দিনে আমি আবু সাঈদকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করছি। আরও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি জুলাই বিপ্লবের সকল শহীদ ও আহতদের প্রতি। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শপথ নিতে চাই, আবু সাঈদ যে কারণে শহীদ হয়েছেন, গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্খা তারা ধারণ করেছিল, সেই আকাঙ্খাকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি ছাত্র ছিলেন, সেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার দিক থেকে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিয়ে যাব। আবু সাঈদকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো বাংলার ছাত্র সমাজের অগ্রসৈনিক হিসেবে সব সময় স্মরণ করা হবে।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যা নিয়ে নবনিযুক্ত উপাচার্য স্যারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। হলের সমস্যা রয়েছে, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সংকট রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা অবহেলিত থাকবে না। তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

এর আগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুল প্রতীক্ষিত প্রধান ফটকের উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বের হওয়া একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালিতে অংশ নেন তিনি। এরপর ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপন করেন উপদেষ্টা।

বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীম উদ্দিন খান, শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন, ১৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. তাজুল ইসলামসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিনরা।