Dhaka বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে অসহযোগিতা করলে ভারতই ক্ষতির মুখে পড়বে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত

সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি : 

নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে অসহযোগিতা করলে ভারতই ক্ষতির মুখে পড়বে।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ভারত তো আমাদের কাছ থেকে বিনা পয়সায় মালামাল দেয় না। পয়সা নিয়েই দেয়। তারা যদি মনে করে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করবে, করুক। তারা গরু বন্ধ করেছে। তাই বলে কি আমরা এখন গরু খাচ্ছি না। ব্যবসা বন্ধ করলে ভারতই অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে আর্থিক ক্ষতির কথা চিন্তা করে তারা রপ্তানি বন্ধ করবে বলে আমার মনে হয় না। যা হচ্ছে, তা সবই রাজনৈতিক।’

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দুই দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের সঙ্গে লাখ লাখ মানুষ জড়িত। রাজনৈতিক অবরোধ বিভিন্ন সময়ে দুই পাশেই হয়ে থাকে। এ কারণে দুই-এক দিনের সমস্যা হতে পারে। তবে ভারতের ব্যবসায়ীরা এসব মেনে নেবে না। তারা এই বাজারটাকে নষ্ট করবে না। তাই আমাদের চিন্তা করার কোনো কারণ নেই, ব্যবসা নষ্ট করলে তাদের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের দাবিতে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত অবরোধের ঘোষণার প্রেক্ষিতে সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, এতে ক্ষতিগ্রস্ত কি আমরা একা হবো, না ভারতও হবে? আমরা যদি দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ বৃহত্তম ব্যবসায়িক কেন্দ্র হয়ে থাকি ভারতের জন্য, আবার অনেকে বলে সেকেন্ড। বাণিজ্য যদি তারা বন্ধ করে দেয়, বন্ধ করুক।

এ সময় ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের অপপ্রচারের বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা তাদের মিডিয়া চালানোর জন্য যেটি করছে এতে আমাদের চেয়ে তাদের ক্ষতি হচ্ছে বেশি। এদেশের মানুষ ভারতের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় মিডিয়ার যারা এটা করছেন, তারা হয়তো তাদের টিআরপি বাড়াচ্ছেন। কিন্তু অন্যদিকে যে কমে যাচ্ছে সেটা আর খেয়াল করছে না। তবে এটা আর কয়দিন চলবে?

জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে নৌ উপদেষ্টা বলেন, ৫০ বছর বা ৫২ বছরের বাংলাদেশে আপনারা শুনেছেন যেসব দল এক জায়গায় বসে কথা বলেছে? আপনিও শোনেননি, আমার বয়স বেশি আমিও দেখিনি। রাজনীতিবিদরা আলটিমেটলি দেশ চালাবে, আজকে হোক কালকে হোক, সে জায়গাতে যদি রাজনীতিবিদদের মধ্যে ঐক্যমত না হয়, তাহলে জাতীয় যে পথ নির্ধারণ করার দরকার সেটা তখন এলোমেলো হয়ে যায়। এক দল এক রকম বলবে, আরেক দল আপত্তি করবে, এখন যেহেতু সবাই একত্র বসেছে, এরপর তো আমাদের ধর্মীয় নেতারা তারাও একসঙ্গে বসেছেন। এটা একটা বড় অর্জন। এটা একটা উদাহরণ হলো।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ভোমরা স্থলবন্দরে পৌঁছান তিনি। এরপর ভোমরা ইমিগ্রেশন পরিদর্শন করেন। সেখানে ভারত ও বাংলাদেশের পাসপোর্ট যাত্রীদের কোনো হয়রানি হয় কি না, সে বিষয়ে সার্বিক খোঁজখবর নেন। পরে তিনি ভোমরা কাস্টমসের যাত্রীদের লাগেজ স্ক্যানার মেশিন, স্থলবন্দরের পণ্য পরিমাপ স্কেলসহ বন্দরের বিভিন্ন সেড পরিদর্শন করেন। এরপর ভোমরা স্থলবন্দরের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ স্থলবন্দর আয়োজিত ভোমরা স্থলবন্দরের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, যশোর বিজিবি সদর দফতরের রিজন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, সাতক্ষীরা ৩৩ ব্যাটালিয়ন বিজিবি’র অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশরাফুল হক, ভোমরা কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার আবুল কালাম আজাদ, ভোমরা স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিন, ভোমরা সি এন্ডএফ এসোসিয়েশনের সভাপতি আবু হাসান, সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা, ভোমরা আমদানি রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

এইচএসসির স্থগিত পরীক্ষার নতুন সময়সূচি প্রকাশ

বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে অসহযোগিতা করলে ভারতই ক্ষতির মুখে পড়বে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৯:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি : 

নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে অসহযোগিতা করলে ভারতই ক্ষতির মুখে পড়বে।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ভারত তো আমাদের কাছ থেকে বিনা পয়সায় মালামাল দেয় না। পয়সা নিয়েই দেয়। তারা যদি মনে করে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করবে, করুক। তারা গরু বন্ধ করেছে। তাই বলে কি আমরা এখন গরু খাচ্ছি না। ব্যবসা বন্ধ করলে ভারতই অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে আর্থিক ক্ষতির কথা চিন্তা করে তারা রপ্তানি বন্ধ করবে বলে আমার মনে হয় না। যা হচ্ছে, তা সবই রাজনৈতিক।’

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দুই দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের সঙ্গে লাখ লাখ মানুষ জড়িত। রাজনৈতিক অবরোধ বিভিন্ন সময়ে দুই পাশেই হয়ে থাকে। এ কারণে দুই-এক দিনের সমস্যা হতে পারে। তবে ভারতের ব্যবসায়ীরা এসব মেনে নেবে না। তারা এই বাজারটাকে নষ্ট করবে না। তাই আমাদের চিন্তা করার কোনো কারণ নেই, ব্যবসা নষ্ট করলে তাদের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের দাবিতে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত অবরোধের ঘোষণার প্রেক্ষিতে সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, এতে ক্ষতিগ্রস্ত কি আমরা একা হবো, না ভারতও হবে? আমরা যদি দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ বৃহত্তম ব্যবসায়িক কেন্দ্র হয়ে থাকি ভারতের জন্য, আবার অনেকে বলে সেকেন্ড। বাণিজ্য যদি তারা বন্ধ করে দেয়, বন্ধ করুক।

এ সময় ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের অপপ্রচারের বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা তাদের মিডিয়া চালানোর জন্য যেটি করছে এতে আমাদের চেয়ে তাদের ক্ষতি হচ্ছে বেশি। এদেশের মানুষ ভারতের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় মিডিয়ার যারা এটা করছেন, তারা হয়তো তাদের টিআরপি বাড়াচ্ছেন। কিন্তু অন্যদিকে যে কমে যাচ্ছে সেটা আর খেয়াল করছে না। তবে এটা আর কয়দিন চলবে?

জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে নৌ উপদেষ্টা বলেন, ৫০ বছর বা ৫২ বছরের বাংলাদেশে আপনারা শুনেছেন যেসব দল এক জায়গায় বসে কথা বলেছে? আপনিও শোনেননি, আমার বয়স বেশি আমিও দেখিনি। রাজনীতিবিদরা আলটিমেটলি দেশ চালাবে, আজকে হোক কালকে হোক, সে জায়গাতে যদি রাজনীতিবিদদের মধ্যে ঐক্যমত না হয়, তাহলে জাতীয় যে পথ নির্ধারণ করার দরকার সেটা তখন এলোমেলো হয়ে যায়। এক দল এক রকম বলবে, আরেক দল আপত্তি করবে, এখন যেহেতু সবাই একত্র বসেছে, এরপর তো আমাদের ধর্মীয় নেতারা তারাও একসঙ্গে বসেছেন। এটা একটা বড় অর্জন। এটা একটা উদাহরণ হলো।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ভোমরা স্থলবন্দরে পৌঁছান তিনি। এরপর ভোমরা ইমিগ্রেশন পরিদর্শন করেন। সেখানে ভারত ও বাংলাদেশের পাসপোর্ট যাত্রীদের কোনো হয়রানি হয় কি না, সে বিষয়ে সার্বিক খোঁজখবর নেন। পরে তিনি ভোমরা কাস্টমসের যাত্রীদের লাগেজ স্ক্যানার মেশিন, স্থলবন্দরের পণ্য পরিমাপ স্কেলসহ বন্দরের বিভিন্ন সেড পরিদর্শন করেন। এরপর ভোমরা স্থলবন্দরের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ স্থলবন্দর আয়োজিত ভোমরা স্থলবন্দরের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, যশোর বিজিবি সদর দফতরের রিজন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, সাতক্ষীরা ৩৩ ব্যাটালিয়ন বিজিবি’র অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশরাফুল হক, ভোমরা কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার আবুল কালাম আজাদ, ভোমরা স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিন, ভোমরা সি এন্ডএফ এসোসিয়েশনের সভাপতি আবু হাসান, সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা, ভোমরা আমদানি রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী প্রমুখ।