Dhaka বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে জমিদারি প্রথা ভেঙে ফেলতে হবে : ভিপি নুর

ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি : 

বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশে রাজনীতির যে জমিদারি প্রথা চলে আসছে তা ভেঙে ফেলতে হবে। মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রী, এমপির ছেলে এমপি হবে এটা চলতে দেওয়া যাবে না। এজন্য আমরা পরিবর্তনের রাজনীতি নিয়ে মাঠে নেমেছি।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের উজির আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ভিপি নুর বলেন, গত পাঁচ দশকে যারাই ক্ষমতায় গেছেন, তারাই দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা আমেরিকা, লন্ডন, কানাডা, মালেশিয়া ও সিঙ্গাপুরে পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার থেকে শুরু করে প্রাইমারি স্কুলের পিয়ন সবাই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গণ অধিকার পরিষদ দুর্নীতির মূল উৎপাটন করে সমৃদ্ধশালী দেশ ও জাতি গঠনে মাঠে নেমেছে।

প্রশাসনে এখনো ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা রয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করলে কাউকে ছাড়া হবে না। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাতে ঝিনাইদহ গণ অধিকার পরিষদ এই গণসমাবেশের আয়োজন করে।

নুরুল হক নুর অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমাদের তাড়া নেই। সরকারকে জনগণের পালস বুঝতে হবে। প্রশাসনে এখনো আওয়ামী প্রেতাত্মারা রয়ে গেছে। দেশের জনগণ আস্থা-বিশ্বাস নিয়ে আপনাদের চেয়ারে বসিয়েছে। যদি চালাতে না পারেন, দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিন। দেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান আমরা দেখতে চাই না।

গত আড়াই মাসে অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি বলেও অভিযোগ করেন নুর। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করলে কাউকে ছাড়া হবে না।

পতিত স্বৈরাচারের সমালোচনা করে ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, শেষ সময়ে এসে ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনা মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। সে কারণেই তিনি বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জেলে পাঠাতে চেয়েছিলেন। ক্ষমতায় থাকতে খুনি শেখ হাসিনা বলেতেন, তিনি নাকি দেশের মানুষকে খাবার দিতেন, ঘরে ঘরে টেলিভিশন দিয়েছেন, হাতে হাতে মোবাইল ফোন দিয়েছেন। এসব কথা বলে তিনি মানসিক রোগীর মত কর্মকাণ্ড করেছেন। অথচ পালানোর সময় জুতা পর্যন্ত পায়ে দিতে পারেননি। ক্ষমতার লোভে তিনি মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন।

নুরুল হক নুর বলেন, মানুষের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে আমরা বারবার হামলার শিকার হয়েছি। এখন মানুষ মুক্ত ও স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছে। এই পরিবর্তন ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। আগে আমাদের নিজেদের পরিবর্তন হতে হবে, তারপর দেশের পরিবর্তন ঘটবে। আগস্ট বিপ্লবের এই নতুন স্বাধীনতা আমাদের নতুন স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে। আমরা আর কোনো দেশের দাসত্ব করতে চাই না। বাংলাদেশ সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ৫ দশক ধরে যে রাজনীতি চলেছে তা গণমানুষের রাজনীতি ছিল না, শত শত কোটি থেকে হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে, ভাগবাটোয়ারার জায়গা সবাই একছিলো। ওসি-এসপি, ইউএনও-ডিসিদের পরিষ্কার বলছি, আমাদের রক্তের উপর দিয়ে আপনাদের নিয়োগ-পদোন্নতি হচ্ছে, একজন ভিক্ষুক, মুটে-মুজুরও যেন আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। রাজনীতিতে জমিদারি প্রথা গড়ে উঠেছিল, এমপির ছেলে এমপি ,মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রী, নেতার ছেলে নেতা।

অন্তর্র্বতী সরকার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আজকের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসকে শেখ হাসিনা জেলে রাখার সমস্ত বন্দোবস্ত করেছিল, তাকে ফেলে দিতে চেয়েছেন, খালেদা জিয়াকে ফেলে দিতে চেয়েছিল, আল্লাহর কি লিখন, তাকেই পালাতে হয়েছে, ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী জুতা রেখে পালিয়েছেন।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও গণ অধিকার পরিষদের জেলা সভপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসান আর মামুন, শাকিলউজ্জামান, অ্যাডভোকেট নূরে এরশাদ সিদ্দিকী, মাজেদুল হক, গোলাম সরোয়ার, জাহিদুর রহমান, তৌফিক শাহরিয়ার খান, রবিউল ইমলাম, খুলনার সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল, রাজশাহীর সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন কবির, তোফাজ্জেল হোসেন, বরিশালের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খালিদ হাসান, মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোক্তারুজ্জাম বেলু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বিল্লাল হোসেন প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ঘোষণাপত্রে ছাড় দিয়েছি, জুলাই সনদে একটুও ছাড় নয় : নাহিদ ইসলাম

বাংলাদেশের রাজনীতিতে জমিদারি প্রথা ভেঙে ফেলতে হবে : ভিপি নুর

প্রকাশের সময় : ১০:০৭:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি : 

বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশে রাজনীতির যে জমিদারি প্রথা চলে আসছে তা ভেঙে ফেলতে হবে। মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রী, এমপির ছেলে এমপি হবে এটা চলতে দেওয়া যাবে না। এজন্য আমরা পরিবর্তনের রাজনীতি নিয়ে মাঠে নেমেছি।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের উজির আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ভিপি নুর বলেন, গত পাঁচ দশকে যারাই ক্ষমতায় গেছেন, তারাই দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা আমেরিকা, লন্ডন, কানাডা, মালেশিয়া ও সিঙ্গাপুরে পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার থেকে শুরু করে প্রাইমারি স্কুলের পিয়ন সবাই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গণ অধিকার পরিষদ দুর্নীতির মূল উৎপাটন করে সমৃদ্ধশালী দেশ ও জাতি গঠনে মাঠে নেমেছে।

প্রশাসনে এখনো ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা রয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করলে কাউকে ছাড়া হবে না। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাতে ঝিনাইদহ গণ অধিকার পরিষদ এই গণসমাবেশের আয়োজন করে।

নুরুল হক নুর অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমাদের তাড়া নেই। সরকারকে জনগণের পালস বুঝতে হবে। প্রশাসনে এখনো আওয়ামী প্রেতাত্মারা রয়ে গেছে। দেশের জনগণ আস্থা-বিশ্বাস নিয়ে আপনাদের চেয়ারে বসিয়েছে। যদি চালাতে না পারেন, দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিন। দেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান আমরা দেখতে চাই না।

গত আড়াই মাসে অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি বলেও অভিযোগ করেন নুর। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করলে কাউকে ছাড়া হবে না।

পতিত স্বৈরাচারের সমালোচনা করে ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, শেষ সময়ে এসে ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনা মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। সে কারণেই তিনি বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জেলে পাঠাতে চেয়েছিলেন। ক্ষমতায় থাকতে খুনি শেখ হাসিনা বলেতেন, তিনি নাকি দেশের মানুষকে খাবার দিতেন, ঘরে ঘরে টেলিভিশন দিয়েছেন, হাতে হাতে মোবাইল ফোন দিয়েছেন। এসব কথা বলে তিনি মানসিক রোগীর মত কর্মকাণ্ড করেছেন। অথচ পালানোর সময় জুতা পর্যন্ত পায়ে দিতে পারেননি। ক্ষমতার লোভে তিনি মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন।

নুরুল হক নুর বলেন, মানুষের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে আমরা বারবার হামলার শিকার হয়েছি। এখন মানুষ মুক্ত ও স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছে। এই পরিবর্তন ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। আগে আমাদের নিজেদের পরিবর্তন হতে হবে, তারপর দেশের পরিবর্তন ঘটবে। আগস্ট বিপ্লবের এই নতুন স্বাধীনতা আমাদের নতুন স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে। আমরা আর কোনো দেশের দাসত্ব করতে চাই না। বাংলাদেশ সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ৫ দশক ধরে যে রাজনীতি চলেছে তা গণমানুষের রাজনীতি ছিল না, শত শত কোটি থেকে হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে, ভাগবাটোয়ারার জায়গা সবাই একছিলো। ওসি-এসপি, ইউএনও-ডিসিদের পরিষ্কার বলছি, আমাদের রক্তের উপর দিয়ে আপনাদের নিয়োগ-পদোন্নতি হচ্ছে, একজন ভিক্ষুক, মুটে-মুজুরও যেন আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। রাজনীতিতে জমিদারি প্রথা গড়ে উঠেছিল, এমপির ছেলে এমপি ,মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রী, নেতার ছেলে নেতা।

অন্তর্র্বতী সরকার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আজকের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসকে শেখ হাসিনা জেলে রাখার সমস্ত বন্দোবস্ত করেছিল, তাকে ফেলে দিতে চেয়েছেন, খালেদা জিয়াকে ফেলে দিতে চেয়েছিল, আল্লাহর কি লিখন, তাকেই পালাতে হয়েছে, ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী জুতা রেখে পালিয়েছেন।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও গণ অধিকার পরিষদের জেলা সভপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসান আর মামুন, শাকিলউজ্জামান, অ্যাডভোকেট নূরে এরশাদ সিদ্দিকী, মাজেদুল হক, গোলাম সরোয়ার, জাহিদুর রহমান, তৌফিক শাহরিয়ার খান, রবিউল ইমলাম, খুলনার সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল, রাজশাহীর সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন কবির, তোফাজ্জেল হোসেন, বরিশালের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খালিদ হাসান, মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোক্তারুজ্জাম বেলু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বিল্লাল হোসেন প্রমুখ।