নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যদি ভারত পদক্ষেপ নেয় তা হবে দুঃখজনক, এই অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য শুভ হবে না বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনাকে দুর্বল করলে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভালো হবে না দিল্লির এমন বার্তা নিয়ে গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশ তাদের কাছে অপ্রত্যাশিত যদি এই নিউজ সত্যি হয়ে থাকে, আশা করবো ভারত বাংলাদেশের মানুষের যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা তাকে মর্যাদা দেবে, সত্যিকার অর্থে সকল দলের অংশগ্রহণে যাতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয় সে বিষয়ে সমর্থন দেবে।
ফখরুল আরো বলেন, দেশে কোনো মৌলবাদী দল কখনো ক্ষমতায় আসেনি, ভবিষ্যতেও আসতে পারবে না। জনগণের অধিকার রক্ষায় দেশের মানুষ জেগে উঠেছে, কোনো শক্তিই এই গণজোয়ার ঠেকাতে পারবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশে কোনো মৌলবাদী দলের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে দেখা গেছে, কখনোই কোনো মৌলবাদী দল ক্ষমতায় আসতে পারেনি। বরং তাদের যে শক্তি তা দিন দিন ক্ষীয়মান হয়ে এসেছে।
বিএনপি নেতা বলেন, আমরা বাংলাদেশের মানুষের আস্থার ওপর আস্থা রাখি। তাদের শক্তির ওপর আস্থা রাখি।
ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে তারা মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করেছে। এই সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করেছে এবং এখন বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করে তারা একটা রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, দেশের জনগণ আজকে এক হয়েছে, সব দলগুলো এক হয়েছে, তারা তাদের অধিকার-ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য লড়াই শুরু করেছে। এই একদফা লড়াইয়ে নিশ্চয়ই জনগণ জয়ী হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য যুদ্ধ করেছিলাম, সেই স্বপ্ন এই লুটেরা, ফ্যাসিস্ট সরকার তাদের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করতে সব গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে হরণ করে নিয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেছে, বিচারবিভাগের স্বাধীনতা হরণ করেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে তারা ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, আজকে এই অবস্থা থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে দেশের সব জনগণ এবং সব দলগুলো আজ এক দফা দাবিতে সরকারের পদত্যাগ সংসদ বিলুপ্ত করা এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন এবং নতুন পার্লামেন্ট গঠনের শপথ নিয়েছে। সেই লক্ষে রাজপথে তাদের আন্দোলন বেগবান করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় যে নেতা যিনি জিয়াউর রহমানের শাহাদতের পর থেকে এই দেশের গণতন্ত্রের প্রতীক হয়ে সারা দেশকে জাগিয়ে তুলেছেন, স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছেন, তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ফখরুদ্দিন, মহিউদ্দিনের সরকার যারা জোর করে ক্ষমতা দখল করেছিল তাদের বিরুদ্ধে নিরব সংগ্রাম করেছিল। তার পরে আজকের এই আওয়ামী লীগ সরকার, অবৈধ সরকার যারা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায় তারা মিথ্যে মামলা দিয়ে দীর্ঘ ছয় বছর যাবত দেশনেত্রীকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। এখন হাসপাতালে তিনি জীব- মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন এবং বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।
ফখরুল বলেন, এ সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশে অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করেছে এবং এখন বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বাংলাদেশের জনগণ এক হয়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দল এক হয়েছে তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য। তারা যে লড়াই শুরু করেছে নিশ্চয়ই জয়ী হবে ইনশাআল্লাহ।
এ সময় বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর শারাফাত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ নাজমুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।