Dhaka রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের মঙ্গল ভারতের চেয়ে বেশি অন্য কেউ কামনা করে না : জয়শঙ্কর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

বাংলাদেশের মঙ্গল ভারতের চেয়ে বেশি অন্য কেউ কামনা করে না বলে দাবি করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

বুধবার (৯ এপ্রিল) নয়াদিল্লির ভারত মণ্ডপে নিউজ১৮-এর ফ্ল্যাগশিপ রাইজিং ভারত সামিট ২০২৫-এর দ্বিতীয় দিনে ভাষণ দিতে গিয়ে এমন দাবি করেন তিনি।

জয়শঙ্কর বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কয়েক দশকের পুরোনো এই সম্পর্ক জনমুখী। ভারতের চেয়ে অন্য কোনও দেশ বাংলাদেশের জন্য এতটা মঙ্গল চায় না। আমরা আশা করি বাংলাদেশ সঠিক পথে যাবে, সঠিক কাজ করবে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, আশা করি- বাংলাদেশে শীঘ্রই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের অধিকারী একটি দেশ হিসেবে, গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন প্রয়োজন। এভাবেই ম্যান্ডেট দেওয়া হয় এবং ম্যান্ডেট পুনর্নবীকরণ করা হয়। তাই আমরা আশা করি তারা সেই পথেই যাবে।

থাইল্যান্ডে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হয়। দুই নেতার এ সাক্ষাৎ দক্ষিণ এশিয়ায় বেশ আলোচিত। এর কয়েক দিন পর জয়শঙ্কর এমন মন্তব্য করলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বৈঠকে মোদি ইউনূসের সাথে তার আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার উপর জোর দিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

বৈঠক সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, আমি মনে করি আমাদের পক্ষ থেকে যে মূল বার্তাটি এসেছে, তা হলো, ঐতিহাসিক কারণে বাংলাদেশের সাথে আমাদের সম্পর্ক খুবই অনন্য। এটি মূলত জনগণের সাথে জনগণের সম্পর্ক, সম্ভবত আমার মনে হয় এমন যেকোনো সম্পর্কের চেয়ে অনেক বেশি। এটাই আমাদের স্বীকৃতি দিতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের মুখ থেকে যে বক্তব্য বেরিয়ে আসছে তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। আমরা যে উগ্রপন্থী প্রবণতা দেখছি তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। আমি মনে করি আমরা এই উদ্বেগগুলোর বিষয়ে খুব খোলামেলা আলোচনা করেছি।

জয়শঙ্কর জোর দিয়ে বলেন, ভারত বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। একটি দেশ হিসেবে আমাদের (ভারতের) চেয়ে বেশি কোনো দেশ বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করে না। এটা আমাদের ডিএনএ-তে আছে। একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে, বন্ধু হিসেবে, আমি মনে করি এবং আমরা আশা করি তারা সঠিক পথে যাবে এবং সঠিক কাজ করবে।

প্রসঙ্গত, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো ড. ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বৈঠক এটি। শুক্রবারের (৪ এপ্রিল) এ বৈঠক বাংলাদেশ ও ভারতে বেশ আলোচিত। বিশেষ করে ড. ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির আচরণ নিয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তিনি তার কাজের প্রশংসা করেন।

তিনি আরও জানান, যখন অধ্যাপক ইউনূস শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়টি উত্থাপন করেন তখন মোদির প্রতিক্রিয়া নেতিবাচক ছিল না। আমরা আত্মবিশ্বাসী, হাসিনাকে একদিন ঢাকায় প্রত্যর্পণ করা হবে। এ ছাড়াও এটা বেশ স্পষ্ট ছিল, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিকনির্দেশনা তৈরি করতে চায়। বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী অধ্যাপক ইউনূসকে বেশ কয়েকবার বলেছিলেন- ভারতের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে, কোনো একক দল বা ব্যক্তির সঙ্গে নয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নিলে বিদেশে-অনলাইনে পরে থাকতে হবে : তারেককে ইঙ্গিত করে পাটওয়ারী

বাংলাদেশের মঙ্গল ভারতের চেয়ে বেশি অন্য কেউ কামনা করে না : জয়শঙ্কর

প্রকাশের সময় : ০২:১৯:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

বাংলাদেশের মঙ্গল ভারতের চেয়ে বেশি অন্য কেউ কামনা করে না বলে দাবি করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

বুধবার (৯ এপ্রিল) নয়াদিল্লির ভারত মণ্ডপে নিউজ১৮-এর ফ্ল্যাগশিপ রাইজিং ভারত সামিট ২০২৫-এর দ্বিতীয় দিনে ভাষণ দিতে গিয়ে এমন দাবি করেন তিনি।

জয়শঙ্কর বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কয়েক দশকের পুরোনো এই সম্পর্ক জনমুখী। ভারতের চেয়ে অন্য কোনও দেশ বাংলাদেশের জন্য এতটা মঙ্গল চায় না। আমরা আশা করি বাংলাদেশ সঠিক পথে যাবে, সঠিক কাজ করবে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, আশা করি- বাংলাদেশে শীঘ্রই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের অধিকারী একটি দেশ হিসেবে, গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন প্রয়োজন। এভাবেই ম্যান্ডেট দেওয়া হয় এবং ম্যান্ডেট পুনর্নবীকরণ করা হয়। তাই আমরা আশা করি তারা সেই পথেই যাবে।

থাইল্যান্ডে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হয়। দুই নেতার এ সাক্ষাৎ দক্ষিণ এশিয়ায় বেশ আলোচিত। এর কয়েক দিন পর জয়শঙ্কর এমন মন্তব্য করলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বৈঠকে মোদি ইউনূসের সাথে তার আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার উপর জোর দিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

বৈঠক সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, আমি মনে করি আমাদের পক্ষ থেকে যে মূল বার্তাটি এসেছে, তা হলো, ঐতিহাসিক কারণে বাংলাদেশের সাথে আমাদের সম্পর্ক খুবই অনন্য। এটি মূলত জনগণের সাথে জনগণের সম্পর্ক, সম্ভবত আমার মনে হয় এমন যেকোনো সম্পর্কের চেয়ে অনেক বেশি। এটাই আমাদের স্বীকৃতি দিতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের মুখ থেকে যে বক্তব্য বেরিয়ে আসছে তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। আমরা যে উগ্রপন্থী প্রবণতা দেখছি তা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। আমি মনে করি আমরা এই উদ্বেগগুলোর বিষয়ে খুব খোলামেলা আলোচনা করেছি।

জয়শঙ্কর জোর দিয়ে বলেন, ভারত বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। একটি দেশ হিসেবে আমাদের (ভারতের) চেয়ে বেশি কোনো দেশ বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করে না। এটা আমাদের ডিএনএ-তে আছে। একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে, বন্ধু হিসেবে, আমি মনে করি এবং আমরা আশা করি তারা সঠিক পথে যাবে এবং সঠিক কাজ করবে।

প্রসঙ্গত, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো ড. ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বৈঠক এটি। শুক্রবারের (৪ এপ্রিল) এ বৈঠক বাংলাদেশ ও ভারতে বেশ আলোচিত। বিশেষ করে ড. ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির আচরণ নিয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তিনি তার কাজের প্রশংসা করেন।

তিনি আরও জানান, যখন অধ্যাপক ইউনূস শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়টি উত্থাপন করেন তখন মোদির প্রতিক্রিয়া নেতিবাচক ছিল না। আমরা আত্মবিশ্বাসী, হাসিনাকে একদিন ঢাকায় প্রত্যর্পণ করা হবে। এ ছাড়াও এটা বেশ স্পষ্ট ছিল, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিকনির্দেশনা তৈরি করতে চায়। বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী অধ্যাপক ইউনূসকে বেশ কয়েকবার বলেছিলেন- ভারতের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে, কোনো একক দল বা ব্যক্তির সঙ্গে নয়।