নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জাওয়াদ মোবাশ্বের আকবর বলেছেন, বাংলাদেশের ভিত্ত এখন এতটাই মজবুত যে দেশটিকে কোনো ভয়ভীতি দেখি দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশের ৫২ বছরের অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, উগ্রবাদীদের ঘরে আশ্রয় মেলে না, তাদের বিদেশ থেকে সাহায্য নিতে হয়। দেশপ্রেমীদের কখনোই হাত করা যায় না, উগ্রবাদীদের যায়। তবে উগ্রবাদ দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তাকে প্রশ্ন করা হয়- দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশকে নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখাচ্ছে। বিভিন্নভাবে চাপে রাখছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী? উত্তরে এম জে আকবর বলেন, ‘যারা ভয় দেখাচ্ছে তারা ভুলে যাচ্ছে বাংলাদেশ কোনো ভীতু দেশ নয়। এখানে ভয় দেখালেই কোনো কাজ হবে না।
এম জে আকবর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে শুধু উন্নয়নের দিকে নয়, চারটি মাত্রাবিশিষ্ট আধুনিকতার দিকে নিয়ে গেছেন। তিনি চারটি মাত্রায় বিচরণ করেছেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও প্রতিটি ধর্মের স্বাধীনতা ছাড়া কোনো দেশ আধুনিক জাতি হতে পারে না। প্রতিটি বিশ্বাসের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হলো অন্তর্ভুক্ত জাতীয়তাবাদ।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী অধিকারের তাত্ত্বিক বিষয়কে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। তিনি লিঙ্গসমতা এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ নিশ্চিত করার জন্য তার প্রচেষ্টার কথাও তুলে ধরেন।
এম জে আকবর বলেন, ‘দারিদ্র্য দূর না করে আপনি একটি আধুনিক জাতি হতে পারবেন না। বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির পথে হাঁটছে। এ কারণেই মানুষ শেখ হাসিনাকে বারবার নির্বাচিত করে।
তিনি গণতন্ত্রের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলোও তুলে ধরেন এবং স্থিতিশীলতা ধ্বংস করার চেষ্টাকারী শক্তির কথা উল্লেখ করেন। এম জে আকবর বলেন, ‘স্বাধীনতা বাংলাদেশকে দেওয়া হয়নি, বাংলাদেশ তা অর্জন করেছে।
ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টাকে তাদের সাধুবাদ জানানো উচিত। এটি সারা বিশ্বের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে।
এম জে আকবর বলেন, বাংলাদেশের উচিত নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে নিজের পক্ষ নেওয়া।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বে দিচ্ছেন। ১৯৭৫ পরবর্তী স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন সেজন্য তাকে সম্মান জানানো ও এ বিষয়ে উদযাপন করা উচিৎ।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশে সামরিক শাসন ভারতের জন্যও বন্ধুত্বের দূরত্ব তৈরি করেছিল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে সামরিক স্বৈরশাসনের যে ধারা সূচিত হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা থেকে দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনেন। তিনি গণতন্ত্র লালন করছেন।
আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বাংলাদেশের অর্জিত উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার কথা তুলে ধরেন। মোমেন বলেন, বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয় সুযোগের দেশ। বাংলাদেশ গণতন্ত্র অনুসরণ করছে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর মাশফি বিনতে শামস।