স্পোর্টস ডেস্ক :
টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল ভারত। লাল বলের ক্রিকেটে পাত্তা না পাওয়া বাংলাদেশ রঙ ছড়াতে পারেনি রঙিন পোশাকেও। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের পাত্তাই দেয়নি সূর্যকুমার যাদবের দল। ৮৬ রানের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করল ভারত।
বুধবার (৯ অক্টোবর) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২১ রান করে ভারত। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৪ রান করেছেন নিতিশ রেড্ডি। জবাবে খেলতে নেমে ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরুর আভাস দিয়েছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ৩ চারে ১৪ রান তুলেন তিনি। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তৃতীয় ওভারে আর্শদীপের অফ স্টাম্পের বাইরের বল টেনে খেলতে গিয়ে ইন সাইড এজে বোল্ড হয়েছেন। সাজঘরে ফেরার আগে এই তরুণ ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে ১২ বলে ১৬ রান।
তিনে নেমে নিজের খেলা প্রথম দুই বলে দুই বাউন্ডারি হাঁকান নাজমুল হোসেন শান্ত। আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে বেশি দূর এগোতে পারলেন না শান্ত। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দরকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭ বলে ১১ রান।
দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর দলকে টেনে তুলার দায়িত্ব ছিল লিটন দাসের কাঁধে। তবে পারলেন না এই অভিজ্ঞ ব্যাটারও। উল্টো দলের বিপদ বাড়িয়ে ফিরেছেন। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের প্রথম বলে বরুণ চক্রবর্তীকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন এই ওপেনার। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১১ বলে ১৪ রান।
দলের বিপদ আরো বাড়িয়েছেন তাওহিদ হৃদয়। গত কয়েক মাস ধরে রান খরায় ভুগা এই ব্যাটার আরও একবার ব্যর্থ হয়েছেন। সপ্তম ওভারে অভিষেক শর্মার বলে বোল্ড হয়েছেন তিনি। ৬ বলে খেলে ২ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
দলীয় অর্ধশতকের আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। এরপর পঞ্চম উইকেট জুটিতে মেহেদি হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে দলকে টেনে তুলার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে ১৬ রানের বেশি করতে পারেননি মিরাজ। সাতে নেমে দলের বিপর্যয়ে হাল ধরতে পারেননি জাকের আলি অনিকও।
ব্যাটারদের এমন আসা-যাওয়ার মাঝেও এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করেছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী তা যথেষ্ট ছিল না। ধীরগতির ব্যাটিংয়ে ৩৯ বলে করেছেন ৪১ রান। তাতে একশ ছাড়িয়েছে বাংলাদেশের সংগ্রহ।
এদিন আগে ব্যাট করতে নেমে ভারতের হয়ে ইনিংস শুরু করতে নামেন সানজু স্যামসন ও অভিষেক শর্মা। এই দুইজনের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় ম্যান ইন ব্লুরা। দিল্লীর ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে প্রথম ওভারে ১৫ রান নেয় এই দুই ওপেনার। তবে দ্বিতীয় ওভারে এসেই রানের লাগাম টেনে ধরেন তাসকিন আহমেদ।
টাইগার পেসারের স্লোয়ার করা শেষ বলে মিড অফের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিন। যাবার আগে ১০ রান করেন তিনি। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার অভিষেক শর্মাও। ইনিংসের তৃতীয় ওভার করতে আসা তানজিম হাসান সাকিবের বল তুলে মারতে গিয়ে ইন সাইড এজে বোল্ড হয়ে সাজ ঘরে ফেরেন তিনি। ১৫ রান করেন তিনি।
তৃতীয় উইকেটে নীতিশ কুমারকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। তবে আজ ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন অধিনায়ক সূর্য। মুস্তাফিজের বলে দলীয় ৪১ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। প্যাভিলিয়নে যাবার আগে ৮ রান করেন তিনি।
এরপর বাইশে আসা রিঙ্কু সিংকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন নীতিশ কুমার রেড্ডি। ধীরে ধীরে টাইগার বোলারদের ওপর চড়াও হন এই দুই ব্যাটার। একই সঙ্গে নিজের অর্ধশতক তুলে নেন নীতিশ। ফিফটি করে বাংলাদেশে বোলারদের ওপর আরও চড়া হন নীতিশ। রিঙ্কুকে সঙ্গে নিয়ে ১০৮ রানের জুটি গড়েন রেড্ডি। তবে দলীয় ১৪৯ রানের আউট হলে ভাঙে এই জুটি।
নীতিশ আউট হলে বাইশ গজে আসেন হার্দিক পান্ডিয়া। তাকে সঙ্গে নিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন রিঙ্কু। ২৬ বলে ফিফটি তুলে নেন তিনি। দলীয় ১৮৫ রানে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। শেষ দিকে হার্দিকের ৩২ রানের ক্যামিও ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২১ রানের সংগ্রহ পায় সূর্যকুমার যাদবের দল।
বাংলাদেশের হয়ে ৫৫ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন রিশাদ হোসেন। তাছাড়া ২টি করে উইকেট পেয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম সাকিব ও তাসকিন আহমেদ।