Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বহিরাগতরা মেরে যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কি দায় নেই, প্রশ্ন আসিফ নজরুলের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, ছাত্রলীগের বহিরাগতরা এসে ছাত্রদের ওপর আক্রমণ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই, বহিরাগতরা এসে যদি ঢাবি শিক্ষার্থীদের মেরে যায়, আপনাদের কি দায়-দায়িত্ব নেই?

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী মোতাহের হোসেন ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন করেন। পরে তারা উপাচার্য অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল ও প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি দেন। মাথায় কালো ব্যাজ পরে এক মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়।

অসিফ নজরুল বলেন, শিবির ট্যাগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে এই রাজনীতি নতুন না। যাকে মারবে সে শিবির, যে কোনো অন্যায় করবে, যে কোনো অপরাধ করবে সবকিছু ঢাকা হয় শিবির ট্যাগ দিয়ে। আমরা ছাত্রলীগ কিংবা সরকারকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আপনাদের যদি এতই শিবিরভীতি থাকে তাহলে আইন করে শিবিরকে নিষিদ্ধ করেন না কেন?

তিনি বলেন, ধারণা করে, মিথ্যা অভিযোগ করে কাউকে মারতে পারেন না আপনারা। এটা গুরুতর অপরাধ, ফৌজদারি অপরাধ। আমি অনেক খোঁজ নিয়ে দেখেছি আমাদের যেসব শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছে তারা শিবির কেন, কোনো সংগঠনের সঙ্গেই জড়িত নয়। আমি মনে করে তাদের শিবির করার জন্য মারা হয়নি, তাদের মারা হয়েছে ইসলামী মাহফিল করার জন্য। বাংলাদেশের মুসলমানরা ধর্মীয় সমাবেশ করবে সেটার জন্য মার খাবে সেটার জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম?

ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাকে ইঙ্গিত করে আইন বিভাগের এই অধ্যাপক বলেন, আজকে যারা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা আছে তারা সবাই আইন বিভাগের ছাত্র। আমি তোমাদের কাছে শিক্ষক হিসেবে আপিল করছি। তোমরা কি মনে কর ইসলামী মাফফিল করার জন্য বহিরাগত ছাত্রলীগের গুণ্ডারা তোমাদের জুনিয়রদের মারার অধিকার রাখে? তোমাদের ছোট ভাইদের রক্তাক্ত চেহারা দেখে কি তোমাদের মনে কোনো বেদনার উদ্রেক হয় না? তোমাদের কাছে আপিল করলাম- এসব বহিরাগত গুণ্ডাদের ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার কর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য কি ভূমিকা রাখছে, এ প্রশ্ন রেখে গেলাম।

আইন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবি জানান।

মানববন্ধনে হামলার শিকার হওয়া আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাফওয়ান বলেন, আমাদের এই প্রোগ্রামে হামলা হবে আমরা ভাবতেও পারিনি। বাংলাদেশের সবচেয়ে নিরাপদ ক্যাম্পাস বলে আমরা যেটাকে মনে করি সেখানে বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতারা এসে আমিসহ আমার সহপাঠীদের ওপর হামলা করে রক্তাক্ত করে। আমরা জানি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা যারা আছেন তারা আমাদের বিভাগের। তাদের বিভাগের শিক্ষার্থী হয়েও যদি আমাদের এভাবে ন্যাক্কারজনক হামলার শিকার হতে হয় আর তারা তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আমরা কীভাবে তাদের সিনিয়র ভাই মনে করব। আমরা এ হামলার কঠিন বিচার চাই।

ফাতিমা তাসনিম হক বলেন, হামলায় বঙ্গবন্ধু টাওয়ার কল্যাণ সমিতির সভাপতি সিরাজুল হক ও শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম সুজন দায়ী। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের মসজিদ থেকে বের করে পেটানো হয়েছে। প্রক্টর স্যারকে ফোন করেছিলাম। তিনি টিম পাঠাবেন বলে আর যোগাযোগ করেননি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

বহিরাগতরা মেরে যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কি দায় নেই, প্রশ্ন আসিফ নজরুলের

প্রকাশের সময় : ০৯:২৪:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, ছাত্রলীগের বহিরাগতরা এসে ছাত্রদের ওপর আক্রমণ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই, বহিরাগতরা এসে যদি ঢাবি শিক্ষার্থীদের মেরে যায়, আপনাদের কি দায়-দায়িত্ব নেই?

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী মোতাহের হোসেন ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন করেন। পরে তারা উপাচার্য অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল ও প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি দেন। মাথায় কালো ব্যাজ পরে এক মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়।

অসিফ নজরুল বলেন, শিবির ট্যাগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে এই রাজনীতি নতুন না। যাকে মারবে সে শিবির, যে কোনো অন্যায় করবে, যে কোনো অপরাধ করবে সবকিছু ঢাকা হয় শিবির ট্যাগ দিয়ে। আমরা ছাত্রলীগ কিংবা সরকারকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আপনাদের যদি এতই শিবিরভীতি থাকে তাহলে আইন করে শিবিরকে নিষিদ্ধ করেন না কেন?

তিনি বলেন, ধারণা করে, মিথ্যা অভিযোগ করে কাউকে মারতে পারেন না আপনারা। এটা গুরুতর অপরাধ, ফৌজদারি অপরাধ। আমি অনেক খোঁজ নিয়ে দেখেছি আমাদের যেসব শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছে তারা শিবির কেন, কোনো সংগঠনের সঙ্গেই জড়িত নয়। আমি মনে করে তাদের শিবির করার জন্য মারা হয়নি, তাদের মারা হয়েছে ইসলামী মাহফিল করার জন্য। বাংলাদেশের মুসলমানরা ধর্মীয় সমাবেশ করবে সেটার জন্য মার খাবে সেটার জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম?

ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাকে ইঙ্গিত করে আইন বিভাগের এই অধ্যাপক বলেন, আজকে যারা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা আছে তারা সবাই আইন বিভাগের ছাত্র। আমি তোমাদের কাছে শিক্ষক হিসেবে আপিল করছি। তোমরা কি মনে কর ইসলামী মাফফিল করার জন্য বহিরাগত ছাত্রলীগের গুণ্ডারা তোমাদের জুনিয়রদের মারার অধিকার রাখে? তোমাদের ছোট ভাইদের রক্তাক্ত চেহারা দেখে কি তোমাদের মনে কোনো বেদনার উদ্রেক হয় না? তোমাদের কাছে আপিল করলাম- এসব বহিরাগত গুণ্ডাদের ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার কর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য কি ভূমিকা রাখছে, এ প্রশ্ন রেখে গেলাম।

আইন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবি জানান।

মানববন্ধনে হামলার শিকার হওয়া আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাফওয়ান বলেন, আমাদের এই প্রোগ্রামে হামলা হবে আমরা ভাবতেও পারিনি। বাংলাদেশের সবচেয়ে নিরাপদ ক্যাম্পাস বলে আমরা যেটাকে মনে করি সেখানে বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতারা এসে আমিসহ আমার সহপাঠীদের ওপর হামলা করে রক্তাক্ত করে। আমরা জানি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা যারা আছেন তারা আমাদের বিভাগের। তাদের বিভাগের শিক্ষার্থী হয়েও যদি আমাদের এভাবে ন্যাক্কারজনক হামলার শিকার হতে হয় আর তারা তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আমরা কীভাবে তাদের সিনিয়র ভাই মনে করব। আমরা এ হামলার কঠিন বিচার চাই।

ফাতিমা তাসনিম হক বলেন, হামলায় বঙ্গবন্ধু টাওয়ার কল্যাণ সমিতির সভাপতি সিরাজুল হক ও শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম সুজন দায়ী। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের মসজিদ থেকে বের করে পেটানো হয়েছে। প্রক্টর স্যারকে ফোন করেছিলাম। তিনি টিম পাঠাবেন বলে আর যোগাযোগ করেননি।