Dhaka রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা শুধু সরকারের নয়, পুরো জাতির ব্যর্থতা : তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, বিএনপি মনে করে, যদি অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে জনগণ সচেতন হয় এবং তা নিয়ে কাজ করে, তবে জনগণের সাথে সরকারের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। কিন্তু, বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা শুধু সরকারের নয়, পুরো জাতির ব্যর্থতা। অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য দেশে এবং বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে (আইইবি) জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (জেটেব) তৃতীয় কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, রাজনীতি যখন রুগ্ন হয়ে পড়ে, তখন অর্থনীতি সঙ্গত কারণেই রুগ্ন হয়। একটি মাফিয়া সরকারের তৈরি জঞ্জাল ৩ মাসে দূর করা সম্ভব নয়। তবে, যদি জনগণের কাছে সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা স্পষ্ট হয়, তখন আস্থা হারানোর আশঙ্কা থাকে।

তারেক রহমান দেশের জনগণের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আহতদের হাসপাতাল থেকে বের হয়ে বিক্ষোভে যোগ দেওয়া একটি লজ্জাজনক দৃশ্য। প্রতিটি পরিবার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ে বিপাকে রয়েছে। এই সরকারের ব্যর্থতা পুরো জাতির ব্যর্থতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন খাতে অযাচিত সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে জনগণের মধ্যে বিরক্তি সৃষ্টি হচ্ছে।

স্বৈরাচার পালানোর পর একটি বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার এমন মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেছেন, মাফিয়া সরকারের তৈরি করা জঞ্জাল তিন মাসে দূর করা সম্ভব না। আবার তিন মাস পরে সরকারের সফলতা বা ব্যর্থতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠা অস্বাভাবিক বা অন্যায্যও নয়। তবে সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা দেখতে পেলে জনগণ সহজভাবে মেনে নেবে না।

তারেক রহমান বলেন, আমি আগেও বলেছি, সংস্কার কাজ করতে গিয়ে অগ্রাধিকারের সেটিংস যদি ভুল হয় তাহলে জনগণের কাছে সরকারের অদক্ষতা হিসেবেই সেটা বিবেচিত হবে। দু’দিন আগে আহতরা হাসপাতাল থেকে যেভাবে বের হয়ে এসেছেন সেটা আমাদের বিবেকবান প্রত্যেকটা মানুষের জন্যই লজ্জাস্কর বিষয়। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে আহতদের পুনর্বাসন, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা কেন অগ্রাধিকার লিস্টে নেই, থাকলেও কত নম্বরে ছিল?

গত ১৫ বছর স্বৈরাচারী সরকার দেশকে আমদানিনির্ভর, পরনির্ভর ও ঋণনির্ভর করেছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, এমন অবস্থা থেকে দেশকে বের করে আনা প্রয়োজন। বের করে এনে যেকোনো উপায়ে সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে গার্মেন্টস খাতকে আরো লাভজনক ও বিশ্ববাজারে চাহিদা তৈরিতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করছে বিএনপি। এছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিশেষ করে এসএমই খাতে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়িয়ে অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর বিষয়টিও বিএনপির বিবেচনাধীন রয়েছে।

তিনি বলেন, একটি দেশের রাজনীতি যদি রুগ্ন হয় তাহলে অর্থনীতিও রুগ্ন হতে বাধ্য। স্বৈরাচারী আমলে আমরা সেটা দেখেছি। তারা উন্নয়নের নামে যে মেগাপ্রজেক্ট করে তার আসল রূপ কিন্তু এখন বের হয়ে আসছে।

তিনি আরো বলেন, বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি ভবিষ্যত বাংলাদেশের উন্নয়নে ঐতিহাসিক সনদ বলে আমরা মনে করি। ঘোষিত এই ৩১ দফা বাস্তবায়নে মানসম্পন্ন ও প্রায়োগিক শিক্ষার ওপরও কিন্তু জোর দেয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, জনসংখ্যা কোনো অভিশাপ নয় বরং এই জনসংখ্যাকে যদি মানবসম্পদে রূপান্তর করা যায় তাহলে দেশের উন্নয়নে এটাই বড় শক্তি।

তারেক রহমান বলেন, আমরা দেখেছি অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। জনগণ আশা করছে, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ পরিবেশে ভোট দিতে সক্ষম হবে। জনগণ তাদের প্রতিনিধিদেরকে নির্বাচিত করার সুযোগ পাবে। জনগণ যখন সত্যিকার অর্থে বুঝতে পারবে তাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার কাজ করছে তখন জনগণের সাথে সম্পর্কটা দৃঢ় হবে।’

দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদের সবার লক্ষ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের জীবনযাত্রাকে একটু ভালো করা, শিক্ষাব্যবস্থা ভালো করা, বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করা, চিকিৎসার ব্যবস্থা ভালো করা, নিরাপত্তা ভালো করা আমাদের লক্ষ্য। অতীতে যখনই জনগণের ভোটে বিএনপি সুযোগ পেয়েছে তখন চেষ্টা করেছে যতটুকু সম্ভব এই কাজগুলো করার।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, দলের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মিনহাজুর রহমান, সদস্য সচিব এ বি এম রুহুল আমিন আকন্দসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃবৃন্দ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কেয়ামত পর্যন্ত জামায়াত ক্ষমতায় আসতে পারবে না : গয়েশ্বর

বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা শুধু সরকারের নয়, পুরো জাতির ব্যর্থতা : তারেক রহমান

প্রকাশের সময় : ০৮:৪১:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, বিএনপি মনে করে, যদি অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে জনগণ সচেতন হয় এবং তা নিয়ে কাজ করে, তবে জনগণের সাথে সরকারের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। কিন্তু, বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা শুধু সরকারের নয়, পুরো জাতির ব্যর্থতা। অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য দেশে এবং বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে (আইইবি) জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (জেটেব) তৃতীয় কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, রাজনীতি যখন রুগ্ন হয়ে পড়ে, তখন অর্থনীতি সঙ্গত কারণেই রুগ্ন হয়। একটি মাফিয়া সরকারের তৈরি জঞ্জাল ৩ মাসে দূর করা সম্ভব নয়। তবে, যদি জনগণের কাছে সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা স্পষ্ট হয়, তখন আস্থা হারানোর আশঙ্কা থাকে।

তারেক রহমান দেশের জনগণের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আহতদের হাসপাতাল থেকে বের হয়ে বিক্ষোভে যোগ দেওয়া একটি লজ্জাজনক দৃশ্য। প্রতিটি পরিবার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ে বিপাকে রয়েছে। এই সরকারের ব্যর্থতা পুরো জাতির ব্যর্থতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন খাতে অযাচিত সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে জনগণের মধ্যে বিরক্তি সৃষ্টি হচ্ছে।

স্বৈরাচার পালানোর পর একটি বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার এমন মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেছেন, মাফিয়া সরকারের তৈরি করা জঞ্জাল তিন মাসে দূর করা সম্ভব না। আবার তিন মাস পরে সরকারের সফলতা বা ব্যর্থতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠা অস্বাভাবিক বা অন্যায্যও নয়। তবে সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা দেখতে পেলে জনগণ সহজভাবে মেনে নেবে না।

তারেক রহমান বলেন, আমি আগেও বলেছি, সংস্কার কাজ করতে গিয়ে অগ্রাধিকারের সেটিংস যদি ভুল হয় তাহলে জনগণের কাছে সরকারের অদক্ষতা হিসেবেই সেটা বিবেচিত হবে। দু’দিন আগে আহতরা হাসপাতাল থেকে যেভাবে বের হয়ে এসেছেন সেটা আমাদের বিবেকবান প্রত্যেকটা মানুষের জন্যই লজ্জাস্কর বিষয়। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে আহতদের পুনর্বাসন, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা কেন অগ্রাধিকার লিস্টে নেই, থাকলেও কত নম্বরে ছিল?

গত ১৫ বছর স্বৈরাচারী সরকার দেশকে আমদানিনির্ভর, পরনির্ভর ও ঋণনির্ভর করেছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, এমন অবস্থা থেকে দেশকে বের করে আনা প্রয়োজন। বের করে এনে যেকোনো উপায়ে সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে গার্মেন্টস খাতকে আরো লাভজনক ও বিশ্ববাজারে চাহিদা তৈরিতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করছে বিএনপি। এছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিশেষ করে এসএমই খাতে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়িয়ে অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর বিষয়টিও বিএনপির বিবেচনাধীন রয়েছে।

তিনি বলেন, একটি দেশের রাজনীতি যদি রুগ্ন হয় তাহলে অর্থনীতিও রুগ্ন হতে বাধ্য। স্বৈরাচারী আমলে আমরা সেটা দেখেছি। তারা উন্নয়নের নামে যে মেগাপ্রজেক্ট করে তার আসল রূপ কিন্তু এখন বের হয়ে আসছে।

তিনি আরো বলেন, বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি ভবিষ্যত বাংলাদেশের উন্নয়নে ঐতিহাসিক সনদ বলে আমরা মনে করি। ঘোষিত এই ৩১ দফা বাস্তবায়নে মানসম্পন্ন ও প্রায়োগিক শিক্ষার ওপরও কিন্তু জোর দেয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, জনসংখ্যা কোনো অভিশাপ নয় বরং এই জনসংখ্যাকে যদি মানবসম্পদে রূপান্তর করা যায় তাহলে দেশের উন্নয়নে এটাই বড় শক্তি।

তারেক রহমান বলেন, আমরা দেখেছি অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। জনগণ আশা করছে, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ পরিবেশে ভোট দিতে সক্ষম হবে। জনগণ তাদের প্রতিনিধিদেরকে নির্বাচিত করার সুযোগ পাবে। জনগণ যখন সত্যিকার অর্থে বুঝতে পারবে তাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার কাজ করছে তখন জনগণের সাথে সম্পর্কটা দৃঢ় হবে।’

দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদের সবার লক্ষ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের জীবনযাত্রাকে একটু ভালো করা, শিক্ষাব্যবস্থা ভালো করা, বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করা, চিকিৎসার ব্যবস্থা ভালো করা, নিরাপত্তা ভালো করা আমাদের লক্ষ্য। অতীতে যখনই জনগণের ভোটে বিএনপি সুযোগ পেয়েছে তখন চেষ্টা করেছে যতটুকু সম্ভব এই কাজগুলো করার।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, দলের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মিনহাজুর রহমান, সদস্য সচিব এ বি এম রুহুল আমিন আকন্দসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃবৃন্দ।