Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বর্তমান সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হতে পারে না : মির্জা ফখরুল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৪৬:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ১৮৬ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এতো বেশি অহংকারী ও প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে পড়েছেন যে, কারও কথায় গা করছেন না। তিনি আর দেশের মানুষের কথা চিন্তা করছেন না। দেশের সব মানুষ ও রাজনৈতিক দল যখন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচনের দাবি তুলেছে; তখন তিনি তা উড়িয়ে দিচ্ছেন। তিনি সেই সংবিধানের অধীনেই নির্বাচনের কথাই বলছেন। কিন্তু বর্তমান সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হতে পারে না।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহার এবং সরকার পতনের একদফা দাবিতে সমাবেশ করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল।

তিনি বলেন, এই সংবিধান অধীনে নির্বাচন হতে পারে না। কারণ আপনারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় থাকলে সেই নির্বাচন কোনো দিন অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে না। মা-বোনেরা ভোট দিতে পারবে না। গত দুই নির্বাচনে তারা ভোট কেন্দ্র গিয়েও ভোট দিতে পারেনি।

আওয়ামী লীগ সরকার আবারও ক্ষমতায় এলে দেশে নারীসহ কোনো মানুষেরই নিরাপত্তা থাকবে না বলে মন্তব্য করে তিনি। তার দাবি, শেখ হাসিনা আবার সরকারে এলে মানুষ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হারাবে। দেশ থেকে চিরতরে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার চলে যাবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন নারী-পুরুষ মিলে ঐক্য গড়ে তুলি, যার মাধ্যমে এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করব।

আওয়ামী লীগ সরকার আবারও জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায় উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা (উপস্থিত নেতাকর্মীরা) কি সেটা দেবেন? তখন নারী নেত্রীরা উচ্চস্বরে না বলেন।

আওয়ামী লীগ কাউকে ছাড় দেয়নি উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, তারা অসংখ্য মা-বোনকে নির্যাতন করেছে। এরা কি রকম অত্যাচারী দেখেন, পত্র- পত্রিকায় যে ছবি বেরিয়েছে তা ফেসবুকে দেওয়ার কারণে মিলি নামে একজন গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। আজকে এখানে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়। বিশেষ করে নারীদের নিরাপত্তা নেই। দেশে গণতন্ত্র না থালকে নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করা যাবে না।

আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের নির্বাচিত নয় মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে। সমগ্র দেশ আজকে বিপদগ্রস্ত।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, যার কারণে মা-বোনেরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। আজকেও পত্রিকায় এসেছে, সরকার যে দাম বেঁধে দিয়েছিল তা কেউ মানছে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সব নিত্যপণ্যের দাম আজ আকাশচুম্বী। সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম কেউ মানছে না। সব জায়গায় আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট। সংসার চালাতে নারীরা হিমশিম খাচ্ছে। এ সরকারের আমলে আজ কেউ নিরাপদ নয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, যে মানুষটি আজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে তাকে আজ গৃহবন্দি করে রেখেছে। তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। আমরা আশা করি তার পরিবার খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর যে আবেদন করছে তা সরকার বাস্তবায়ন করবে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে আটক রাখা হয়েছে- কারণ উনি মুক্ত থাকলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা কঠিন হয়ে যাবে। খালেদা জিয়া মুক্ত থাকলে দেশের গণতন্ত্র মুক্ত থাকবে। উনি (খালেদা জিয়া) মুক্ত থাকলে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমগ্র দেশের মানুষ যখন এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে জেগে ওঠেছে, তখন এই মহিলা সমাবেশ আমাদের আরও সাহস যুগিয়েছে। আজ এই সরকারের অত্যাচার থেকে মা-বোনরা রক্ষা পায় নাই। সাইবার সিকিউরিটি আইনের নামে আটক করা হচ্ছে মা-বোনদের। আজ সত্য লেখার অপরাধে মা-বোনদের পিটিয়ে মারা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এরা জনগণের নির্বাচিত নন। খালেদা মেয়েদের দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে পড়ার ব্যবস্থা করেছেন, চাকরির ক্ষেত্রে মেয়েদের কোটা প্রথা চালু করেছেন। আজ এ সরকার গায়ের জোরে সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। গণতন্ত্র ও দেশ ধ্বংস করে ফেলছে। তারা মানুষের কথা চিন্তা করছে না। মানুষের দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকার এরা চায় না।

এ সরকার যদি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে দেশের স্বাধীনতা থাকবে না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আসুন সব নারী-পুরুষ ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই একদলীয় সরকারকে বিদায় করে জনগণের রাষ্ট্র কায়েম করি।

মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আফরোজা আক্তার রিতা, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মহিলা দল নেত্রী হেলেন জেরেন খান প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

বর্তমান সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হতে পারে না : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৬:৪৬:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এতো বেশি অহংকারী ও প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে পড়েছেন যে, কারও কথায় গা করছেন না। তিনি আর দেশের মানুষের কথা চিন্তা করছেন না। দেশের সব মানুষ ও রাজনৈতিক দল যখন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচনের দাবি তুলেছে; তখন তিনি তা উড়িয়ে দিচ্ছেন। তিনি সেই সংবিধানের অধীনেই নির্বাচনের কথাই বলছেন। কিন্তু বর্তমান সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হতে পারে না।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহার এবং সরকার পতনের একদফা দাবিতে সমাবেশ করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল।

তিনি বলেন, এই সংবিধান অধীনে নির্বাচন হতে পারে না। কারণ আপনারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় থাকলে সেই নির্বাচন কোনো দিন অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে না। মা-বোনেরা ভোট দিতে পারবে না। গত দুই নির্বাচনে তারা ভোট কেন্দ্র গিয়েও ভোট দিতে পারেনি।

আওয়ামী লীগ সরকার আবারও ক্ষমতায় এলে দেশে নারীসহ কোনো মানুষেরই নিরাপত্তা থাকবে না বলে মন্তব্য করে তিনি। তার দাবি, শেখ হাসিনা আবার সরকারে এলে মানুষ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হারাবে। দেশ থেকে চিরতরে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার চলে যাবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন নারী-পুরুষ মিলে ঐক্য গড়ে তুলি, যার মাধ্যমে এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করব।

আওয়ামী লীগ সরকার আবারও জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায় উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা (উপস্থিত নেতাকর্মীরা) কি সেটা দেবেন? তখন নারী নেত্রীরা উচ্চস্বরে না বলেন।

আওয়ামী লীগ কাউকে ছাড় দেয়নি উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, তারা অসংখ্য মা-বোনকে নির্যাতন করেছে। এরা কি রকম অত্যাচারী দেখেন, পত্র- পত্রিকায় যে ছবি বেরিয়েছে তা ফেসবুকে দেওয়ার কারণে মিলি নামে একজন গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। আজকে এখানে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়। বিশেষ করে নারীদের নিরাপত্তা নেই। দেশে গণতন্ত্র না থালকে নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করা যাবে না।

আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের নির্বাচিত নয় মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে। সমগ্র দেশ আজকে বিপদগ্রস্ত।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, যার কারণে মা-বোনেরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। আজকেও পত্রিকায় এসেছে, সরকার যে দাম বেঁধে দিয়েছিল তা কেউ মানছে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সব নিত্যপণ্যের দাম আজ আকাশচুম্বী। সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম কেউ মানছে না। সব জায়গায় আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট। সংসার চালাতে নারীরা হিমশিম খাচ্ছে। এ সরকারের আমলে আজ কেউ নিরাপদ নয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, যে মানুষটি আজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে তাকে আজ গৃহবন্দি করে রেখেছে। তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। আমরা আশা করি তার পরিবার খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর যে আবেদন করছে তা সরকার বাস্তবায়ন করবে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে আটক রাখা হয়েছে- কারণ উনি মুক্ত থাকলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা কঠিন হয়ে যাবে। খালেদা জিয়া মুক্ত থাকলে দেশের গণতন্ত্র মুক্ত থাকবে। উনি (খালেদা জিয়া) মুক্ত থাকলে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমগ্র দেশের মানুষ যখন এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে জেগে ওঠেছে, তখন এই মহিলা সমাবেশ আমাদের আরও সাহস যুগিয়েছে। আজ এই সরকারের অত্যাচার থেকে মা-বোনরা রক্ষা পায় নাই। সাইবার সিকিউরিটি আইনের নামে আটক করা হচ্ছে মা-বোনদের। আজ সত্য লেখার অপরাধে মা-বোনদের পিটিয়ে মারা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এরা জনগণের নির্বাচিত নন। খালেদা মেয়েদের দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে পড়ার ব্যবস্থা করেছেন, চাকরির ক্ষেত্রে মেয়েদের কোটা প্রথা চালু করেছেন। আজ এ সরকার গায়ের জোরে সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। গণতন্ত্র ও দেশ ধ্বংস করে ফেলছে। তারা মানুষের কথা চিন্তা করছে না। মানুষের দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকার এরা চায় না।

এ সরকার যদি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে দেশের স্বাধীনতা থাকবে না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আসুন সব নারী-পুরুষ ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই একদলীয় সরকারকে বিদায় করে জনগণের রাষ্ট্র কায়েম করি।

মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আফরোজা আক্তার রিতা, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মহিলা দল নেত্রী হেলেন জেরেন খান প্রমুখ।