Dhaka রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরিশালে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণে দায়ে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

বরিশাল জেলা প্রতিনিধি : 

বরিশাল নগরীতে এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে চার জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

রোববার (২৬ অক্টোবর) বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহা. রকিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা দেন বলে বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান জানিয়েছেন। এ সময় আদালতে দণ্ডিত তিন আসামি উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- নগরীর রূপাতলী ধান গবেষণা রোডের বাসিন্দা মানিক গাজী কালুর ছেলে রাসেল গাজী (৪৪), রূপাতলী গ্যাসটারবাইন এলাকার ভাড়াটিয়া ও বাকেরগঞ্জের আউলিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী খানের ছেলে খোকন খান (৩২), ধান গবেষণা রোড খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা খলিল জমাদ্দারের ছেলে রাজিব জমাদ্দার (৩৪) ও একই এলাকার মোহাম্মদ আলী হাওলাদারের ছেলে জাহিদ হাওলাদার (৩৫)। রায় ঘোষণার সময় রাসেল, রাজিব ও জাহিদ আদালতে উপস্থিত ছিল। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। খোকন মামলার বিচার চলাকালে জামিনে মুক্তি পেয়ে পালিয়ে যায়।

মামলার বরাতে ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আব্দুল মন্নান মৃধা জানান, ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে বরিশাল নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ড ধান গবেষণা রোডে এক গৃহবধূ (১৯) তার মায়ের সাথে ঝগড়া করেন। তখন ওই গৃহবধূ রাগ করে একটি অটোরিকশা উঠে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থাকা স্বামীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। অটোরিকশাচালক তাকে ভুলপথে নগরীর ত্রিশ গোডাউন ব্রিজের ওপর নিয়ে যায়। সেখানে তাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা বেঁধে খ্রিস্টানপাড়া এলাকায় জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে দণ্ডিত চার আসামিসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৮/১০ জন রাতভর ধর্ষণ করে। ভোরে অজ্ঞাত একটি বাড়ির সামনে বিবস্ত্র অবস্থায় ফেলে যায়। ওই বাড়ির অজ্ঞাত ব্যক্তিও তাকে ধর্ষণ করে। সকালে স্থানীয় কয়েক নারী ও পুরুষ তাকে পড়ে থাকতে দেখেন। তারা গৃহবধূর কথা বিশ্বাস না করে তাকে মারধর করে ফেলে চলে যায়। তখন ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা বোরকা পেয়ে সেটি পরিধান করে বাড়ি যায়। এ ঘটনায় ১১ নভেম্বর নামধারী চারজনসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন ওই গৃহবধূ।

কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. আতাউর রহমান ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। বিচারক ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ এই রায় দিয়েছেন।

বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান বলেন, রায়ে করা জরিমানার অর্থ আদায় হলে ওই গৃহবধূকে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

দণ্ডিতরা দাবি করেন, ডিএনএ রিপোর্ট ও সাক্ষী তাদের পক্ষে ছিল। তবু তাদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে। এজন্য কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশকে দায়ী করেছেন।

এদিকে এই রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী নারীর মা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বরিশালে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণে দায়ে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশের সময় : ০৬:৪০:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

বরিশাল জেলা প্রতিনিধি : 

বরিশাল নগরীতে এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে চার জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

রোববার (২৬ অক্টোবর) বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহা. রকিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা দেন বলে বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান জানিয়েছেন। এ সময় আদালতে দণ্ডিত তিন আসামি উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- নগরীর রূপাতলী ধান গবেষণা রোডের বাসিন্দা মানিক গাজী কালুর ছেলে রাসেল গাজী (৪৪), রূপাতলী গ্যাসটারবাইন এলাকার ভাড়াটিয়া ও বাকেরগঞ্জের আউলিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী খানের ছেলে খোকন খান (৩২), ধান গবেষণা রোড খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা খলিল জমাদ্দারের ছেলে রাজিব জমাদ্দার (৩৪) ও একই এলাকার মোহাম্মদ আলী হাওলাদারের ছেলে জাহিদ হাওলাদার (৩৫)। রায় ঘোষণার সময় রাসেল, রাজিব ও জাহিদ আদালতে উপস্থিত ছিল। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। খোকন মামলার বিচার চলাকালে জামিনে মুক্তি পেয়ে পালিয়ে যায়।

মামলার বরাতে ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আব্দুল মন্নান মৃধা জানান, ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে বরিশাল নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ড ধান গবেষণা রোডে এক গৃহবধূ (১৯) তার মায়ের সাথে ঝগড়া করেন। তখন ওই গৃহবধূ রাগ করে একটি অটোরিকশা উঠে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থাকা স্বামীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। অটোরিকশাচালক তাকে ভুলপথে নগরীর ত্রিশ গোডাউন ব্রিজের ওপর নিয়ে যায়। সেখানে তাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা বেঁধে খ্রিস্টানপাড়া এলাকায় জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে দণ্ডিত চার আসামিসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৮/১০ জন রাতভর ধর্ষণ করে। ভোরে অজ্ঞাত একটি বাড়ির সামনে বিবস্ত্র অবস্থায় ফেলে যায়। ওই বাড়ির অজ্ঞাত ব্যক্তিও তাকে ধর্ষণ করে। সকালে স্থানীয় কয়েক নারী ও পুরুষ তাকে পড়ে থাকতে দেখেন। তারা গৃহবধূর কথা বিশ্বাস না করে তাকে মারধর করে ফেলে চলে যায়। তখন ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা বোরকা পেয়ে সেটি পরিধান করে বাড়ি যায়। এ ঘটনায় ১১ নভেম্বর নামধারী চারজনসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন ওই গৃহবধূ।

কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. আতাউর রহমান ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। বিচারক ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ এই রায় দিয়েছেন।

বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান বলেন, রায়ে করা জরিমানার অর্থ আদায় হলে ওই গৃহবধূকে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

দণ্ডিতরা দাবি করেন, ডিএনএ রিপোর্ট ও সাক্ষী তাদের পক্ষে ছিল। তবু তাদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে। এজন্য কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশকে দায়ী করেছেন।

এদিকে এই রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী নারীর মা।