বরিশাল জেলা প্রতিনিধি :
বরিশালের উজিরপুরে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় স্থানীয় এমপির সামনে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছ। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ইদ্রিস সরদারসহ বেশকয়েকজন আহত হয়েছেন।
রোববার (২৬ মার্চ) সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, সকালে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে উজিরপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহ আলম তালুকদার। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রধান অতিথি অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হলে তার সঙ্গে উপস্থিত হন উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান ওরফে ইকবাল।
এ সময় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান এমপির সামনে ইদ্রিস সরদারকে কটূক্তি করলে ইদ্রিস তার প্রতিবাদ করেন। এতে হাফিজুর রহমান তাকে মারধর শুরু করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে আহত ইদ্রিস সরদার বলেন, সকালে বীর শহীদদের প্রতি পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে কুচকাওয়াজ পরিদর্শনের জন্য স্কুল মাঠে যাই। সংসদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শাহে আলম ভাইকে উপজেলা সভাকক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সালাম বিনিময় করি। তখন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান আমাকে ‘আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর দালাল’ বলে কটূক্তি করেন। আমি এর উত্তরে ইকবাল চেয়ারম্যানকে বলি ‘সকল কিছু আপনারাই শিক্ষা দিয়েছেন।’ এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে গালাগাল শুরু করেন চেয়ারম্যান হাফিজুর। তখন তার বাহিনী বামরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ তালুকদার, শিকারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম রিয়াজ কাজী ও বামরাইল ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য রুবেলসহ ১০-১২ জন আমার ওপর হামলা চালায়। তখন এমপিসহ কেউ আমাকে রক্ষা করতে আসেনি। পরে কয়েকজন মিলে আমাকে উজিরপুর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম জামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে জানাব। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই আমরা মেনে নেব। নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিকভাবে ভুল বোঝাবুঝি ও দ্বন্দ্ব কোনোভাবেই কাম্য নয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আ. মজিদ সিকদার বাচ্চু জানান, ‘বিষয়টি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। এ ঘটনার কারণে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যেতে না পারায় অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করছি। জাতীয় অনুষ্ঠানকে বানচাল করার জন্য যারা এ হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নেতাদের অনুরোধ করব।
এ ব্যাপারে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল বলেন, ইদ্রিসের সঙ্গে আমার হাস্যরসপূর্ণ কৌতুক হয়েছে। পরে মারামারির বিষয়টি আমি দেখিনি।
এ ব্যাপারে উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।