বরগুনা জেলা প্রতিনিধি :
বরগুনায় বিএনপির অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলায় আওয়ামীপন্থী ১২ আইনজীবীকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক। উচ্চ আদালতের জামিন শেষে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান তাঁদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো আইনজীবীরা হলেন, বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মাহাবুবুল বারী আসলাম, অ্যাডভোকেট মজিবুল হক কিসলু, সাবেক জিপি মজিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট জুনায়েদ জুয়েল, অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির পল্টু, বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির, চরদুয়ানী অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান জুয়েল, অ্যাডভোকেট আবদুল্লা আল মামুন, অ্যাডভোকেট সাইমুন ইসলাম রাব্বী, অ্যাডভোকেট ইমরান, আমতলী গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট মিলন।
গত ৩০ এপ্রিল এস এম নইমুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ১৫৮ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন। তিনি বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত এস এম নজরুল ইসলামের ছেলে। বিশেষ ক্ষমতা আইনের পাশাপাশি মামলায় বিস্ফোরক আইনের ধারাও সংযোজন করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আসামিরা একটি মিছিল বের করে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালান। হামলার সময় কার্যালয়ের আসবাব ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ভাঙচুর করা হয়। পরে সেগুলো রাস্তায় এনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কার্যালয়ের ভেতর ও বাইরে একাধিক হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
ঘটনার দুই বছর পর বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি হয়। আসামির তালিকায় আওয়ামী লীগের নেতা, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও আইনজীবী ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার নাম রয়েছে। এ নিয়ে বিএনপির ভেতরেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, মামলার বাদী নইমুল ইসলামের কোনো সাংগঠনিক পদ নেই। মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সদর উপজেলা শাখার ৮ নম্বর ইউনিয়নের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব সোহাগ মৃধাকেও আসামি করা হয়েছে।
বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. নুরুল আমিন বলেন, আদালতে হাজির হওয়া ১২ আইনজীবী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে বিএনপির অফিস ভাঙচুরের মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি। তারা উচ্চ আদালত থেকে ৮ সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। জামিন শেষে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারে নেওয়ার সময় মামলার আসামি আইনজীবী জুনায়েদ জুয়েল বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি মিথ্যা মামলায় আমাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নুরুল আমিন বলেন, জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় এজাহারনামীয় আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।