Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরগুনায় কাঠের সাঁকোয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে গ্রামবাসী

বরগুনা জেলা প্রতিনিধি : 

৬ বছর আগে স্বেচ্ছাশ্রমে বরগুনার আমতলী সদর ইউনিয়নের নাচনাপাড়া সিংখালী নামে খালের ওপর ১১০ ফুট দৈর্ঘ্যের কাঠের সাঁকোটি নির্মাণ করেছিল গ্রামবাসীরা। এরপর থেকে প্রতি বছরই চলাচলের জন্য সাঁকোটি সংস্কার করে আসছে নাচনাপাড়া, সিংখালী, দক্ষিণ আমতলী ও মরিচবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। তবে এখন সেই সাঁকোটি পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। দীর্ঘদিন ব্যবহারে নড়বড়ে হয়ে গেছে এলাকাবাসীর তৈরি করা কাঠের সাঁকো। স্থানীয়দের দাবি ওখানে একটি নতুন স্থায়ী সেতু নির্মাণের।

লোকজন উঠলেই সাঁকোটি থরথর করে কাঁপতে থাকে। এরই মধ্যে রেলিং ও বিভিন্ন জায়গায় কাঠ নষ্ট হয়ে ভেঙ্গে পড়েছে। এরপরও বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ চার গ্রামের বাসিন্দাদের।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন নাচনাপাড়া, সিংখালী, দক্ষিণ আমতলী ও মরিচবুনিয়া গ্রামের অন্তত ৫০০ থেকে ৭০০ লোক ও শিক্ষার্থীদের ওই কাঠের সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয়। তাদের দাবি স্থায়ী দুর্ভোগ লাঘবে সরকারিভাবে ওই খালে একটি সেতু নির্মাণের।

দক্ষিণ পূর্ব আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিদিন আমাদের ঝুঁকি নিয়ে ওই কাঠের সেতুটি পার হয়ে স্কুলে আসতে ও যেতে হচ্ছে। সেতুটি ভেঙে গেলে আমাদের স্কুলে আসতে যেতে অনেক কষ্ট হবে।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ আমতলী গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মো. আবুল কালাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের চার গ্রামের সাধারণ মানুষদের ওই খাল দিয়ে পারাপারে খুবই সমস্যা হচ্ছিল। আমরা গ্রামবাসী একটি কমিটি করে আমাদের নিজেদের উদ্যোগে ২০১৭ সালে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ওই খালের ওপর একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করি। সরকারিভাবে স্থায়ী একটি সেতু নির্মাণের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনের শরণাপন্ন হলেও আজ পর্যন্ত ওখানে কোনো সেতু নির্মিত হয়নি।

উপজেলার নাচনাপাড়া সিংখালী খালে কাঠের সেতু নির্মাণ কাজের উদ্যোক্তারা বলেন, একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছিল আমাদের এখানকার চার গ্রামের সাধারণ মানুষ। গত ৬ বছর পূর্বে গ্রামবাসীর অর্থায়নে নাচনাপাড়া সিংখালী খালে একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করি। নির্মাণের পর থেকে প্রতিবছর ওই কাঠের সেতু সংস্কার করে স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ আমরা গ্রামবাসী পারাপার হয়ে আসছি। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা এতটাই খারাপ যেকোনো মুহূর্তে সেতুটি ভেঙে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের দাবি, সরকারি উদ্যোগে এখানে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হোক।

এ ব্যাপারে আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় নাচনাপাড়া সিংখালী খালের ওপর একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন স্থানীয়রা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে একাধিকবার চাহিদা পত্র পাঠিয়ে এর কোনো সুফল পাইনি। তবে যোগাযোগ করে দ্রুত ভুক্তভোগী গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘবের চেষ্টা করবো।

এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করে কাঠের সাঁকোর জায়গায় সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলেই নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধান করা হবে।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

বরগুনায় কাঠের সাঁকোয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে গ্রামবাসী

প্রকাশের সময় : ০২:১০:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বরগুনা জেলা প্রতিনিধি : 

৬ বছর আগে স্বেচ্ছাশ্রমে বরগুনার আমতলী সদর ইউনিয়নের নাচনাপাড়া সিংখালী নামে খালের ওপর ১১০ ফুট দৈর্ঘ্যের কাঠের সাঁকোটি নির্মাণ করেছিল গ্রামবাসীরা। এরপর থেকে প্রতি বছরই চলাচলের জন্য সাঁকোটি সংস্কার করে আসছে নাচনাপাড়া, সিংখালী, দক্ষিণ আমতলী ও মরিচবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। তবে এখন সেই সাঁকোটি পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। দীর্ঘদিন ব্যবহারে নড়বড়ে হয়ে গেছে এলাকাবাসীর তৈরি করা কাঠের সাঁকো। স্থানীয়দের দাবি ওখানে একটি নতুন স্থায়ী সেতু নির্মাণের।

লোকজন উঠলেই সাঁকোটি থরথর করে কাঁপতে থাকে। এরই মধ্যে রেলিং ও বিভিন্ন জায়গায় কাঠ নষ্ট হয়ে ভেঙ্গে পড়েছে। এরপরও বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ চার গ্রামের বাসিন্দাদের।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন নাচনাপাড়া, সিংখালী, দক্ষিণ আমতলী ও মরিচবুনিয়া গ্রামের অন্তত ৫০০ থেকে ৭০০ লোক ও শিক্ষার্থীদের ওই কাঠের সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয়। তাদের দাবি স্থায়ী দুর্ভোগ লাঘবে সরকারিভাবে ওই খালে একটি সেতু নির্মাণের।

দক্ষিণ পূর্ব আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিদিন আমাদের ঝুঁকি নিয়ে ওই কাঠের সেতুটি পার হয়ে স্কুলে আসতে ও যেতে হচ্ছে। সেতুটি ভেঙে গেলে আমাদের স্কুলে আসতে যেতে অনেক কষ্ট হবে।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ আমতলী গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মো. আবুল কালাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের চার গ্রামের সাধারণ মানুষদের ওই খাল দিয়ে পারাপারে খুবই সমস্যা হচ্ছিল। আমরা গ্রামবাসী একটি কমিটি করে আমাদের নিজেদের উদ্যোগে ২০১৭ সালে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ওই খালের ওপর একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করি। সরকারিভাবে স্থায়ী একটি সেতু নির্মাণের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসনের শরণাপন্ন হলেও আজ পর্যন্ত ওখানে কোনো সেতু নির্মিত হয়নি।

উপজেলার নাচনাপাড়া সিংখালী খালে কাঠের সেতু নির্মাণ কাজের উদ্যোক্তারা বলেন, একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছিল আমাদের এখানকার চার গ্রামের সাধারণ মানুষ। গত ৬ বছর পূর্বে গ্রামবাসীর অর্থায়নে নাচনাপাড়া সিংখালী খালে একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করি। নির্মাণের পর থেকে প্রতিবছর ওই কাঠের সেতু সংস্কার করে স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ আমরা গ্রামবাসী পারাপার হয়ে আসছি। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা এতটাই খারাপ যেকোনো মুহূর্তে সেতুটি ভেঙে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের দাবি, সরকারি উদ্যোগে এখানে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হোক।

এ ব্যাপারে আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় নাচনাপাড়া সিংখালী খালের ওপর একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন স্থানীয়রা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে একাধিকবার চাহিদা পত্র পাঠিয়ে এর কোনো সুফল পাইনি। তবে যোগাযোগ করে দ্রুত ভুক্তভোগী গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাঘবের চেষ্টা করবো।

এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরেজমিনে পরিদর্শন করে কাঠের সাঁকোর জায়গায় সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলেই নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধান করা হবে।