নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রগতিশীল চিন্তাবিদ, সমাজবিজ্ঞানী ও লেখক বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) তার মৃত্যু সংবাদের পর পৃথক পৃথক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করে তারা ।
বিবৃতিতে তারেক রহমান বলেন, মরহুম বদরুদ্দীন উমর বারবার রাজরোষে পড়া সত্ত্বেও তিনি (বদরুদ্দীন উমর) তার আদর্শ বাস্তবায়নে ছিলেন আপসহীনভাবে স্থির। কোনো ভীতি বা হুমকি তাকে নিবৃত করতে পারেনি তার কর্তব্যকর্ম থেকে। স্বৈরতন্ত্রকে উপেক্ষা করে তিনি তার স্বাধীন মতামত প্রকাশে কখনোই কুণ্ঠিত হননি। তিনি এদেশে ছিলেন স্বাধীন বিবেকের এক প্রতীক।
বদরুদ্দীন উমরের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
বিবৃতিতে তারেক রহমান বলেন, বামপন্থি প্রগতিশীল রাজনীতির পথিকৃৎ, লেখক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন উমরের জীবনাবসানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও আমি গভীরভাবে মর্মাহত। স্বাধীনচেতা, নির্ভীক কণ্ঠস্বরের এই বুদ্ধিজীবীর এই মুহূর্তে পৃথিবী থেকে চলে যাওয়া জনমনে হতাশার সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, জনগণের সম্মান ও নিদারুণ বেদনাকে মর্মে মর্মে উপলব্ধি এবং সেটিকে প্রতিবাদের ভাষায় মূর্ত করতে পারতেন মরহুম বদরুদ্দীন উমর। ‘৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশমাতৃকার স্বাধীনতা এবং সব স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে সংগ্রামে প্রয়াত বদরুদ্দীন ওমরের চিন্তা ও লেখনিসহ সক্রিয় তৎপরতা ছিল অবিস্মরণীয়। জাতির নানা ক্রান্তিকালে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক পরিবর্তনের পর্ব নিয়ে তার গবেষণাধর্মী গ্রন্থগুলো এক অমূল্য সম্পদ হিসেবে পাঠক সমাজের কাছে সমধিক সমাদৃত।
এদিকে বিবৃতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমৃত্যু তিনি (বদরুদ্দীন উমর) জনগণের স্বার্থে রাজনীতি করেছেন ও কলম ধরেছেন। রাজনীতির দূর্নীতিকরণের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন এক জলন্ত প্রতিবাদ। বিদ্যমান রাজনৈতিক সামাজিক প্রেক্ষাপটে তাঁর মতো নির্ভিক মুক্তচিন্তার বুদ্ধিজীবীর বেঁচে থাকা খুব জরুরী ছিল।
বদরুদ্দীন উমরের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, লেখক, গবেষক, বামধারার বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক বদরুদ্দিন ওমরের মৃত্যুতে আমি বেদনাহত। কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের এবং শোষণ মুক্তি সংগ্রামের প্রেরণা ছিল তাঁর লেখনি। ইতিহাসের পরিক্রমায় নানা উত্থান-পতনের ঘটনা নিয়ে তিনি রচনা করেছেন অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। আজীবন বাম প্রগতিশীল রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট বদরুদ্দিন ওমর সহজ, সরল, অনাড়ম্বর জীবনযাপন করেছেন নিজ আদর্শে অবিচল থেকে।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বৈরশাসকের ধমকে কখনোই নিরব দর্শক হয়ে থাকেননি বদরুদ্দীন ওমর। বরং তিনি তাঁর কথা ও লেখনিতে অন্যায় ও অবিচারের স্বৈরতন্ত্রের মূলে প্রচন্ড শক্তিতে কুঠারঘাত করেছেন।’ বিবৃতিতে প্রয়াত বদরুদ্দীন উমরের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান মির্জা ফখরুল। এদিকে দলের পক্ষ থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিকেলে বদরুদ্দিন ওমরের বাসায় যাওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে উপস্থিত হয়ে ওমরের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাবেন তিনি।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন লেখক-গবেষক, রাজনীতিক ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন ওমর। পরে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর ওমরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলে ৯৪ বছর। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।